Print

Rupantor Protidin

হত্যামামলা করবে আলিফের পরিবার

চিন্ময়কান্ডে পুলিশের ৩ মামলা, আসামি ১৪৭৬

প্রকাশিত হয়েছে: নভেম্বর ২৮, ২০২৪ , ৬:৫৫ অপরাহ্ণ | আপডেট: নভেম্বর ২৮, ২০২৪, ৬:৫৫ অপরাহ্ণ

Sheikh Kiron

বাংলাদেশ সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে কারাগারে পাঠানোর সময় চট্টগ্রাম আদালত এলাকায় সংঘাতের ঘটনায় তিনটি মামলা করেছে পুলিশ। এসব মামলায় ১ হাজার ৪৭৯ জনকে আসামি করা হয়েছে। এদের মধ্যে ৭৯ জনের নামোল্লেখ করা হয়েছে। বাকি ১৪শ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে। আসামিদের সকলে চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর অনুসারী বলে পুলিশ জানিয়েছে। নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (জনসংযোগ) কাজী মোহাম্মদ তারেক আজিজ গতকাল তিনটি মামলা রেকর্ডের কথা নিশ্চিত করেছেন।

পুলিশ বলেছে, আদালত এলাকায় সংঘাতের ঘটনায় ২৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এদের মধ্যে ২০ জন পুলিশের ওপর হামলা করেছে এবং ৭ জন আইনজীবী আলিফ হত্যায় জড়িত। পুলিশের উপর হামলা এবং গাড়ি ভাংচুরের ঘটনায় রুজুকৃত তিনটি মামলায় গতকাল ২৭ জনকে আদালতে হাজির করা হয়। এদের মধ্যে রয়েছে আদালত চত্তবরে হামলার ঘটনায় ১১ জন এবং রঙ্গম সিনেমা হলের সামনে এবং কোতোয়ালী মোড়ের ঘটনায় ৮ জন করে আসামি। আদালত তাদেরকে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দিয়েছেন। এই আসামিদের মধ্যে অ্যাডভোকেট আলিফ হত্যার সাথে সরাসরি জড়িত ৭ আসামিও রয়েছেন বলে গতকাল পুলিশ নিশ্চিত করেছে। যাদেরকে ভিডিও, সিসিটিভি এবং ছবি দেখে শনাক্ত করা হয়েছে। উক্ত ২৭ জনের বাইরে গতরাতে ডিবি পুলিশ রাজীব ভট্টাচার্য প্রকাশ সুমন নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে। সে ফটিকছড়ির উত্তর সর্তার আবদুল্লাহপুরের সুনীল ভট্টাচার্যের পুত্র। বর্তমানে সে নগরীর পাথরঘাটার বান্ডেল রোডের ম্যানকা স্কুলের পেছনে মিয়া সাহেবের বিল্ডিং এর ৩ নম্বর রুমের ভাড়াটিয়া।

আদালত চত্বরে পুলিশের উপর হামলার ঘটনায় রুজুকৃত মামলায় এজাহারনামীয় গ্রেপ্তারকৃত আসামীরা হচ্ছে জয় নাথ (১৯), পিতা স্বপন নাথ, পাথরঘাটা, ইকবাল রোড; রুমিত দাশ (৩২), পিতা মৃত মানুয়া মেথর, মেথরপট্টি, নয়ন দাশ (২৮), পিতা মৃত বালাম দাশ, মেথরপট্টি, গগন দাস (৩৪), পিতা মৃত উমাচরণ দাস, মেথরপট্টি, সুমিত দাস (২০), পিতা খোকন মেথর, মেথরপট্টি, আমান দাস (৩০), পিতা মৃত চান্দা দাস, মেথরপট্টি, বিশাল দাস (২৬), পিতা বাদল দাস, মেথরপট্টি, সনু দাস মেথর (২৪), পিতা মনু দাস, মেথরপট্টি, সুমন দাশ (২২), পিতা রতন দাশ, কেলিশহর, সাজু বৈদ্য (৩৯), পিতা মধুসুদুন বৈদ্য, গুর্খা ডাক্তার লেইন, পাথরঘাটা ও অজয় সূত্রধর চৌধুরী (২৮), পিতা গুনচন্দ্র সূত্রধর, ব্যাটারী গলি।

রঙ্গম সিনেমা হলের সামনে পুলিশের উপর হামলার অভিযোগে রুজুকৃত মামলায় গ্রেপ্তারকৃত আসামীরা হলো পার্থ চক্রবর্তী (৩৭), পিতা মৃত দুলাল চক্রবর্তী, খাজা রোড, কসাইপাড়া, অপূর্ব শীল (২১), পিতা রতন শীল, দেওয়ানহাট, উজ্জল দাশ জনি (২৭), পিতা মৃত অধীর দাশ, চাকতাই, অপু চন্দ্র সাহা (৫৫), পিতা মৃত সুভাস চন্দ্র সাহা, বাইন্যাপট্টি, নিলয় দাশ (২৪), পিতা রনজিত কুমার দাশ, বঙিরহাট, কাজী অফিস বিল্ডিং, ধ্রব দাশ (১৯), পিতা মিলন দাশ, সেবক কলোনী, মোঃ দেলোয়ার হোসেন (২১), পিতা মোঃ মজিবুর রহমান, মাস্টারপুল, বউ বাজার ও মোঃ নুরু (১৯), পিতা মোঃ জাহের মিয়া, বর্তমানে মাস্টারপুর, বউ বাজার।

কোতোয়ালী থানার সামনে মহিম দাশ রোডের মুখে পুলিশের উপর হামলার অভিযোগে গ্রেপ্তারকৃতরা হচ্ছে ইমন চক্রবর্তী (২৪), পিতা প্রবীর চক্রবর্তী, পরৈইকোড়া, আনোয়ারা, বর্তমানে সাধু মিষ্টি ভান্ডার, সুজন চন্দ্র দাশ (৩৪), পিতা যুগল চন্দ্র দাশ, হেয়ার কার্টিং এর কর্মচারী, মৌলভীরহাট, সৌরভ দাশ (২৪), পিতা মৃত সঞ্জীব দাশ, হেমসেন লেইন, মোঃ রাকিব (২৩), পিতা আমির হোসেন ডবলমুরিং, সুমন দাস (৪০), পিতা নারায়ন দাস, পশ্চিম মাদারবাড়ী, রুপন দাশ (২৫), পিতা শ্যাম দাশ, চকবাজার, আহমদ হোসেন (২৫), পিতা মৃত আঃ মালেক, শিকলবাহা ও মোঃ সাকিবুল আলম (১৯), পিতা মোঃ ফেরদৌস আলম, উত্তর নালপাড়া।

পুলিশ জানায়, বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাশ ব্রহ্মচারীর জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশকে ঘিরে মঙ্গলবার ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ওই সময় কুপিয়ে হত্যা করা হয় চট্টগ্রাম জজ আদালতের আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে। এর আগে ওইদিন বিকালে চিন্ময় কৃষ্ণ দাশের নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভকারীদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় পুলিশের ১২ জন সদস্য আহত হন। এছাড়া ভাঙচুর করা হয় পুলিশের ব্যবহৃত একটি গাড়িও।

কোতোয়ালী থানা পুলিশ জানিয়েছে, আদালত প্রাঙ্গণ, রঙ্গম সিনেমা হল এবং কোতোয়ালী মোড় এলাকায় পুলিশের ওপর হামলা এবং গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। উক্ত তিনটি পৃথক ঘটনায় পৃথকভাবে তিনটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এর মধ্যে আদালত প্রাঙ্গণের ঘটনায় রুজু হওয়া মামলায় ৫২ জনের নাম উল্লেখ করে, অজ্ঞাত আরো ৬শ থেকে ৭শ জনকে আসামি করা হয়েছে। রঙ্গম সিনেমা হলের সামনে হামলার ঘটনায় ১৪ জনের নামোল্লেখ করে, অজ্ঞাত ৩শ থেকে ৪শ জনকে আসামি করা হয়। কোতোয়ালী মোড়ের ঘটনায় ১৩ জনের নাম উল্লেখ করে, অজ্ঞাত আড়াইশ থেকে ৩শ জনকে আসামি করা হয়েছে।