Print

Rupantor Protidin

পাইকগাছায় ২২ জনের নামে ভর্তূকি মূল্যে কৃষিযন্ত্র বরাদ্দ; উত্তোলন ৫

প্রকাশিত হয়েছে: আগস্ট ২৬, ২০২৪ , ৬:২৭ অপরাহ্ণ | আপডেট: আগস্ট ২৬, ২০২৪, ৬:২৭ অপরাহ্ণ

Sheikh Kiron

পাইকগাছায় ২২ জনের নামে ভর্তূকি মূল্যে কৃষিযন্ত্র বরাদ্দ হলেও; উত্তোলন করেছেন পাঁচ জন উপকারভোগী। এদিকে সরকারের ভর্তুকি মূল্যে কৃষকদের মধ্যে কম্বাইন হারভেস্টার বিতরনের খবর প্রকাশে কৃষি অফিসের তৎপরতায় এলাকায় ফিরিয়ে আনা হয়েছে বিতরনকৃত ৫টি মেশিনের ৩টি। বাকি দু’টিও নির্দিষ্ট সময়ে এলাকায় ফিরবে বলে দাবি স্থানীয় কৃষি অফিসের।

পাইকগাছা কৃষি অফিসের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে পাইকগাছা উপজেলা থেকে মোট ২২ জনের ভর্তুকি মূল্যে কৃষিযন্ত্র পাওয়ার জন্য আবেদনকারীদের তালিকা দেওয়া হয়। এর মধ্যে ২২ জনের নামেই যন্ত্র বরাদ্দ হয়। এর মধ্যে ৭টি কম্বাইন হারভেস্টার যন্ত্র বরাদ্দ দেওয়া হয়। তবে ৭ জনের মধ্যে ৪ জন এ কম্বাইন হারভেষ্টার মেশিন উত্তোলন করেন। অন্যদিকে ১ জন উত্তোলন করেন পাওয়ার স্প্রেয়ার।

উত্তোলন কারীরা হলেন, উপজেলার হরিঢালী গ্রামের মো: নওশের আলী খাঁর ছেলে মো: মিজানুর খাঁ, গড়ইখালীর কানাখালী গ্রামের রবীন্দ্র নাথ সানার ছেলে প্রদীপ সানা, সোনাতন কাটির মৃত শেখ ছজুদ এর ছেলে শেখ এছকেন্দার আলী ও হরিঢালী গ্রামের মৃত সোনা মোড়লের ছেলে ইসমাইল হোসেন কম্বাইন হারভেস্টার ও উপজেলার লস্করের লেবুবুনিয়া গ্রমের বীরেন্দ্র নাথ মন্ডলের ছেলে দিলিপ কুমার মন্ডল একটি পাওয়ার স্প্রেয়ার উত্তোলন করেন।

গত ২ মে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহযোগীতায় সমন্বিত ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে কৃষি যান্ত্রিকিকরণ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় প্রান্তিক পর্যায়ে কৃষকদের স্মার্ট কৃষি নির্ভর করতে পাইকগাছায় সরকারের ভর্তুকি মূল্যে কৃষকদের মধ্যে এসব কৃষি যন্ত্রপাতি বিতরণ করে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ।

স্থানীয় কৃষি অফিস সূত্র জানায়, প্রতিটি কম্বাইন হারভেস্টারের মূল্য ৩১লক্ষ টাকা। সমন্বিত ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে কৃষি যান্ত্রিকীকরণ প্রকল্পের আওতায় উপকূল ও হাওরাঞ্চলের জন্য ৭০% এবং অন্যান্য এলাকায় কৃষকের জন্য উন্নয়ন সহায়তা হিসেবে ৫০% ভর্তুকি মূল্যে কার্যক্রমের অংশ হিসেবে পাইকগাছার কৃষকরা প্রতিটি হারভেস্টারে ১৫ লক্ষ ৫০ হজার টাকা ভর্তুকি পেয়েছেন। কম্বাইন হারভেস্টারগুলো উত্তোলনের পর সংশ্লিষ্ট উপকারভোগীরা তা চুক্তিভিত্তিক নিজ উপজেলার বাইরে পাঠিয়ে দেন বলে দাবি কৃষি অফিসের।

এনিয়ে গত ২৭ জুলাই একটি জাতীয় দৈনিকে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ায়, সংশ্লিষ্টরা উপকারভোগীদের তাগিদ দিয়ে ইতোমধ্যে ৩টি মেশিন এলাকায় ফিরিয়ে নিতে সক্ষম হয়েছেন। বাকি দু’টি মেশিনরে একটি বর্তমানে দিনাজপুর ও অপরটি কুষ্টিয়ার মেহেরপুরে অবস্থান করছে। যা তারা অনুমতি সাপেক্ষে আউশ ও আমন মৌসুমে ধান কর্তন-পূর্বক ফিরিয়ে আনার জন্য আবেদন করেছেন বলেও জানান তারা।

তথ্যানুসন্ধানে পাইকগাছা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা অসীম কুমার দাশ জানান, কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে যন্ত্র বরাদ্দ পাওয়ার পর তা মাঠ পর্যায়ে বিতরণ উপজেলা কৃষি অফিস করলেও বাজেট খরচ হয় সরাসরি প্রকল্প দপ্তর হতে। ভর্তুকি দরে যন্ত্র কেনার জন্য কৃষকের আবেদনের পর খসড়া তালিকা প্রস্তুত করেন উপজেলা বাছাই কমিটি। বাছাই কমিটিতে থাকেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা, সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা, উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা এনজিও প্রতিনিধি ও কৃষক প্রতিনিধি সহ অনান্য সদস্যরা। চূড়ান্ত তালিকা প্রস্তুতের পর উপকারভোগী কৃষকদের প্রত্যয়নপত্র দেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা। ভর্তুকি বাদে বাকি টাকা দিয়ে প্রত্যয়নপত্র দেখিয়ে কৃষক ডিলারের কাছ থেকে যন্ত্রটি সংগ্রহ করেন বলে জানানো হয়।

এবিষয়ে পাইকগাছা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ কৃষিবিদ অসীম কুমার দাশ জানান, কৃষক ছাড়াও যে কোন উদ্যোক্তা ভর্তুকি মূল্যে কম্বাইন হারভেস্টারের জন্য আবেদন করতে পারবেন। এরই ধারাবাহিকতায় যাচাই-বাছাইয়ের পর তালিকা সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানো হয়। সেখানে মোট ২২ জনের নামে বিভিন্ন মেশিন বরাদ্দ হয়। এদিকে তালিকাভুক্ত সকলে নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে মেশিন গ্রহন করেননি। ফলে ৪টি হারভেস্টার ও একটি পাওয়ার স্প্রেয়ার গ্রহন করেন তালিকাভূক্তদের ৫জন।

তিনি আরোও বলেন, আগামী ৩ বছরের মধ্যে উপকারভোগীরা এটি হস্তান্তর করতে পারবেননা। তবে অন্যত্র ভাড়া দিতে পারবেন। সে অনুযায়ী উপকারভোগীদের মধ্যে দু’জন দুটি মেশিন অন্যত্র ভাড়া দিয়েছেন। নির্দিষ্ট সময়ে মেশিন দুটি এলাকায় ফিরিয়ে আনতে তাদেরকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।