Print

Rupantor Protidin

খামারবাড়িতে কৃষি ডিপ্লোমা ও শেরেবাংলার শিক্ষার্থীদের দুই গ্রুপ মুখোমুখি

প্রকাশিত হয়েছে: এপ্রিল ২১, ২০২৫ , ৩:১০ অপরাহ্ণ | আপডেট: এপ্রিল ২১, ২০২৫, ৩:১০ অপরাহ্ণ

Sheikh Kiron

এগ্রি ব্লকেড কর্মসূচির নামে কৃষি ডিপ্লোমার শিক্ষার্থী রাজধানীর খামারবাড়ির কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের (ডিএই) মূল ফটক বন্ধ করে দিয়েছেন। সোমবার সকাল ১০টা থেকে এই কর্মসূচি শুরু হয়।

এতে ডিএই’র কর্মকর্তারা অফিসে ঢুকতে পারেননি। সাড়ে তিন ঘণ্টা অবরুদ্ধ অবস্থার পর দুপুর দেড়টার দিকে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা খামারবাড়ির সামনে জড়ো হন। এ সময় ডিপ্লোমা শিক্ষার্থী ও শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মুখোমুখি অবস্থান নেন।

ডিপ্লোমা শিক্ষার্থীরা খামার বাড়ির ভেতরে স্লোগান দিচ্ছে আর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা খামারবাড়ির গেটের বাইরে স্লোগান দিচ্ছেন। এতে যে কোনো সময় সংঘাতের আশঙ্কা করা হচ্ছে।

শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা বলছেন, ডিপ্লোমা শিক্ষার্থীরা অযৌক্তিক দাবি-দাওয়া নিয়ে খামারবাড়ি অচল করছে।

খামারবাড়ির সামনে কথা হয় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক (প্রশাসন) মো. মুরাদুল হাসানের সঙ্গে। তিনি বলেন, আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের অধিকাংশ দাবি ইতোমধ্যে কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে মেনে নেওয়া হয়েছে। তারপরও কারও ইন্ধনে তারা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা শিক্ষার্থীদের একটি প্রতিনিধি দলকে নিয়ে আলোচনায় বসেছি, সমাধানের চেষ্টা চলছে।

এদিকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে খামারবাড়ির সামনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিপুল সংখ্যক সদস্য দেখা গেছে। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, উচ্চশিক্ষার সুযোগসহ আট দফা দাবিতে তারা দীর্ঘ দিন ধরে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন।

আন্দোলনে অংশ নেওয়া আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের অন্যতম নেতা রায়হান উদ্দিন শামীম বলেন, আমাদের উচ্চ শিক্ষার সুযোগ নেই। ডিপ্লোমা পাশ করে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক ডিগ্রি নিতে হয়। আমাদের এই দাবি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পূরণ করার কথা। কিন্তু তারা টালবাহানা করছে।

কৃষিতে দক্ষ জনশক্তি তৈরি করার জন্য বাংলাদেশে সরকারি ১৮টি কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটসহ ২৬০টি বেসরকারি কৃষি কলেজ রয়েছে, যেখানে কৃষিতে ৪ বছরের ডিপ্লোমা কোর্সে অধ্যয়ন করা হয়। সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে মিলিয়ে প্রায় ২৫ হাজার শিক্ষার্থী আছে।

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো— ডিপ্লোমা কৃষিবিদদের পাবলিক কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের সুযোগ দিতে হবে। উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাকে দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মচারী হিসেবে গেজেট করে প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে এবং প্রতিবছর নিয়োগের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হবে। কৃষি ডিপ্লোমা শিক্ষার মান উন্নয়নের জন্য শিক্ষকসংকট দূর করতে হবে।

বাকি দাবিগুলো হলো— কৃষি ডিপ্লোমা শিক্ষাকে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের (ডিএই) অধীন থেকে বের করে সম্পূর্ণভাবে কৃষি মন্ত্রণালয়ের আলাদা প্রতিষ্ঠান করতে হবে। সব কৃষি গবেষণাপ্রতিষ্ঠানে সহকারী বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা পদটি শুধু ডিপ্লোমা কৃষিবিদদের জন্য সংরক্ষিত করতে হবে। ডিপ্লোমা কৃষিবিদদের বেসরকারি চাকরির ক্ষেত্রে ন্যূনতম দশম গ্রেডের পে-স্কেলে বেতন দিতে হবে। কৃষি ডিপ্লোমা শিক্ষার্থীদের মাঠ সংযুক্তি ভাতা প্রদান করতে হবে এবং উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের চাকরিতে প্রবেশের পর ছয় মাসের ফাউন্ডেশন ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে।

কৃষি মন্ত্রণালয়ে জানিয়েছে, শিক্ষার্থীদের অধিকাংশ দাবি পূরণ করা হয়েছে। কিছু দাবি অন্য মন্ত্রণালয়কে দেখার জন্য সুপারিশ করা হয়েছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, শিক্ষার্থীদের দাবি পূরণ করার পরও এ আন্দোলন অযৌক্তিক।