Print

Rupantor Protidin

দুর্নীতির অভিযোগ

দুই উপদেষ্টার এপিএস পিও দুদকের জালে

প্রকাশিত হয়েছে: এপ্রিল ২৮, ২০২৫ , ১২:৪৬ অপরাহ্ণ | আপডেট: এপ্রিল ২৮, ২০২৫, ১২:৪৬ অপরাহ্ণ

Sheikh Kiron

স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার সাবেক সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) মো. মোয়াজ্জেম হোসেন এবং স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগমের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা (পিও) ছাত্রপ্রতিনিধি তুহিন ফারাবির বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এরই মধ্যে এ দুই উপদেষ্টার এপিএস ও পিওকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

এবার তাদের বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগ আমলে নিয়ে তা খতিয়ে দেখতে গোয়েন্দা কার্যক্রম শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন। তিনি বলেন, ‘এটি আমাদের নজরে এসেছে। আমরা বিষয়টি নিয়ে কাজ করছি। আমাদের গোয়েন্দা ইউনিট এ-সংক্রান্ত কার্যক্রম পরিচালনা করছে।’

সম্প্রতি কয়েকটি গণমাধ্যমে স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার সাবেক এপিএস মো. মোয়াজ্জেম হোসেন, স্বাস্থ্য উপদেষ্টার ব্যক্তিগত কর্মকর্তা (ছাত্র প্রতিনিধি) তুহিন ফারাবি ও ডা. মাহমুদুল হাসানের বিরুদ্ধে তদবির বাণিজ্য করে শত শত কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার সংবাদ প্রকাশিত হয়।

সংবাদে তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরে ঘুরে ঘুরে তদবির বাণিজ্য করার অভিযোগ আনা হয়। এ ছাড়া বিভিন্ন ঠিকাদারের কাজ ও বিল পাইয়ে দিতে তদবির করারও তথ্য উঠে আসে। প্রকাশিত সংবাদের বিষয়টি আমলে নিয়ে দুই উপদেষ্টার সাবেক এপিএস ও পিওর দুর্নীতি খুঁজতে মাঠে নেমেছে দুদক। এরই মধ্যে প্রাথমিক কার্যক্রম হিসেবে গোয়েন্দা তৎপরতা শুরু করেছে দুর্নীতিবিরোধী সংস্থাটি।

দুদকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা কালবেলাকে বলেন, ‘দুই উপদেষ্টার এপিএস ও পিও বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগ অত্যন্ত গুরুত্বসহ দেখছে দুদক। গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পরই বিষয়টি আমলে নিয়ে কার্যক্রম শুরু হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘দুদক তিন ধাপে কাজ করে থাকে। প্রাথমিক পর্যায়ে গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ, এরপর প্রকাশ্য অনুসন্ধান। সর্বশেষ ধাপ হলো তদন্ত ও চার্জশিট প্রদান। এ ঘটনায় প্রাথমিক ধাপ হিসেবে এরই মধ্যে গোয়েন্দা ইউনিটের মাধ্যমে দুর্নীতির প্রাথমিক আলামত খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আমরা এরই মধ্যে বেশকিছু তথ্যপ্রমাণও পেয়েছি। শিগগিরই তাদের বিরুদ্ধে প্রকাশ্য অনুসন্ধান বা দৃশ্যমান কার্যক্রম দেখা যাবে।’

দুই উপদেষ্টার এপিএস-পিওকে গ্রেপ্তার দাবি যুব অধিকার পরিষদের: আগামী ১৫ দিনের মধ্যে দুই উপদেষ্টার সাবেক এপিএস ও পিওর দুর্নীতির তদন্ত এবং তাদের গ্রেপ্তারের জন্য দুদকের কাছে দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ যুব অধিকার পরিষদ। গতকাল রোববার যুব অধিকার পরিষদ জাতীয় প্রেস ক্লাব থেকে মিছিল নিয়ে দুদক কার্যালয়ে যায়। পরে সংগঠনটির একটি প্রতিনিধিদল দুদকের চেয়ারম্যানের সঙ্গে দেখা করে স্মারকলিপি জমা দেয়।

সুপ্রিম কোর্টের ৩ আইনজীবীর দুদকে অভিযোগ: দুই উপদেষ্টার সাবেক এপিএস ও পিওর দুর্নীতি তদন্তে দুদকে অভিযোগ দিয়েছেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের তিনজন আইনজীবী। গতকাল বিকেলে অ্যাডভোকেট নাদিম মাহমুদ, অ্যাডভোকেট ইয়াছিন আলফাজ ও অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ শফিকুল ইসলাম এ অভিযোগ জমা দেন। দুদকে দেওয়া চিঠিতে এই আইনজীবীরা তাদের বিরুদ্ধে আগামী ১০ কার্যদিবসের মধ্যে কার্যকরী ও দৃশ্যমান অনুসন্ধান শুরু করতে অনুরোধ করা হয়।

জানতে চাইলে আইনজীবী নাদিম মাহমুদ কালবেলাকে বলেন, ‘যদি ছাত্র প্রতিনিধিরা দুর্নীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন সেটা আমাদের দেশের জন্য বড় দুঃসংবাদ। দলমত নির্বিশেষে সবার একসঙ্গে দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। তা না হলে বাংলাদেশ গভীর অন্ধকারে ডুবে যাবে।’