Print

Rupantor Protidin

চৌগাছায় শিলাবৃষ্টিতে ২ হাজার হেক্টর জমির ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি

প্রকাশিত হয়েছে: এপ্রিল ২৮, ২০২৫ , ৭:৪৭ অপরাহ্ণ | আপডেট: এপ্রিল ২৮, ২০২৫, ৭:৪৭ অপরাহ্ণ

Sheikh Kiron

যশোরের চৌগাছায় শিলাবৃষ্টিতে ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। উপজেলা কৃষি অফিসের হিসাবে উপজেলার মোট ১২০৪ হেক্টর জমির ফসলের ক্ষতি হয়েছে। এরমধ্যে ১১৫ হেক্টর জমির বোরো এবং ৩৫ হেক্টর জমির পাট সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেছে। এছাড়া ৮৪৯ হেক্টর জমির বোরো, ১০৪ হেক্টর পাট, ৯৮ হেক্টর জমির সবজি এবং ৩ হেক্টর জমির ফল আংশিক নষ্ট হয়েছে।

তবে স্থানীয় কৃষকদের হিসাবে সব মিলিয়ে ২ হাজার হেক্টরেরও বেশি জমির বোরো, পাট, সবজি ও ফলের খেতের ক্ষতি হয়েছে।

সোমবার দুপুর ২টার পর থেকে প্রায় ঘন্টাব্যাপী বৃষ্টির শুরুতেই শিলা বৃষ্টি হয়। ৩০/৪০ মিনিট স্থায়ী হয় শিলাবৃষ্টি। এতে চৌগাছা পৌরসভাসহ আশেপাশের কয়েকটি ইউনিয়নে ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। শিলাবৃষ্টির মধ্যেই সিংহঝুলী গ্রামের উপর দিয়ে কালবৈশাখি ঝড় বয়ে যায়। এতে সিংহঝুলী, বলিদাপাড়া, ঝাউতলা, জামালতা, জগন্নাথপুর, কয়ারপাড়া মাঠের ধানের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়।

এসব এলাকার ২/৩ হাজার হেক্টর জমির বাসমতি ধানের সবচে বেশি ক্ষতি হয়েছে। বেশিরভাগ খেতেই বাসমতি ও মিনিকেট ধান সব ঝরে গেছে। এছাড়া পৌর এলকার পাঁচনমনা, ইছাপুর, তারিনিবাস, কংশারীপুর, স্বরুপদাহ, চৌগাছা সদর ইউনিয়নের লস্কারপুর, পিতম্বরপুর, মন্মথপুর মাঠের ধানেরও ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। শুধু ধানেরই না এসব মাঠের পটল, কচুসহ বিভিন্ন ধরনের সবজি, আম লিচুর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

বৃষ্টি শেষের পরপরই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মুসাব্বির হুসাইন, অতিরিক্ত কৃষি কর্মকর্তা মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা বিভিন্ন ব্লকে ব্লকে গিয়ে তাৎক্ষণিক ক্ষয়ক্ষতি নিরূপনের চেষ্টা করেন। সন্ধ্যা ৬টায় কৃষি অফিস থেকে ক্ষয়ক্ষতির পরিমান জানানো হয়।

সিংহঝুলী গ্রামের কৃষক টনিরাজ বলেন ২বিঘা ধান করেছিলাম। ১৫কাঠা কেটেছিলাম। ২৫কাঠা কাটা হয়নি। শিলাবৃষ্টির পর মাঠে গিয়ে দেখি একটি ধানও নেই। তিনি বলেন ১৫কাঠার মধ্যে ৫কাঠার ধান বাড়ি এনেছিলাম। সকালে সেগুলো মাড়াই করি (ধান ঝাড়া)। ৫কাঠা খেতে ৮মণ ধান হয়েছে। সে হিসেবে ৫০ মণের অধিক ধান নষ্ঠ হয়ে গেছে। যার বাজার মূল্য ৯০ হাজার টাকা। বিচলিসহ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়েছে আমার। এখনও জমির লিজের ২০ হাজার টাকা দিতে হবে খেত মালিকের। সব শেষ হয়ে গেছে।

একই গ্রামের চৌগাছা পৌরসভার কর আদায়কারী শাহিনুর রহমান শাহিন বলেন, এবার ১১ বিঘা (৩৩ শতকে বিঘা) ধান করেছিলাম। ৪বিঘা কাটা হয়নি, দেড় বিঘা কেটে খেতেই রেখেছিলাম। বাসমতি ও রডমিনি ধান করেছিলাম। এই ধান সব শেষ হয়ে গেছে। যেগুলো কাটা হয়নি সব ঝরে গেছে। এতে সাড়ে তিন লক্ষ টাকার অধিক ক্ষতি হয়েছে।

একই গ্রামের জামশেদ আলী দফাদার বলেন, ১১বিঘা ধান করেছিলাম। ৫বিঘার উপরে ধান কাটা হয়নি মাঠেই ছিলো। সব ধান ঝরে গেছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মুসাব্বির হুসাইন বলেন, বিশেষ করে চৌগাছা পৌরসভা এলকার আশেপাশের উপরে শিলাবৃষ্টি হয়েছে। এতে এসব এলাকার চাষীদের ধান, আম, লিচুসহ বিভিন্ন সবজির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সবচে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে সিংহঝুলী, বলিদাপাড়া, কয়ারপাড়া, স্বরুপদাহ মাঠের ফসলের। তিনি বলেন এসব মাঠের বাসমতি ধানের ৭০ থেকে ৮০ শতাংশই ঝরে গেছে। যা কৃষক আর নিতে পারবেন না। মাঠের মোটা ধানের কিছুটা ক্ষতি কম হয়েছে।