Print

Rupantor Protidin

ঈদকে ঘিরে পর্যটকে মুখর কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত

প্রকাশিত হয়েছে: এপ্রিল ১২, ২০২৪ , ৭:৩৭ অপরাহ্ণ | আপডেট: এপ্রিল ১২, ২০২৪, ৭:৩৭ অপরাহ্ণ

রূপান্তর প্রতিদিন

ঈদকে ঘিরে উৎসবে মেতে উঠেছে কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে আগত হাজারো পর্যটক দর্শনার্থীরা। পর্যটকে মুখর সৈকত এলাকা। তিল ধারনের ঠাই নেই যেন। আবাসিক হোটেল মোটেল রিসোর্ট গুলো শতভাগ বুকিং রয়েছে। পর্যটনমুখী ব্যবসবায়ীদের ধারনা এ বছর ঈদের ছুটিতে রেকর্ড সংখ্যক পর্যটকদের আগমন ঘটেছে।

ঈদ মানে আনন্দ,ঈদ মানে খুশি। ঈদের এই খুশিতে আনন্দ উপভোগ করতে কুয়াকাট সমুদ্র সৈকতে ছুটে এসেছে শিশু কিশোর সহ নানা বয়সী হাজার হাজার পর্যটকরা। ঈদের প্রথমদিন পর্যটক কিছুটা কম থাকলেও দ্বিতীয় দিন থেকে ঢল নেমেছে সমুদ্র সৈকতে। এমন ভীড় থাকবে আগামী ১ সপ্তাহ বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়িরা। আগত পর্যটকদের যেন আনন্দের সীমা নেই। দিনভর সমুদ্রে গোসল,হই হুল্লোড়ে মেতে থাকে। বড়দের পাশাপাশি শিশুদের আনন্দ উম্মাদনা যেন ভিন্ন মাত্রা যোগ করেছে।

কেউ ঘোড়ায় চরে সৈকতে ঘুরে বেড়িয়েছেন, কেউবা বেঞ্চিতে বসে উপভোগ করছেন সমুদ্র ও সমুদ্রের আছড়ে পড়া ঢেউ। আবার কেউ সেল্ফি তুলে কিংবা ক্যামেরায় বন্ধী হযে নিজেকে স্মৃতির পাতায় আবদ্ধ করে রাখছেন।

একদিকে ঈদ অন্যদিকে পহেলা বৈশাখ। তাই বাড়তি ছুটি পেয়েছে পর্যটক দর্শনার্থীরা। এই বাড়তি ছুটি কাটাতে পরিবার পরিজন,বন্ধু বান্ধব নিয়ে সমুদ্রের মুক্ত হাওয়ায় ঘুরে বেড়াতে এবার কুয়াকাটাকেই বেছে নিয়েছেন বেশিরভাগ ভ্রমণ প্রিয় মানুষরা। অনেকেই নতুন বিয়ে করে হানিমুনে কুয়াকাটা এসেছে। আগত পর্যটকদের যেন আনন্দের সীমা নেই। কেনাকাটার পাশাপাশি ঘুরে বেড়িয়েছেন কুয়াকাটার দর্শনীয় স্পটগুলো।
আগত হাজার হাজার পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে পুরো সৈকত এলাকা নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলা হয়েছে। কোথাও কোন অপ্রতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।

কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে ভোলা থেকে আগত পর্যটক পরেশ ও ঊর্মিলা দম্পতি জানিয়েছেন, তারা দুই মাস আগে নতুন বিবাহ করেছেন। বিয়ের পর এই ঈদের ছুটিতে কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে হানিমুনে এসেছে। এখানে এসে আমরা খুবই উপভোগ করেছি। সূর্যোদয় সূর্যাস্তের মত বিরল দৃশ্য অবলোকন করতে পেরে আমারা আবেগে আপ্লূত।
ঢাকা থেকে আগত পর্যটক নিয়াজ আহমেদ চৌধুরী বলেন, কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত পরিচ্ছন্ন ও নিরাপদ সৈকত। এখানকার পরিবেশ প্রতিবেশ আগের চেয়ে আরো সুন্দর হয়েছে। যতই দিন যাচ্ছে সাগরকণ্যার রুপ লাবন্য যেন আরো বৃদ্ধি পাচ্ছে। সূর্যোদয় সূর্যাস্তের মত বিরল দৃশ্য দেখে তারা অভিভূত। নিরাপত্তা ও আতিথিয়েতায় খুশি তারা।
খাবার হোটেল মালিক হুমায়ুন গাজী জানান, অনেক পর্যটক আসায় তাদের খাবার সরবরাহ করতে হিমসিম খেতে হচ্ছে। এরপরও তারা শৃঙ্খলার সাথে ন্যায্য মুল্যে খাবার দিচ্ছেন পর্যটকদের। আকাঙ্ক্ষার চেয়েও ভালো বেচাকেনা হওয়ায় খুশি তারা। রমযানের ক্ষতি পুষিয়ে লাভের মুখ দেখবেন তারা।

কুয়াকাটা আবাসিক হোটেল মোটেল ওনার্স এসোসিয়েশন সাধারণ সম্পাদক এম এ মোতালেব শরীফ বলেন, ঈদ এবং পহেলা বৈশাখ ঘিরে কুয়াকাটায় রেকর্ড সংখ্যক পর্যটকদের আগমন ঘটেছে। আবাসিক হোটেল মোটেল রিসোর্ট গুলো শতভাগ বুকিং রয়েছে। তবে কোন পর্যটককে রুম সংকটে পড়তে হয়নি।

কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট পুলিশ রিজিওনের পুলিশ সুপার মোঃ আবুল কালাম আজাদ জানান, পবিত্র ঈদুল ফিতর ও পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে আগত পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে ট্যুরিস্ট পুলিশ তৎপর রয়েছে। সৈকত এলাকা সিসি ক্যামেরা ধারা নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। দর্শনীয় স্পটগুলোতে নিরাপত্তা চৌকি বসানোর পাশাপাশি সাদা পোশাকে নজরদারি রয়েছে ট্যুরিস্ট পুলিশের।

কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ রবিউল ইসলাম বলেন, বীচ ম্যানেজমেন্ট কমিটি, জেলা প্রশাসন, ট্যুরিস্ট পুলিশ এবং থানা পুলিশ সমুদ্র সৈকতের সৌন্দর্য বর্ধন এবং শৃঙ্খলা রক্ষায় এক যোগে কাজ করছেন। বিগত বছরের চেয়ে এই ঈদে পর্যটকরা নির্বিঘ্নে ঘোরাঘুরি এবং আনন্দ উপভোগ করতে পারছে। খাবার হোটেল, আবাসিক হোটেল থেকে শুরু করে সবকিছুতেই আগের চেয়ে শৃঙ্খলা ফিরে এসেছে। পাশাপাশি ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরাও সেবা দিয়ে আসছে। চল্লিশ জন স্কাউটের রেসকিউ টিম পর্যটক সেবায় সেচ্ছায় সেবা দিয়ে আসছে।