Print

Rupantor Protidin

দূর্নীতি ও স্বজনপ্রীতি বেড়াজালে আবদ্ধ বিটিভি চট্টগ্রাম কেন্দ্র

প্রকাশিত হয়েছে: সেপ্টেম্বর ৫, ২০২৪ , ৬:২৩ অপরাহ্ণ | আপডেট: সেপ্টেম্বর ৫, ২০২৪, ৬:২৩ অপরাহ্ণ

Sheikh Kiron

ভুয়া অনুষ্ঠান শিডিউল বানিয়ে ভুয়া বিলে অর্থ লোপাট, বিধি বহির্ভূত নিয়োগ বাণিজ্য, উপকরণ কেনাকাটায় দুর্নীতি, উন্নয়ন প্রকল্প থেকে কমিশন বাণিজ্যই মুখ্য কাজ। ১৮ জন মেধাবী প্রযোজক থাকার পরও দলীয় বিবেচনায় চুক্তিভিত্তিক অযোগ্য অতিথি প্রযোজক দিয়ে অনুষ্ঠান করিয়েছেন। অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে দৈনিক ৪ থেকে ৫ লাখ টাকা লোপাট করেছেন। এসব অনিয়ম-দুর্নীতি ও অপকর্মের হোতা অনিয়মের মাধ্যমে পদোন্নতি পাওয়া বাংলাদেশ টেলিভিশন চট্টগ্রাম কেন্দ্রের (সিটিভি) জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) নূর আনোয়ার হোসেন। সদ্য ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা প্রয়াত এইচ টি ইমামের আশির্বাদে এমন পোয়াবারো নূর আনোয়ার হোসেনের। এ ক্ষেত্রে তার পক্ষ হয়ে কাজ করেছে একটি সিন্ডিকেট। প্রযোজক ইয়াদ আহমেদ, আব্দুল্লাহ আল মামুন, অতিথি প্রযোজক সাখাওয়াত হোসেন মিঠু, শকত ইকবাল এবং বৈদ্যনাথ অধিকারী অন্যতম।

জানা গেছে, জিএম নূর আনোয়ার হোসেন ২০০৭ সালের ১০ জানুয়ারি বিটিভিতে অডিয়েন্স রিসার্চ অফিসার/স্ক্রিপ্ট অ্যান্ড মনিটরিং এডিটর (গ্রেড-২) হিসেবে যোগ দেন। ২০০৯ সালের ৪ জুন এইচ টি ইমামের লিখিত সুপারিশে ৯ জুন তাকে বিধিবহির্ভূতভাবে স্থায়ী পদ প্রযোজক ( গ্রেড-২) পদায়ন করে বিটিভি। পরে রাজনৈতিক প্রভাবে ২০১৪ সালের ১৩ জানুয়ারি প্রযোজক (গ্রেড-১) পদে পদোন্নতি; একই বছরের ২৩ সেপ্টেম্বর তাকে নির্বাহী প্রযোজক এবং ২০২০ সালের ২১ সেপ্টেম্বর কন্ট্রোলার/ প্রোগ্রাম ম্যানেজার হিসেবে পদোন্নতি দেওয়া হয়। ২০২৩ সালের ৪ জানুয়ারি নূর আনোয়ার হোসেনকে বিটিভি চট্টগ্রাম কেন্দ্রের জিএম হিসেবে পদায়ন করে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়।

একজন নারী শিল্পী অভিযোগ করেন, জিএম নূর আনোয়ার হোসেন মডেল ও সুন্দরী কিছু উপস্থাপিকা ও শিল্পীদের নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক দুই মন্ত্রীর আশীর্বাদ নিয়ে ক্ষমতাধর হয়ে উঠেন। ফলে কেউ তার দুর্নীতি-অপকর্মের বিরুদ্ধে কথা বলার সাহস পায়নি।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, ‘বদলে গেছে বাংলাদেশ’ নামে একটি অনুষ্ঠানের চুক্তিভিত্তিক প্রযোজক সাখাওয়াত হোসেন মিঠু। এই
অনুষ্ঠানের মূল প্রতিপাদ্য বিষয় সরকারের উন্নয়ন তুলে ধরা। অথচ অনুষ্ঠানে কোনো অংশগ্রহণকারী ছিল না। প্রকৃতপক্ষে বিভিন্ন
অঞ্চলে গিয়ে অনুষ্ঠান ধারণের কথা থাকলেও যাদের সাথে কথা বলা হয়, তাদের কোনো চেক দেয়নি। এই অতিথি প্রযোজকদের স্বাক্ষর করার ক্ষমতা না থাকার পরও নিজেরা বিল বানিয়ে লাখ লাখ টাকা উত্তোলন করেছেন। অনুষ্ঠানগুলোতে যাদের নামে চেক দেখানো হয়েছে, এরা প্রকৃতপক্ষে অংশগ্রহণকারী নয়। জিএম তার লোকদের নামে এসব চেক দিয়ে নিজেরাই ভোগ করে। প্রতিনিয়ত প্রচার হলেও অনুষ্ঠান নির্মাণ হয় না। কেবল অংশবিশেষ পরিবর্তন করে প্রচার করে বিল বানানো হয়।

এদিকে এই অনিয়মের বিরুদ্ধে ১৪ জন কর্মকর্তা তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবের কাছে পদায়ন এবং পদোন্নতি বাতিলের জন্য লিখিতভাবে আবেদন করেন, যা গত ৯ এপ্রিল বিটিভির মহাপরিচালকের মাধ্যমে পাঠানো হয়। ওই কমিটি গত রবিবার অভিযোগকারী ১৪ কর্মকর্তার সাক্ষ্য নিয়েছেন। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর সুপারিশের ভিত্তিতে তার বিরুদ্ধে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. হুমায়ুন কবীর খোন্দকার।

তিনি বলেন, জিএমকে প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত হয়েছে। তার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ উঠেছে, সেগুলোর সত্যতা যাচাই করছে তদন্ত কমিটি। আগামী সপ্তাহ নাগাদ তদন্ত প্রতিবেদন পাব। এরপর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সূত্র জানায়, জিএম নুর আনোয়ার ওই কেন্দ্রের অতিরিক্ত পরিচালককে (প্রশাসন) হুমকি দেন মুঠোফোনে, যার একটি অডিও
ক্লিপ এই প্রতিবেদকের হাতে রয়েছে। অডিও ক্লিপে শুনতে পাওয়া যায়- ‘এই শুয়োরের বাচ্চা, লাথি দিয়ে তোকে বিদায় করে দেব।’

অন্যদিকে শারীরিক নির্যাতনসহ জীবনের হুমকির বিষয় তুলে ধরে জিডির অনুমতি চেয়ে মহাপরিচালক বরাবরে আবেদন করেন কেন্দ্রের অতিরিক্ত পরিচালক (অর্থ) মো. আতাউর রহমান। জিএম নূর আনোয়ার হোসেনের মুঠোফোনে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি। অপর দিকে দূর্নীতিসহ বিভিন্ন অপকর্মের দায় এড়াতে পারেন না প্রোগ্রাম ম্যানেজার রোমানা শারমিন। অনিয়মের অভিযোগ করেছেন সাংস্কৃতিক অঙ্গনের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা। স্বজনপ্রীতি, দুর্নীতি, অনিয়ম, মানহীন অনুষ্ঠান, পুরোনো অনুষ্ঠান চালানো সহ নানা বিষয়ে শিল্পীদের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। প্রোগ্রাম ম্যানেজারের স্বেচ্ছাচারিতার কারণে দীর্ঘদিন চট্টগ্রামের গুণী ও পরিচিত মুখগুলোকে অনুষ্ঠান থেকে দূরে সরিয়ে রাখার অভিযোগ উঠেছে। গুটি কয়েক মানুষ হর-হামেশা অনুষ্ঠান করার সুযোগ পেলেও অনেকে গত দুই বছরে একটি অনুষ্ঠানও করার সুযোগ পাননি এমন নজিরও রয়েছে। শিল্পী ও সংস্কৃতি সুধীজন, সবার একটাই অভিযোগ রোমানা শারমিনের কারণে বিটিভি চট্টগ্রাম কেন্দ্রে অসন্তোষ চলছে দীর্ঘদিন ধরে। তিনি এই পদে একই কেন্দ্রে দীর্ঘদিন থাকাতে ড্যাম কেয়ার ভাব নিয়ে চলেন। পূর্বে চট্টগ্রাম বেতারে কর্মরত রোমানা
শারমিন-এর সাথে এখানকার রোমানা শারমিন-এর বিরাট পার্থক্য খুঁজে পান শিল্পীরা। প্রোগ্রাম ম্যানেজার রোমানা শারমিন-এর অনুষ্ঠান বন্টন নিয়ে বৈষম্যগত কারণে নানামুখি বিতর্কে পড়তে হয় দায়িত্বপ্রাপ্ত জেনারেল ম্যানেজার নুর আনোয়ার রঞ্জুকে। একই বিতর্কে পড়তে হয়েছিল সাবেক জি.এম নিতাই কুমার ভট্টাচার্য্য ও মাহফুজা আক্তারকে। নানা সমালোচনা বিতর্ক নিয়ে তাদেরকে চট্টগ্রাম ছাড়তে হয়েছিলো। তবে, বহাল তবিয়তে আছেন প্রোগ্রাম ম্যানেজার রোমানা শারমিন।

অভিযোগ উঠেছে রোমানা শারমিনের আওয়ামী লীগের কানেকশন রয়েছে বহু আগে থেকেই। তিনি সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাসান মাহমুদের কাছের লোক থাকায় তাকে সাবেক প্রাধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কার্যালয় থেকে টেলিভিশনে আনা হয়েছে। তিনি এই পদ থেকে দূর্নীতি করছেন। প্রায় দশ বছর প্রোগ্রাম ম্যানেজার হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন সরকারী নিয়মে এ পদে এতোদিন এক জায়গায় থাকার একতিয়ার নেই তিনি বিভিন্ন কায়দায় এতোদিন ধরে থেকেছেন। বতর্মানে জেনারাল ম্যানেজার রঞ্জুর বদলির আদেশ হলেও, থেকে যাচ্ছে রোমানা শারমিন। তিনি প্রোগ্রাম ম্যানেজার হিসেবে এই কেন্দ্র থাকতে চাই।

একাধিক শিল্পী অভিযোগ করে বলেন, বিটিভি চট্টগ্রাম কেন্দ্রের অনুষ্ঠানগুলোর সাউন্ড কোয়ালিটি খুবই খারাপ। এছাড়াও অডিও’র সাথে ভিডিও’র লিপসিং মিলেনা, বহিদৃশ্যের কাজগুলো ঘোলাটে হয়। সাধারণ দর্শক দেখেন এমন অনুষ্ঠানগুলো দুপুরে বিশ্রামের সময় প্রচার করা হয়।

কিছু কিছু প্রযোজক নগদ অর্থ না নিলেও উপহার প্রথা চালু করেছেন খুব স্মার্ট ভাবে। ছোটদের অনুষ্ঠান, নৃত্যানুষ্ঠানে, আউটডোর শুটিং এর নামে লেনদেনের অভিযোগ উঠে এসেছে সর্বমহলে। যত মাথা তত টাকা এ যেন এলাহী কারবার।

এসব অভিযোগের বিষয়ে অনুসন্ধান করলে জানা যায়, অনুষ্ঠান শেষে শিল্পী সম্মানীর চেক দেয়ার কথা বলা হলেও সেই নিয়ম
মানা হচ্ছেনা। এছাড়াও পুরানো চেক নিতে হয়রানীর স্বীকার হতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত। হিসেব শাখায় টেবিলে টেবিলে ঘুরতে হয় শিল্পী সম্মানীর চেক নিতে। কিছু কিছু প্রযোজক অনুষ্ঠানের বাজেটে নিজেদের পরিচিত কিছু নাম যুক্ত করে বাজেট পাস করে নেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

এছাড়াও প্রযোজক মোস্তাফিজুর রহমান, শওকত ইকবাল, আফরোজা চৌধুরী দিনাসহ বেশ কয়েকজন প্রযোজকের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ করেছেন শিল্পীরা। বিটিভি চট্টগ্রাম কেন্দ্রের নানা অনিয়ম দুর্নীতি নিয়ে দুদকে তদন্ত চলছে। ১৫০ জন উপস্থাপক তালিকাভুক্ত থাকলে ঘুরে ফিরে ৪/৫ জন উপস্থাপিকা দিয়ে অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করা হয়। গ্রন্থনা তালিকাভুক্ত রয়েছে ২০ জনের মতো, তাদের কোনো কাজে লাগানো হয় না। তাহলে কেন তালিকাভুক্ত করা হলো? এমনটি প্রশ্ন তালিকাভুক্ত গ্রহন্থনাকারীদের। পূর্বের জেনারেল ম্যানেজাররা গ্রন্থনাকারীদের অনুষ্ঠানে গ্রন্থনা লেখার কাজে লাগালেও বর্তমানে তা অদৃশ্য হয়ে গিয়েছে।

চিত্রনায়ক পংকজ বৈদ্য সুজন বলেন, গত ২ বছরে একটি অনুষ্ঠান করারও সুযোগ পাইনি। টিভি কর্তৃপক্ষ ডাকেনি, এটি বড় লজ্জাজনক বিষয়, দু:খের বিষয়। তাহলে অনুষ্ঠান কে করে, কারা করায়, সেটাই জানার ইচ্ছে রয়েছে। টিভি কর্তৃপক্ষের কর্মকান্ড দেখলে মনে হয় আমরা অভিনয় করতে জানিনা।

সঙ্গীত পরিচালক স্বপন কুমার দাশ বলেন আমরা নিয়মিত কোন অনুষ্ঠান পায় না। মৌলিক গানের অনুষ্ঠান করতে টিভি কর্তৃপক্ষের আগ্রহ নেই বললেই চলে। যেটি বড় লজ্জাজনক ও দু:খের বিষয়। বলেন, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, অন্যান্য বিশেষ দিনগুলোতে কোনো অনুষ্ঠানে আমাদেরকে ডাকা হয়না।

দেশ বরেণ্য জনপ্রিয় গীতিকার ডা: গোলাম মোস্তফা বলেন, আমি অনুষ্ঠান পায়না, আমিতো টিভিতে গিয়ে লবিং করবো, ধর্না দিবো এমন পরিস্থিতি নেই, সেই সময়ও নেই। সম্মানিত গুনীলোকদের সম্মান না দেয়া এটা কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা দৈন্যতা ও ব্যর্থতা। গীতিকাররা টিভিতে বরাবরই অবহেলিত। এ নিয়ম দীর্ঘদিন চলতে দেয়া যায় না। তালিকাভুক্ত নয় এমন গীতিকারদের গান সবসময় প্রচার করছে কোন নীতিতে সেটাই রহস্যজনক।

একজন শিল্পী বলেন, বিটিভি চট্টগ্রাম কেন্দ্রে অনুষ্ঠান করার সুযোগ পাচ্ছিনা। নারী বিষয়ক অনুষ্ঠানগুলো কারা করে জানিনা। আমরা যেন এই শহরে অতিথি হয়ে গিয়েছি। আমরা অবহেলিত। নতুন নতুন আমদানি হওয়া নারীরা টিভিতে বিভিন্ন অনুষ্ঠান করে। সিন্ডিকেটভুক্ত দালাল তোষামোদকারীরা অনুষ্ঠান করে যাচ্ছে। বিটিভি চট্টগ্রাম কেন্দ্রে একজন নারী ২৫ দিনে ২৫টি অনুষ্ঠান করার উদাহরণ আছে। সকলেই জানেন। প্রোগ্রাম ম্যানেজারকে উপহার দিয়ে নিয়মিত অনুষ্ঠান করে থাকেন, বেতারের একজন নাট্য অভিনেতা বলেন টিভি কর্তৃপক্ষ আমাদেরকে ডাকেন না। কারা কারা অনুষ্ঠান করছে জানিনা। তবে চট্টগ্রামের অভিনেতা ও অভিনেত্রীরা উপেক্ষিত অবহেলিত এই কেন্দ্রে। আমাদের টিভি আমরাই নাই, বেশ মজার বিষয়। এখানে একটি চক্র প্রযোজকদের সাথে যোগসাজশে বিভিন্ন নাটক গুলোতে কাজ করে। রাত দিন টিভি কেন্দ্রে বসে থেকে তেল মর্দন করে কাজ করা এটি সবার পক্ষে সম্ভব নয়।

চট্টগ্রাম মিডিয়া ফোরাম এর সভাপতি চলচ্চিত্র অভিনেতা আলী নেওয়াজ বলেন, সিন্ডিকেটভুক্ত দালালরা এটাকে জিম্মি করে রেখেছে।

তারা তাদের বাহিরে কাউকে সুযোগ দেন না। গান করতে না পেরে ক্ষোভে দু:খে টিভিতে যাওয়ার সাহস হারিয়ে ফেলেছি। বাংলাদেশ সংগীত সমন্বয় পরিষদ চট্টগ্রাম বিভাগের সভাপতি বরেণ্য শিক্ষাবিদ প্রফেসর হাসিনা জাকারিয়া বেলা বলেন আমি বিগত সময়ে অনুষ্ঠান পেয়েছি, এই প্রোগ্রাম ম্যানেজার রোমানা শারমিন আসার পর থেকে আমি আর কোন অনুষ্ঠান পায়নি।

বরেণ্য ব্যান্ড শিল্পী জ্যাকব ডায়াস বলেন, আমরাই এদেশের ব্যান্ড এর জন্মদাতা, কিন্তু বিটিভি চট্টগ্রাম কেন্দ্রে ব্যান্ডের অনুষ্ঠানগুলো কে কখন করেন, কারা করান সেটা আজো জানতে পারলাম না। টিভি কর্তৃপক্ষের কাছে যেনো পরিচয়হীন হয়ে গেলাম। যে মানুষগুলো সোলস, এলআরবি, মাইলস, রেনেসা, ফিডব্যাক সহ জনপ্রিয় ব্যান্ড সৃষ্টি করলো তারা আজ বিটিভি চট্টগ্রাম কেন্দ্রের কর্তৃপক্ষের কাছে অচেনা হয়ে পড়েছে।

সংগীত শিল্পী নাজমুল আবেদীন চৌধুরী বলেন, আমার প্রয়োজন হয়তো ফুরিয়ে গেছে তাই ডাকা হয়না। ২৫ বছর নিজের টাকায় রেকর্ডিং করে গান করে টিভিকে সহযোগিতা করে গিয়েছি। আর এখন আমার মতো অনেকের মূল্যায়ন হয় না। যারা এখন লাফালাফি করছে, তারা তখন কোথায় ছিলো?

অভিনেতা বরুন সেন দোয়েন বলেন, আঞ্চলিক নাটক নিয়ে কর্তৃপক্ষের এলার্জি রয়েছে। প্রযোজকদের যারা উপহার দেন, তাদেরকে দিয়েই নাটক করানো হয়। প্রোগ্রাম ম্যানেজার রোমানা শারমিন চট্টগ্রাম বিদ্বেষী। প্রযোজকরা উপহারের বিনিময়ে অলংকার মোড়, কর্ণেলহাট এলাকার কিছু ছেলে মেয়েকে নাটকে অভিনয় করার সুযোগ দেন বলে গুঞ্জন রয়েছে।

নাট্যকার নাসির চৌধুরী বলেন, বিটিভির লোকজন তারা নিজেরাই ছদ্দ নামে নাটকের স্ক্রিপ্ট লিখে নাটক প্রচার করে, সেক্ষেত্রে আমরা সুযোগ পাবো কিভাবে? বিড়ালের গলায় ঘন্টা বাঁধবে কে? এখানে চোরের বিচার ডাকাত করে। তাই ইজ্জত সম্মান নিয়ে দূরে আছি।

এই সব অভিযোগ নিয়ে প্রোগ্রাম ম্যানেজার রোমানা শারমিনকে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, আমি নিয়মিত সবাইকে প্রোগ্রাম দিচ্ছি। আমার বিরুদ্ধে এইসব অভিযোগ সত্য না।