Print

Rupantor Protidin

যশোরে ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতির বিরুদ্ধে নারী কেলেংকারীর অভিযোগ

প্রকাশিত হয়েছে: এপ্রিল ১৯, ২০২৫ , ৯:০০ অপরাহ্ণ | আপডেট: এপ্রিল ১৯, ২০২৫, ৯:০০ অপরাহ্ণ

Sheikh Kiron

যশোরের সদর উপজেলার ইছালী ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি মেরাজুল ইসলাম মিরাজের বিরুদ্ধে নারী কেলেংকারীর অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি পহেলা বৈশাখের দিন সন্ধার ঘটনা হলেও সাম্প্রতি বিষয়টি জানাযানি হয়।

ওইদিন ভরসন্ধ্যায় এক নারীকে শ্মশানঘাটে নিয়ে গিয়ে জনরোষের কবলে পড়েন ওই ছাত্রনেতা। মিরাজুলের পাশেই পাহারারত ছিল ইমামুল ও রাতুল অন্ধকারে তারা কী করছেন এমন প্রশ্ন করায় তিনি স্থানীয়দের সাথে তর্কে জড়িয়ে পড়েন। অবস্থা বেগতিক দেখে ইমামুল ও রাতুল সটকে পড়ে। স্থানীয়দের মতে সটকে পড়া দুজন মাদকাসক্ত বখাটে। তবে মিরাজুল দলীয় পদের পরিচয় দিয়ে পার পাওয়ার চেষ্টা করেন কিন্তু উৎসুক জনতার ভীড়ে তার দাম্ভিকতা কাজে আসেনি। উপরোন্ত স্থানীয়রা তাদের গণপিটুনি দেয়ার প্রস্তুতি নেয়। ধাক্কা-ধাক্কির এক পর্যায়ে কিছু মানুষ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়ার চেষ্টা করেন। এক পর্যায়ে ‘৯৯৯’ ফোন করলে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন ইছালী পুলিশ ক্যাম্পের টু আই সি মামুন হোসেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে তাকেও হিমশিম খেতে দেখা যায়। পরে ক্যাম্পে নিয়ে খবর দেয়া হয় তাদের পরিবারের কাছে। পরে মুচলেকা নিয়ে দু’জনকেই পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে ক্যাম্প ইনচার্জ ঝুন্টু কুমার। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। খোদ দলের নেতাকর্মীরা ক্ষোভে ফুঁসছেন। গত কয়েকদিন পেরিয়ে গেলেও মেরাজের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা না নেয়ায় ক্ষোভ ক্রমশ বাড়ছে দাবি করে বিক্ষুব্ধরা বলেছেন, এসব চরিত্রহীন নেতাকর্মীর কারণে বিএনপি ডুবছে।

অভিযুক্ত ছাত্রদল নেতা ইছালী ইউনিয়নের রামকৃষ্ণপুর গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে।

অন্যদিকে তার সঙ্গে থাকা নারী যশোর শহরের ঘোপ সেন্ট্রাল রোডের বাসিন্দা বলে দাবি করেন।

ইছালী পুলিশ ক্যাম্পের টু আই সি মামুন হোসেন জানান, পহেলা বৈশাখের দিন সন্ধ্যায় ৯৯৯ ফোন আসে। দ্রুত ঘটনাস্থল স্থানীয় শ্মশান ঘাটে ছুটে যাই। সেখানে গিয়ে দেখতে শ’ দুয়েক লোক ভিড় জমিয়েছে। তাদের কেউ কেউ বাক-বিতন্ডায় জড়িয়ে পড়েন। অভিযুক্ত ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি মেরাজুল ইসলাম মিরাজ দলীয় প্রভাব দেখানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু উৎসুক জনতা তাদের গণপিটুনি দেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছিল। এক পর্যায়ে স্থানীয় কিছু শান্তিপ্রিয় মানুষের সহায়তায় মিরাজ ও তার সঙ্গে থাকা নারীকে ক্যাম্পে নেয়া হয়। এ সময় উৎসুক জনতাও ক্যাম্পে ভিড় করেন। তবে ক্যাম্প ইনচার্জ সবাইকে বুঝিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেন। তাৎক্ষণিক উভয়ের পরিবারকে খবর পাঠানো হয়। দু’জনের পরিবারের লোকজন ক্যাম্পে আসার পর মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়।

পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে ওই নারী দাবি করেন তিনি যশোর শহরের ঘোপ সেন্ট্রাল রোডের একটি বাড়িতে থাকেন। চাকরির সুবাদে তার স্বামী বাইরে থাকেন। মাঝে-মধ্যে তিনি মিরাজের সাথে সময় কাটান বলেও স্বীকার করেন। তবে অভিযুক্ত মিরাজ পুলিশের কোনো প্রশ্নের জবাব দেননি।

বিভিন্ন সূত্রের দাবি, ওই নারী চিহিৃত কলগার্ল। টাকার চুক্তিতে সে বিভিন্ন স্থানে যান।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় বেশ কয়েকজন জানান, এরআগেও মিরাজের সাথে ওই নারীকে আপত্তিকর অবস্থায় ধরা হয়েছে। তবে বিষয়টি এভাবে লোক জানাজানি হয়নি।

এ বিষয়ে সদর উপজেলা ছাত্র দলের সদস্য সচিব পিকুলকে মুঠোফোনে জানানো হলে তিনি জেলা নেতৃবৃন্দের সাথে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন।

এ বিষয়ে ইউনিয়ন বিএনপি সাধারণ সম্পাদক মাহমুদ হাসান লিটনের বলেন, এটি ছাত্রদলের ঘটনা। সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিয়ে তারা নেবে। এ বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই।