Print

Rupantor Protidin

ভোরের আলো ফুটতেই জমে ওঠে চট্টগ্রাম ফিশারি ঘাট

প্রকাশিত হয়েছে: ডিসেম্বর ২৮, ২০২৪ , ৩:০৬ অপরাহ্ণ | আপডেট: ডিসেম্বর ২৮, ২০২৪, ৩:০৯ অপরাহ্ণ

Sheikh Kiron

বন্দরনগরী চট্টগ্রামের লুসাই কন্যা খ্যাত কর্ণফুলী নদীর সবচেয়ে বড় ঘাট চট্টগ্রামের ফিশারি ঘাট।

গভীর সমুদ্র থেকে জেলেরা মাছ শিকার করে নিয়ে আসেন এই ফিশারি ঘাটে। মাছ বোঝাই ট্রলার ঘাটে ভিড়লেই শুরু হয়ে যায় হাঁকডাক। সেই সাথে বাড়ে মাছ ব্যবসায়ীদের জটলা। শুরু হয় বেচাকেনার ধুম।

ভোরের আলো ফুটতে না ফুটতেই চট্টগ্রাম ফিশারী ঘাটে শুরু হয়ে যায় বিশাল কর্মযজ্ঞ। একদিকে যেমন জমে উঠে মাছ বেচা-বিক্রি, অপরদিকে চলে বরফ দিয়ে মাছ সংরক্ষণের প্রস্তুতি। মাছ সংরক্ষণের জন্য এখানে গড়ে উঠেছে কোল্ড স্টোরেজও। সরেজমিন চট্টগ্রাম ফিশারি ঘাট ঘুরে দেখা গেছে, ভোর থেকেই ঘাটে ফিশিং বোটগুলো ভিড়তে থাকে।

এরপর শ্রমিকরা বোট থেকে বিভিন্ন প্রজাতির সামুদ্রিক মাছ খাঁচায় বহন করে আড়তে নিয়ে আসেন। অনেক ব্যবসায়ী বিদেশেও রফতানি করেন এসব মাছ। ক্রেতাদের হাতে সমুদ্রের তাজা মাছ তুলে দিতে ফিশারি ঘাট থেকে মাছ সংগ্রহ করেন চট্টগ্রামের খুচরা বিক্রেতারাও।

চট্টগ্রাম ফিশারি ঘাট থেকে সংগ্রহকৃত মাছ সরবরাহ করা হয় দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। চট্টগ্রাম ফিশারি ঘাটে লাক্ষা, ইলিশ, কই কোরাল, দাতিনা কোরাল, রেড স্নাপার, ভেটকি, সুরমা, কাটল ফিশ, দেশি স্কুইড, রূপচাঁদা, ম্যাকারে, শ্রিম্প, টুনা, স্যামন, ম্যাকরেল, সারডিন, স্কুইড, লবস্টার, টুনা কড, ছুরি, পোপা, ফাইস্যা, লইট্যা, চিংড়ি, চাপা, চাপিলা, রিকসাসহ ইত্যাদি সামুদ্রিক মাছের পাশাপাশি বার্মিজ মাছ, মিঠা পানির রুই, কাতলা, বোয়াল, কই, মাগুরসহ বিভিন্ন প্রজাতির চাষের মাছ পাওয়া গেলেও ইলিশসহ সব ধরনের সামুদ্রিক মাছের চাহিদার বিপরীতে যোগানে রয়েছে ঘাটতি। ফলে পাইকারী বাজারে বেড়েছে সব ধরনের মাছের দাম।

ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন সামুদ্রিক মাছের চাহিদা ও দাম দুটোই বেড়েছে। সে তুলনায় সরবরাহ বাড়েনি। দীর্ঘসময় ঘাটে ঘোরাঘুরি করেও কখনো কখনো ক্রেতাকে মাছ কিনতে হয় দ্বিগুণ দামে। মনোয়ার নামে পাইকারী সামুদ্রিক মাছ বিক্রেতা জানান, প্রতি কেজি চান্দা মাছ ৪২০ টাকা থেকে ৪৫০ টাকা, লইট্টা মাছ পাইকারী বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকা থেকে ১২০ টাকা। খুচরা বাজারে এসব মাছ ১৫০ থেকে ১৭০ টাকা দামে বিক্রি হয়।

এছাড়া ফিশারি ঘাটে প্রতি কেজি কোরাল মাছ ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা, সামুদ্রিক পাঙ্গাস ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা, চিংড়ি ৭০০ থেকে ৯০০ টাকা, রূপচাঁদা ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

ফিশারি ঘাটে কম দামে মাছ পাওয়া যেতে পারে এই আশায় মাছ কিনতে আসা অন্তু চৌধুরী নামে এক ক্রেতা বলেন, অনেক আশা নিয়ে ভোরে ফিশারি ঘাটে এসেছিলাম। পর্যাপ্ত পরিমাণে মাছ সরবরাহ না হওয়ায়, বিক্রেতারা মাছ বিক্রি করছেন কিছুটা বেশি দামে।

জেলা মৎস কর্মকর্তা শ্রীবাস চন্দ্র চন্দ বলেন, শীতের সময়ে পুকুরে মাছের উৎপাদন তুলনামূলক কম থাকে। তাছাড়া তীব্র শীতে জেলেরা সাগরে কম যাচ্ছে। যা মাছের চাহিদার তুলনায় যোগানে প্রভাব ফেলছে। যার প্রভাব কিছুটা দামেও পড়তে পারে। তবে দ্বিগুণ দামের ব্যাপারে আমার জানা নেই।