বাঘারপাড়া উপজেলার সকল ইউনিয়নের চেয়ারম্যানরা কেন্দ্রীয় বিএনপি নেতা টিএস আইয়ুবের সাথে একাত্মতা ঘোষনা করে কাজ করছেন। বাংলাদেশে একটি নজির বিহীন ঘটনা হচ্ছে পাঁচ আগষ্টের পর থেকে বাঘারপাড়ার সকল ইউনিয়নিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এখনও ইউনিয়ন পরিষদে বসে নির্বিঘ্নে কাজ করছেন। যা টিএস আইয়ুবের কারণেই সম্ভব হয়েছে। আগামীতে সকল চেয়ারম্যান তার নেতৃত্বেই কাজ করবেন। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তাকে নির্বাচিত করেই আমরা ঘরে উঠবো” এমন বক্তব্য দেন বাঘারপাড়ার জামদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আরিফুল ইসলাম তিব্বত। গত তিন ধরে যেটা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যপক সমালোচনার ঝড় সৃষ্টি করেছে। নিজ দলীয় নেতা কর্মীদের সমালোচনার মুখে পড়েছেন নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচিত এ চেয়ারম্যান। অন্য আট ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের তোপে পড়ে অসংলগ্ন কথাও বলছেন তিনি।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম “ফেসবুক” ও স্থানীয় সূত্রে জানাগেছে, উপজেলার জামদিয়া ইউনিয়নের জয়ারামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন-২০২৫ উপলক্ষে গত ৪ও৫ই মার্চ দুইদিন ব্যাপি বার্ষিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় দিনের প্রধান অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য টিএস আইয়ুব হোসেন। প্রথম দিন রাতের অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন জামদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আরিফুল ইসলাম তিব্বত। তার বক্তব্য তিনি উপরোক্ত কথা বলেন। এছাড়াও তিব্বত তার বক্তব্য আরো বলেন, বাঘারপাড়ার শেষ ঠিকানা হচ্ছে টিএস আইয়ুব হোসেন। আগামীতে নয়টি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান তার নেতৃত্বেই চলছে ও চলবে।
আরিফুল ইসলাম তিব্বতের এ বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তা ভাইরাল হয়। তার নিজ দলের নেতা কর্মীরা তার বিপক্ষে বিরুপ মন্তব্য করে চলেছে। গত দুইদিন ধরেই বাঘারপাড়ার বিভিন্ন আড্ডায় ও চায়ের দোকানে এ ষিয়টি নিয়েই ছিলো প্রধান আলোচনা। উৎসুক অনেকেই অন্য ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে ফোন করে জানতে চেয়েছেন, আসলেই সব চেয়ারম্যানগণ টিএস আইয়ুবের সাথে একাত্মতা হয়েছেন কিনা। উল্লেখ্য আরিফুল ইসলাম তিব্বত জামদিয়া ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও বাঘারপাড়া উপজেলা সেচ্ছা সেবকলীগের আহবায়ক।
বাঘারপাড়া উপজেলার নয়টি ইউনিয়নের সাতটিতে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী বিজয়ী হন। এর মধ্যে আরিফুল ইসলাম তিব্বত একজন। রায়পুর ইউনিয়নে স্বতন্ত্র ও বন্দবীলা ইউনিয়নে নির্বাচিত হয় ওয়ার্কাস পার্টির প্রার্থী। এ বিষয়ে বন্দবীলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সবদুল হোসেন খাঁন জানিয়েছেন, আরিফুল ইসলাম তিব্বত যে বক্তব্য দিয়েছেন তা তার নিজস্ব মতামত। অন্য আট ইউনিয়নের চেয়ারম্যানগণ তিব্বতের ঐ বক্তব্যের আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদ করবেন। বাঘারপাড়ায় ইউপি চেয়ারম্যানদের কোন বৈঠকে টিএস আইয়ুবের সাথে একাত্মতা প্রকাশের ঘোষনা হয়নি।
দোহাকুলা ইউপি চেয়ারম্যান আবু মোতালেব তরফদার জানিয়েছেন, তিব্বত যখন বক্তব্য দিয়েছে তখন সে সুস্থ্য ছিলো কিনা আমার সন্দেহ হয়। টিএস আইয়ুব একটি রাজনৈতিক দলের নেতৃত্বে আছেন। ইউনিয়ন পরিষদের কাজে কর্মে তার সাথে যোগাযোগ করা বা একসাথে কোন সামাজিক অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার বিষয়টি ঘটতেই পারে। তার মানে এই নয় যে ঘোষনা দিয়ে বাঘারপাড়ার সব চেয়ারম্যানরা টিএস আইয়ুবের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করেছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ইউপি চেয়ারম্যান জানিয়েছেন, ব্যাংক জালিয়াতি ও মানি লন্ডারিং মামলায় টিএস আইয়ুব জেল হাজতে ছিলো। তিনি জামিন পেয়েছেন ৩০ আগষ্ট। আর বাঘারপাড়ায় প্রত্যাবর্তন করেছেন ৩ সেপ্টেম্বর। এই একমাস নয় ইউনিয়নের চেয়ারম্যানদের কোন পক্ষ বা গোষ্টি ঝামেলা করেননি। তাহলে টিএস আইয়ুবের প্রশ্ন আসছে কেন।
এ বিষয়ে জামদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আরিফুল ইসলাম তিব্বত জানিয়েছেন, অনুষ্টানের প্রথম দিন বিকালে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গোলযোগ হয়। প্রায় তিন ঘন্টা অনুষ্ঠান বন্দ ছিলো। সন্ধ্যায় পরিস্থিতি সামাল দিতে আমি এম বক্তব্য দিয়েছি।