শীত মৌসুমের পর টানা এক মাসেরও অধিক সময় সারাদেশের ন্যায় তাপদাহে পুড়েছে যশোর। তীব্র গরমে অতিষ্ঠ সাধারণ মানুষের জল্পনা কল্পনার অবশান ঘটিয়ে অবশেষে স্বস্তির বৃষ্টি নেমেছে যশোরে।
সোমবার (৬মে) বিকেল ৫টা ৪০ মিনিটের দিকে ঝড় হাওয়ার সাথে বৃষ্টিপাত শুরু হয় এ জেলায়, প্রায় আধঘন্টা বর্ষন অব্যহত থাকে। এর আগে এদিন সকাল থেকেই মেঘাচ্ছন্ন ছিলো গোটা শহর। দুপুর গড়িয়ে বিকেল ৪টা থেকে ধীরে ধীরে কালো মেঘে ছেয়ে যায় পুরো আকাশ। এরপর দমকা ঝড় হাওয়ার সাথে শুরু হয় বৃষ্টি। যশোর শহর ছাড়াও বিভিন্ন উপজেলায় একই সময়ে বৃষ্টিপাতে খবর পাওয়া গেছে।
তবে এর আগে গত দুদিন যশোরের তাপমাত্রা এবং গরমের তীব্রতা অনেকটাই কম ছিল। এদিকে খুলনা আবহাওয়া অফিসের তথ্য মতে গত ১৯ এপ্রিল থেকে ৩মে পর্যন্ত যশোরের তাপমাত্রা ছিল ৪০ ডিগ্রির উপরে। এর মধ্যে ৩০ এপ্রিল সারাদেশে মধ্যে তিন দশকের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা যশোরে ৪৩ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়। এছাড়া গত এক মাসে একাধিকবার সারাদেশে মধ্যে যশোরের তাপমাত্রা পারদ সর্বোচ্চ স্থানে ছিল।
এদিকে সোমবার যশোরে আধঘন্টার বৃষ্টিতে অনেকটাই স্বস্তি ফিরেছে সাধারণ মানুষের মধ্যে। মৌসুমের প্রথম কাঙ্ক্ষিত বৃষ্টিতে ভিজেছেন অনেকে। অনেক পথচারীকে বৃষ্টিতে ভিজে আনন্দ উল্লাস করতে দেখা গেছে।
শহরের এমএম আলী সড়কে বৃষ্টিতে ভিজতে দেখা যায় তিন শিক্ষার্থীকে। তাদের মধ্যে সাদিয়া আফরিন নামে এক ছাত্রী বলেন, ‘আজকে বৃষ্টি দেখে মনে হচ্ছে অনেকদিন বৃষ্টি দেখি না। এক ফোঁটা বৃষ্টি গায়ে পড়ায় মনটা আনন্দে ভরে গেল। এটা অন্যরকম একটা অনুভূতি।’
নাসরিন জাহান নামের আরেক ছাত্রী বলেন, ‘অনেকদিন ধরে অপেক্ষায় ছিলাম যে মৌসুমের প্রথম বৃষ্টিতে ভিজবো। আজ কোচিং থেকে ফেরার পথেই বৃষ্টি শুরু হলো। এজন্য বান্ধবীরা সকলে মিলে ভিজতে ভিজতে বাসায় যাচ্ছি।’
সলেমান শেখ নামে এক অর্ধবয়স্ক রিকশাচালক বলেন, ‘অনেকদিন ধরে ৪০ ডিগ্রি, ৪২ ডিগ্রি তাপমাত্রার মধ্যে রিকশা চালিয়েছি। এর মধ্যে অনেকবার গরমে অসুস্থ হয়ে পড়েছি। আজ বৃষ্টি দেখে স্বস্তি পাচ্ছি। গরম অনেকটাই কম। শীতল বাতাসে রিকশা চালাতে সমস্যা হচ্ছে না। আবহাওয়া এমন থাকলে আমাদের মতো মানুষের জন্য একটু সুবিধা হয়।’
শহরের তজবীর হলের পাশে আমির হোসেন নামে এক চা-দোকানী বলেন, ‘এই এক মাসের বেশি সময় ঘরেও শান্তি পাচ্ছিলাম না, বাহিরেও শান্তি পাচ্ছিলাম না। ফ্যানের বাতাসেও বাহিরের গরম টেনে নিয়াসতো। আজকে শান্তির ঘুম হবে।’
যশোর বিমানবন্দর আবহাওয়া অফিস সুত্রে জানা গেছে, সোমবার যশোরে এক মিলিমিটারেরও কম বৃষ্টিপাত হয়। এ সময় বাতাসের গতীবেগ ছিল ঘন্টায় ২৫ কিলোমিটার।