কক্সবাজারের মাতারবাড়ী কয়লাভিত্তিক এক হাজার ২০০ মেগাওয়াট সক্ষমতার বিদ্যুৎকেন্দ্রটি আবার পূর্ণ সক্ষমতায় উৎপাদন শুরু করেছে। বিদ্যুৎকেন্দ্রটির দুটি ইউনিট থেকে এখন এক হাজার মেগাওয়াটের বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। কারিগরি ত্রুটির কারণে গত ১০ আগস্ট বন্ধ হয়ে যায় বিদ্যুৎকেন্দ্রটি।
দেশের বড় এই বিদ্যুৎকেন্দ্রটি থেকে পুরোপুরি উৎপাদন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিদ্যুতের চাহিদা ও সরবরাহরে বড় ঘাটতি তৈরি হয়। এতে দেশের বিভিন্ন এলাকায় লোডশেডিং বেড়ে ভোগান্তিতে পড়ে মানুষজন। ফের উৎপাদন শুরু হওয়ায় লোডশেডিংয়ের মাত্রা অনেকটাই কমে গেছে বলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন।
জানতে চাইলে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) সদস্য (উৎপাদন) খন্দকার মোকাম্মেল হোসেন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘মাতারবাড়ী বিদ্যুৎকেন্দ্রটির দুটি ইউনিট ফের চালু করা হয়েছে। প্রথম ইউনিট গত ১৭ আগস্ট এবং দ্বিতীয় ইউনিট গত ১৯ আগস্ট চালু করা হয়।
বর্তমানে দুটি ইউনিট থেকে এক হাজার মেগাওয়াটের বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হচ্ছে। বিদ্যুৎকেন্দ্র সূত্রে জানা গেছে, শতভাগ সরকারি মালিকানায় উৎপাদনে থাকা দেশের সবচেয়ে বড় কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র এটি। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে সরকারি প্রতিষ্ঠান কোল পাওয়ার জেনারেশন কম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেড (সিপিজিসিবিএল)। এক হাজার ২০০ মেগাওয়াট সক্ষমতার বিদ্যুৎকেন্দ্রটির প্রথম ইউনিটের বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু হলেও দ্বিতীয় ইউনিটটি এখনো পরীক্ষামূলক উৎপাদনে রয়েছে।
খুব শিগগির দ্বিতীয় ইউনিটের বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। জাপানের আর্থিক সহায়তায় নির্মিত দুই ইউনিটের বিদ্যুৎকেন্দ্রটির প্রথম ইউনিট গত বছরের ২৬ ডিসেম্বর থেকে বাণিজ্যিক উৎপাদন করছে। গত বছরের ২৪ ডিসেম্বর থেকে দ্বিতীয় ইউনিটের পরীক্ষামূলক উৎপাদন শুরু হয়েছে।
প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, ২০১৪ সালের ১৬ জুন বাংলাদেশ সরকার ও জাইকার মধ্যে একটি ঋণচুক্তি হয়। ২০১৩-১৪ অর্থবছরে মাতারবাড়ী প্রকল্প বাস্তবায়নের শুরুতে এর ব্যয় ধরা হয়েছিল ৩৫ হাজার ৯৮৪ কোটি টাকা।
পরে তা বাড়িয়ে ৫১ হাজার ৮৫৪ কোটি ৮৮ লাখ টাকা করা হয়। জমি অধিগ্রহণ ও বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ ছাড়াও এই টাকার মধ্যে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণকাজের আওতায় ১৪.৩ কিলোমিটার দীর্ঘ, ৩৫০ মিটার প্রস্থ ও ১৮.৫ মিটার গভীর চ্যানেল, সি-ওয়ালসহ আনুষঙ্গিক ফ্যাসিলিটিস নির্মাণকাজ করা হয়েছে।