Print

Rupantor Protidin

ঈদ সামনে রেখে চট্টগ্রাম চলছে লক্কর ঝক্কর গাড়ি মেরামতের বিরামহীন কাজ

প্রকাশিত হয়েছে: মার্চ ২৪, ২০২৫ , ১০:০৮ অপরাহ্ণ | আপডেট: মার্চ ২৪, ২০২৫, ১০:০৮ অপরাহ্ণ

Sheikh Kiron

কোনো গাড়ির ইঞ্জিন ঠিক তো বডি ভাঙা। আবার কোনোটিতে ইঞ্জিন নতুন কিন্তু বডি নেই! এমন গাড়িগুলোর মেরামত চলছে বহদ্দারহাট বাস টার্মিনালের মোটর গ্যারেজে। চট্টগ্রামে এবারের ঈদযাত্রা টার্গেট করে রাস্তায় নামছে এমন প্রায় ৩০টি বাস। এগুলোর অধিকাংশ চলবে কাপ্তাই সড়কে। দম ফেলার ফুসরত পাচ্ছেন না গ্যারেজ শ্রমিকরা। গাড়ির খোলস পাল্টে, গায়ে রঙ লাগানোর ব্যস্ততায় চলছে তাদের রমজান।

বহদ্দারহাট বাস টার্মিনাল এলাকা ঘুরে দেখা যায়, এক লাইনে আটটি, অপর পাশে দুটি গ্যারেজে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন শ্রমিকরা। কেউ ওয়েল্ডিংয়ের কাজে। কেউ লোহা পেটাচ্ছেন, কেউ রঙ করছেন আবার কেউ পলিশের কাজ।

জানা গেছে, একেকটি বাসের বডি তৈরিতে গাড়ির মালিকদের খরচ হচ্ছে প্রায় ১০ থেকে ১৪ লাখ টাকা। গাড়ি তৈরিতে সময় লাগছে ৩০ থেকে ৩৫ দিন। আর কাজভেদে শ্রমিকদের মজুরি দিনে ৮০০ থেকে ১২০০ টাকা।

রঙ পলিশ করা সোহাগ বলেন, ‘রমজানের কয়েকদিন আগে থেকে আমি এখানে কাজ শুরু করেছি। আগে একটা গার্মেন্টসে কাজ করতাম। ওটার অবস্থা ভালো না। তাই ঈদের কথা
চিন্তা করে এখানে কাজ নিয়েছি। রঙ করার পর আমরা বডিতে পলিশ করি। পলিশে একদম আয়নার মতো করে ফেলি। আমরা প্রতিদিন ৮০০ টাকা করে মজুরি পাই।’

ওয়েল্ডিং কাজে থাকা মহসিন বলেন, ‘বডির কাজ আগেই শেষ করে ফেলছি। এখন সিটগুলো ঠিকঠাক করছি। কাজ প্রায় শেষ। পাত অন্য জায়গায় রেডি করছে। ওটা
বসিয়ে দিয়ে আরেকবার ওয়েল্ডিং করে দিলে গাড়ি রেডি হয়ে যাবে। সব ঠিক হওয়ার পর মোটর মেকানিক ইঞ্জিন বসিয়ে গাড়ি চালু করে টেস্ট শেষে ডেলিভারি হবে।’

মোটর মেকানিক টিটু বলেন, ‘ঈদ ঘিরে পুরোনো গাড়ির কাজ বেশি। কিছু নতুন গাড়ি ফিটিংসের কাজ থাকে। গাড়ির মালিকরা ইঞ্জিন গ্যারেজে নিয়ে আসেন। আমরা সেগুলোর জন্য নতুন বডি বানিয়ে গাড়ি চালু করে দিই। কাজ শেষে গাড়িগুলো একদম ব্র‍্যান্ড নিউ গাড়ির মতো হয়ে যায়। এবার আমি দুটি নতুন ইঞ্জিন ও একটা পুরান ইঞ্জিনের গাড়ির কাজ করছি।’

গাড়ির অর্ডার নিয়ে জানতে চাইলে বিসমিল্লাহ মোটরসের স্বত্বাধিকারী মো. রুবেল বলেন, ‘আমরা মূলত টাকার ওপর নির্ভর করে ডেলিভারি দিই। যেমন আমার কাছে ৫টা গাড়ির অর্ডার আসছে। কিন্তু ঈদের আগে ৩টা ডেলিভারি দিবো। বাকিগুলো নেওয়ার কথা থাকলেও গাড়ির মালিক সমস্যায় পড়ায় টাকা দিতে পারছে না। তাই উনাকে ঈদের পরে ডেলিভারি দিবো। সব ওয়ার্কশপ মিলে এবার ঈদের আগে ৩০টির মতো গাড়ি এখান থেকে বের হবে।’

গাড়ি তৈরির খরচ নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘গাড়ির বডি অনুযায়ী দাম। নতুন বডি বানাতে ১০ থেকে ১৪ লাখ টাকার মতো খরচ হয়। এবারের গাড়ি যেগুলো বানাচ্ছি তার বেশির ভাগ গাড়ি রাঙ্গুনিয়ার লিচুবাগান রুটের গাড়ি। এছাড়া একজনের কাছে রাঙামাটির একটা গাড়ি আর বেশ কয়েকটা আমিরাবাদ রুটের গাড়ি আছে। তিনি জানান, বহদ্দারহাট বাস টার্মিনাল এলাকায় ১০টির মতো ওয়ার্কশপ আছে। এগুলোতে প্রায় তিন’শ থেকে পাঁচ’শ শ্রমিক কাজ করেন।