Print

Rupantor Protidin

মণিরামপুরে গোয়ালের তালা ভেঙ্গে বিধবা নারীর ৬ গরু চুরি

প্রকাশিত হয়েছে: মার্চ ৫, ২০২৫ , ৭:০৫ অপরাহ্ণ | আপডেট: মার্চ ৫, ২০২৫, ৭:০৫ অপরাহ্ণ

Sheikh Kiron

মণিরামপুরে গোয়াল ঘরের তালা ভেঙ্গে বিধবা এক নারীর ছয়টি গরু চুরির ঘটনা ঘটেছে। গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত মধ্যরাতে উপজেলার মাঝিয়ালী গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে।

বিধবা ওই নারীর নাম সেলিনা খাতুন (৫০)। ৫-৬ বছর আগে কীটনাশক ছিটাতে গিয়ে বেগুন খেতে বিদ্যুৎ স্পর্শে তাঁর স্বামী আনসার আলীর মৃত্যু হয়েছে। চুরি হওয়া ছোট বড় ছয়টি গরুর আনুমানিক মূল্য চার লাখ টাকা হবে বলে ধারণা পরিবারটির।

এদিকে নিজের কষ্টের সম্বল হারিয়ে নির্বাক হয়ে পড়েছেন বিধবা সেলিনা খাতুন। তার দুঃখে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

খবর পেয়ে আজ (বুধবার) সকালে সহকারী পুলিশ সুপার (মনিরামপুর সার্কেল) এমদাদুল হক, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূর মোহাম্মদ গাজী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

ক্ষতিগ্রস্ত সেলিনা খাতুন বলেন, আটটা গরু পুষেছি খুব কষ্টে। মঙ্গলবার রাত ১১ টার দিকে গোয়ালে তালা দিয়ে ঘুমিয়ে পড়েছে। এরপর রাত ৪ টার দিকে সেহেরী খেতে উঠে দিকে গোয়াল ঘরের দরজা খোলা। দৌঁড়ে গিয়ে দেখি আমার ঘর ফাঁকা। দরজার তালা ভেঙ্গে গোয়ালের আটটা গরুর মধ্যে ছয়টা নিয়ে গেছে।

বিধবা নারীর দেবর মিকাইল হোসেন বলেন, আমি রাত দেড়টার দিকে প্রাকৃতিক ডাকে সাড়া দিতে উঠে দেখেছি গোয়ালে সব ঠিকঠাক আছে। এরপর ভাবির কান্নার চিৎকার শুনে উঠে দেখি গোয়ালে ৬টা গরু নেই।

মিকাইল বলেন, দৌঁড়ে বাড়ির একটু দূরে যেয়ে রাস্তায় গরুর ছেড়া দড়ি ও একটা গ্যাসলাইট পাইছি। সেখানে গাড়ির চাকার দাগ দেখেছি। সাথে সাথে মসজিদের মাইকে গরু চুরির ঘোষণা দিয়ে আমরা চারদিকে খুঁজতে বেরিয়েছি। কোন খোঁজ পাইনি।

স্থানীয়দের ধারণা, ছোট পিকআপে করে চোরচক্র গরু নিয়ে গেছে। রেখে যাওয়া দুটো গরুর মধ্যে একটার পায়ে নতুন ক্ষত দেখে ধারণা হচ্ছে গাড়িতে
জায়গা না থাকায় চোরচক্র গোয়ালের বাকি গরু দুটো রেখে গেছে।

সেলিনা বেগমের অপর দেবর জাকির হোসেন বলেন, ভাই কোন জমিজমা রেখে যেতে পারেননি। ভাবি তিন ছেলের মধ্যে বড় ছেলেকে অনেক কষ্টে বিদেশে পাঠিয়েছে। একটা ছেলে ছোট। মেঝ ছেলে মুরাদ মাঠে জমি বর্গা নিয়ে চাষের কাজ করে। বাড়িতে ভাবি গরু পালন করে সংসার টিকিয়ে রেখেছেন। এখন চোর তাকে নি:স্ব করে গেছে।

জাকির হোসেন বলেন, আজ বুধবার সকালে থানায় যেয়ে গরু চুরির বিষয়ে পুলিশে জানাইছি।

স্থানীয়রা বলছেন, এলাকায় চোরের উৎপাত বেড়েছে। রাতে এলাকায় পুলিশের টহল চোখে পড়ে না।

মণিরামপুর থানার ওসি নূর মোহাম্মদ গাজী বলেন, আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। চোরচক্র চিহ্নিত করতে আমরা কাজ করছি।

পুলিশি টহল নিয়ে স্থানীয়দের অভিযোগের বিষয়ে ওসি বলেন, খেদাপাড়া ক্যাম্প পুলিশ রাতে এলাকায় টহল দেয়। এছাড়া থানার দুটি গাড়িতে রাতে পুলিশের টহল অব্যাহত আছে।