Print

Rupantor Protidin

ঝিনাইদহে হয়ে গেল ঐতিহ্যবাহী গরুর গাড়ির দৌড় প্রতিযোগীতা

প্রকাশিত হয়েছে: জানুয়ারি ২, ২০২৫ , ৯:১২ অপরাহ্ণ | আপডেট: জানুয়ারি ২, ২০২৫, ৯:১৪ অপরাহ্ণ

Sheikh Kiron

“কলুর বলদ” কথাটা সম্পূর্ণ মিথ্যা প্রমাণিত হলো ঝিনাইদহ সদর উপজেলার গান্না চন্ডিপুর মাঠে। জোয়াল কাঁধে দেওয়ার পর কর্তার হাতের ছোঁয়ায় যেন মুহূর্তেই পাল্টে যায় এ অবলা প্রানীটির চরিত্র। একে অপরকে পেছনে ফেলতে ছুটতে থাকে বিদ্যুৎ গতিতে। যা দেখে উচ্ছসিত হাজার হাজার দর্শক। সেই সাথে ছিল দিনব্যাপি গ্রামীন মেলা। আয়োজকরা জানান, ২০০০ সাল থেকে সদর উপজেলার চন্ডিপুর গ্রামের মাঠে এ আয়োজন করে আসছে স্থানীয় যুবসমাজ। সাথে আছে গ্রামীন মেলা । সেখানে শিশুদের বিভিন্ন রাইডারের পাশাপাশি আছে বাহারি সব খাবার। আছে বিভিন্ন ধরনের খেলনা ।

দেখাযায়, সকাল থেকেই বৈরী আবহাওয়া ও প্রচন্ড শীত উপেক্ষা করে আশেপাশের জেলাসহ কয়েক হাজার মানুষ জড়ো হয়েছে শুধুমাত্র গ্রামীণ ঐতিহ্যবাহী ব্যতিক্রমী খেলা গরুর দৌড় প্রতিযোগীতা ও গ্রামীণ মেলা উপভোগ করতে। ঝিনাইদহ, যশোর, নড়াইল এবং চুয়াডাঙ্গা জেলা থেকে আগত ২০টি গরুর দল এ প্রতিযোগীতায় অংশগ্রহণ করে।

দাদার হাত ধরে গরুর দৌড় দেখতে আসা ক্ষুদে দর্শক রাব্বি হাসান জানান, আমি জীবণে প্রথম দেখলাম ।

যশোর থেকে আসা ফয়েজ উল্লাহ জানান, আমরা অনেক দূর থেকে এসেছি। আধুনিক যুগে এসে গরুর গাড়ির এমন দৌড় প্রতিযোগিতা দেখে আমাদের খুব ভালো লাগছে। এরকম আয়োজন বার বার হলে নতুন প্রজন্ম আমাদের গৌরবান্বিত ইতিহাস সম্পর্কে ভালোভাবে জানতে পারবে। তাই প্রতিনিয়ত আয়োজন করা দরকার। গরুর গাড়ি যে মানুষকে আনন্দ দিতে পারে তা এখানে না এলে বোঝা যাবে না।

খেলায় দ্বিতীয় হওয়া নড়াইল জেলার নুরু হোসেন জানান, গতির সাথে পাল্লা দিয়ে প্রতিপক্ষকে হারাতে হার না মানা দৌড় দেখা গেছে প্রতিযোগীতের মধ্যে । আমাদের খুবই ভালো লেগেছে । এখানে পুরস্কার বড় কথা নয় । মানুষকে আনন্দ দেওয়াটাই মূল কথা ।

প্রথম হওয়া ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার কুরবান আলী জানান, আবহমান কাল থেকে কৃষকের হালচাষের অবিচ্ছেদ্য অংশ গরু। কিন্তু গরুর যে আলাদা আরও একটি চরিত্র রয়েছে তা প্রমাণিত হলো ঝিনাইদহের অজপাড়াগাঁ গান্না চন্ডিপুর মাঠে ।

আয়োজক মো. আবু দাউদ জানান, দর্শকদের বিনোদন, সমাজে পরিবর্তন আর গ্রাম বাংলার হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্য ধরে রাখতে প্রতিবছর এ আয়োজন করা হয় ।

উল্লেখ্য- প্রতিযোগীতায় প্রথম স্থান অধিকার করেন ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার কুরবান আলী, দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেন নড়াইল জেলার নুরু হোসেন ও তৃতীয় স্থান অধিকার করেন যশোর জেলার বাঘার পাড়ার অলিদ । প্রথম পুরষ্কার ছিলো একটি গরু, দ্বিতীয় পুরষ্কার একটি ছাগল ও তৃতীয় পুরষ্কার একটি বাইসাইকেল।