Print

Rupantor Protidin

ভারত যে সিদ্ধান্ত নিলে সরাসরি হামলা চালাবে পাকিস্তান

প্রকাশিত হয়েছে: মে ৩, ২০২৫ , ৫:৫৬ অপরাহ্ণ | আপডেট: মে ৩, ২০২৫, ৫:৫৭ অপরাহ্ণ

Sheikh Kiron

ভারত ও পাকিস্তানের চলমান উত্তেজনা যুদ্ধের দিকে এগোচ্ছে। সীমান্তে সেনাদের মধ্যে প্রতিনিয়ত ব্যাপক গোলাগুলি হচ্ছে। মূলত, কাশ্মীরের পেহেলগামে হামলার পর ভারত সিন্ধু নদের পানি বণ্টন চুক্তি স্থগিত করায় সমস্যা আরও জটিল হয়ে দাঁড়িয়েছে। পাকিস্তান বলছে, পানি বণ্টন চুক্তি স্থগিতের পদক্ষেপকে যুদ্ধের ঘোষণার শামিল। ২২ এপ্রিল ওই ঘটনার পর এতদিন দুই পক্ষের মধ্যে হুমকি-ধমকি চললেও এবার ভারতকে সরাসরি হুঁশিয়ারি দিলেন পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা মুহাম্মদ আসিফ।

শুক্রবার (২ মে) পাকিস্তানের জিও নিউজ চ্যানেলের ‘নয়া পাকিস্তান’ টকশোতে অংশ নিয়ে তিনি বলেন, এশিয়ার অন্যতম দীর্ঘতম সিন্ধু নদে পানিপ্রবাহ বন্ধ করার চেষ্টা করলে ভারতে সামরিক হামলা চালানো হবে। পানির প্রবাহ থামানোও এক ধরনের আগ্রাসন- যার জবাব পাকিস্তান দেবে।

খাজা মুহাম্মদ আসিফ বলেন, শুধু গোলা-বারুদের মাধ্যমে নয়, নানাভাবে আগ্রাসন চালানো সম্ভব। পানি বন্ধ করে দেওয়া, বা প্রবাহ পরিবর্তন করাও একটি ভয়াবহ আগ্রাসন। এতে লক্ষাধিক মানুষ খাদ্য ও পানির সংকটে পড়বে এবং মৃত্যু অবধারিত হয়ে উঠবে।

পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী স্পষ্ট করে বলেন, ভারত যদি সিন্ধু নদে কোনো ধরনের বাধ বা স্থাপনা নির্মাণ শুরু করে, যার ফলে পানির প্রবাহ ক্ষতিগ্রস্ত হয়- তাহলে আমরা অবশ্যই প্রতিক্রিয়া দেখাবো। ওইসব স্থাপনাকে লক্ষ্য করে হামলা চালানো হবে।

এর আগে, গত ২২ এপ্রিল পেহেলগামে হামলায় পাকিস্তানকে দোষারোপ করছে ভারত। তবে হামলায় জড়িত থাকার কথা শুরু থেকেই অস্বীকার এবং একটি বিশ্বাসযোগ্য ও স্বচ্ছ তদন্তে অংশ নেওয়ার প্রস্তাব দিয়ে আসছে ইসলামাবাদ। তারপরেও পাকিস্তানকে দায়ী করে একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছে ভারত। আটারি সীমান্ত বন্ধ করে দিয়ে পাকিস্তানিদের ফিরে যেতে বলা হয়েছে। সব ধরনের বাতিল হয়েছে ভিসা। সিন্ধু নদের পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিতও করেছে ভারত।

পাল্টা ব্যবস্থা হিসাবে একই ধরনের পদক্ষেপ দিয়েছে পাকিস্তানও। সিন্ধু নদের পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিতে ভারতের সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তান সিমলা চুক্তি স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছে। এ ছাড়া পাকিস্তানের আকাশসীমা নিষিদ্ধ, সব ধরনের বাণিজ্য বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে ইসলামাবাদ।

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ জানান, সিন্ধু পানি বণ্টন চুক্তি স্থগিতের পদক্ষেপকে ‘যুদ্ধের ঘোষণা’ হিসেবে দেখছে পাকিস্তান। তিনি বলেছেন, যেকোনো মূল্যে নিজের পানির অধিকার রক্ষা করবে পাকিস্তান।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার পর থেকে প্রতিটি ভারতীয় নাগরিকের ‘রক্ত ফুটছে’। হামলায় জড়িত প্রত্যেককে কঠিনতম শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে। শুধু তাই নয়, সীমান্তে যেকোনো ধরনের হুমকি মোকাবিলায় নিজের তিন বাহিনীকে অভিযানের পূর্ণ স্বাধীনতা দিয়ে দিয়েছেন মোদি।

বিশ্লেষক এবং কূটনীতিকরা বলছেন, পাকিস্তান যে কাশ্মীরা হামলা চালিয়েছে, তার জোরালো প্রমাণ এখনও দেখাতে পারেনি ভারত। এ অবস্থায় দিল্লি কোনো পদক্ষেপ নিলে বিশ্ব মঞ্চে তার ন্যায্যতা পাওয়ার সম্ভাবনা কম। তবে, পারমাণবিক অস্ত্রে সজ্জিত ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে চমলান সামরিক সংঘর্ষের আশঙ্কা যদি বাড়তে থাকে তাহলে তা নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হতে পারে।