Print

Rupantor Protidin

ঘূর্ণিঝড় রেমালের আঘাতে

যশোরের গ্রামাঞ্চলে আজ পুরোপুরি সচল হতে পারে বিদুৎ সরবরাহ

প্রকাশিত হয়েছে: মে ২৭, ২০২৪ , ৮:১৫ অপরাহ্ণ | আপডেট: মে ২৭, ২০২৪, ৮:১৫ অপরাহ্ণ

Sheikh Kiron

ঘূর্ণিঝড় ‘রেমালে’র প্রভাবে যশোর শহরসহ আটটি উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। এসকল এলাকায় বিদ্যুৎ সচল করতে কাজ করছে বিদ্যুৎ বিভাগের মাঠকর্মীরা। তবে ইতিমধ্য কিছু কিছু এলাকায় বিদ্যুতের সংযোগ সচল হলেও থেকে থেকে লোডশেডিং দেখা দিয়েছে। এদিকে কখন নাগাদ গোটা জেলায় পুনরায় স্বাভাবিক ভাবে বিদুৎ সরবরাহ পুরোপুরি সচল হতে পারে এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোন তথ্য দিতে পারেনি বিদুৎ বিভাগের কর্মকর্তারা।

ঘূর্ণিঝড় ‘রেমালের’ প্রভাবে রোববার (২৬মে) দিবাগত রাত ১২টা থেকে যশোর জেলা জুড়ে ঝড়ো হওয়া এবং বৃষ্টিপাত শুরু হয়। এরপর থেকে সোমবার রাত ১২টা থেকে শহরের পাশাপাশি বিভিন্ন গ্রামাঞ্চলও বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। বিশেষ করে রাত দুইটার পর যশোর শহরের অধিকাংশ এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। টানা ১২ ঘন্টা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন থাকার পর সোমবার (২৭মে) সকাল ১০টা নাগাদ শহরের কিছু কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু হয়। তবে এখনো কয়েকটি এলাকায় বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে এবং লোডশেডিং হচ্ছে বলে জানা গেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, যশোরের সদর, শার্শা, ঝিকরগাছা, মনিরামপুর ,কেশবপুর বাঘারপাড়া, চৌগাছা উপজেলার কয়েকটি গ্রামাঞ্চলে এখনো বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। গতকাল রাতে ঝড়ো বাতাস ছাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এসব এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। একটানা দীর্ঘ সময় বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন থাকায় ভোগান্তিতে পড়েছে শহর ও গ্রামের বাসিন্দারা। বিশেষ করে প্রত্যান্ত গ্রামের মানুষেরা জরুরি প্রয়োজনে চার্জ না থাকায় মুঠোফোনে একে অপরের সাথে যোগাযোগ করতে পারছেন না। আবার অনেক এলাকায় বিদ্যুৎ না থাকায় সাবমারসিবল পাম্প এবং পানির পাম্প চালু করে পানি সংগ্রহ করতে পারছেন না ভুক্তভোগী সাধারণ মানুষেরা।

শার্শা উপজেলার স্থানীয় সংবাদকর্মী জসিম উদ্দিন জানান, গতকাল রাতে ঝড়বাতাস ছাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শার্শা উপজেলা বিদুৎ বিছিন্ন হয়ে পড়ে। সকাল ১০টা নাগাদ শার্শা ও বেনাপোল শহর এলাকায় বিদুৎ সরবরাহ সচল হলেও অধিকাংশ গ্রামে এখনো বিদুৎ সরবরাহ সচল হয়নি।

তিনি জানান, শার্শার দক্ষিণ বুরুজবাগান, যাদবপুর, নারায়ণপুর, কালিয়াপাড়া এলাকায় দুপুর ৩টা পর্যন্ত বিদুতের দেখা মেলেনি।

মনিরামপুর উপজেলার স্থানীয় সংবাদকর্মী আল-মামুন জানান, সকালে মনিরামপুরের কয়েকটি ইউনিয়নে বিদুৎ সংযোগ সচল হয়েছে। তবে এখনো ঝাপা, খানপুর, চালুহাটি ও চাকলসহ কয়েকটি গ্রাম বিদুৎ বিছিন্ন রয়েছে বলে জানা গেছে।

সদর উপজেলার কচুয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা জহুরুল ইসলাম বলেন, ‘গতকাল রাত থেকে বিদুৎ নেই। ফোনে চার্জ নেই। জরুরী প্রয়োজনে কারও সাথে যোগাযোগ করতে পারছি না। ‘

সদরের চুড়ামনকাঠি এলাকার বাসিন্দা মিজান শেখ জানান, গতকাল রাত থেকে এখন পর্যন্ত বিদুৎ নেই। খুব বিপদে আছি। কখন বিদুৎ সংযোগ পাবো তাও জানি না।’

যশোর শহরের বেজপাড়ার বাসিন্দা আসলাম শেখ বলেন, ‘ বিদুৎ না থাকায় পানি তুলতে পারিনি। সকালে একটু লাইন এসেছিলো অল্প পানি তুলতে পেরেছি। তাও মাঝে মাঝে লোডশেডিং হচ্ছে।’

যশোর ওয়েস্ট জোন পাওয়া ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানী লিমিটেডের নির্বাহী প্রকৌশলী শহিদুল ইসলাম জানান, গতকাল যশোরে ঘূর্নিঝড় রেমাল আঘাত হানার পর যশোরের অনেক স্থানেই বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। অনেক স্থানে বিদ্যুৎ ট্রান্সফরমার ক্ষতিগ্রস্থ হয়। বিদ্যুতের তারও ক্ষতিগ্র্রস্থ হয়েছে বলে জানান তিনি। বিদ্যুৎ বিভাগের বেশীরভাগ কর্মকর্তা ক্ষতিগ্রস্থ সংযোগ মেরামতে ব্যস্ত। এই কারনে এখনই কোন সম্পূর্ন তথ্য দেওয়া যাচ্ছে না।

যশোর পল্লী বিদ্যুত সমিতি- ১ এর জেনারেল ম্যানেজার মোঃ আব্দুল লতিফ জানান, ‘গতকাল রাত বারটার পর ঘুর্নিঝড় রেমাল আঘাত হানলে অধিকাংশ এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ, বিদ্যুতের খুটি, ট্রান্সফরমার ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। তবে এখন পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির অধিকাংশ কর্মকর্তা মাঠে কাজে ব্যস্ত তাই আগামীকাল সকালের পূর্বে কোন সঠিক তথ্য দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।’

ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী অমূল্য কুমার সরকার জানান, ঝড়ের কারণে বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে গেছে। সকাল থেকে মেরামতের কাজ চলছে। বিদুৎ সরবরাহ পুরোপুরি স্বাভাবিক হতে সময় লাগবে।

যশোর ফায়ার সার্ভিস সিভিল ডিফেন্সের সহকারী পরিচালক মামুনুর রশীদ জানান, গতকাল রাতে ঘূর্ণিঝড় রেমালে যশোরে তেমন কোন ক্ষয়ক্ষতি সম্পর্কে আমরা জানতে পারিনি।’

তিনি বলেন, ‘ বিদুৎ লাইনে গাছ পড়ে বা ডাল পড়েছে এমন কোন বড় ঘটনার খবরও পাওয়া যায়নি। তবে সামান্য কয়েক জায়গায় গাছের ডালপালা ভেঙে পড়ে। ‘