মনিরামপুর হাসপাতালে
যশোরের মনিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের দৌরাত্ম্য বেড়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সপ্তাহে দুদিন কোম্পানির প্রতিনিধিদের চিকিৎসক ভিজিটের সময় বেধে দিলেও তা মানছেন না তাঁরা। সপ্তাহে রবি ও বুধবার দুপুর একটার পর মেডিকেল রিপ্রেজেন্টিটিভদের হাসপাতালে প্রবেশের অনুমিত রয়েছে।
তাঁরা সেটা উপেক্ষা করে প্রতিনিয়ত ১০টার পর হাসপাতালে ঢুকে বহির্বিভাগের প্রধান ফটক ঘিরে চিকিৎসকের দেওয়া রোগীদের ব্যবস্থাপত্রের ছবি তোলেন বলে অভিযোগ।
আজ (শনিবার) সরেজমিন দুপুর ১২টায় মনিরামপুর হাসপাতালের বহির্বিভাগে গিয়ে ফার্মেসির সামনে নারী রোগীদের ওষুধ কাউন্টারে কয়েকজন মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভকে দুই-তিনজন নারী রোগীর টিকিট নিয়ে কাড়াকাড়ি করতে দেখা গেছে। এসময় সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে তাঁদের পরিচয় জানতে চাইলে তাঁরা নিজেদের নাম পরিচয় না দিয়ে সটকে পড়েন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মনিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সদ্য সাবেক প্রধান কর্মকর্তা তন্ময় বিশ্বাস মাসখানেক আগে নতুন কর্মস্থলে যোগ দিয়েছেন। তিনি মনিরামপুরে দায়িত্বে থাকা অবস্থায় মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভদের হাসপাতালে প্রবেশে কঠোর অবস্থানে ছিলেন।
গেল মাসে চিকিৎসক ফাইয়াজ আহমদ ফয়সাল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা হিসেবে মনিরামপুরে যোগ দেন। এরপর থেকে
হাসপাতালে মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভদের অবাদ বিচরণ শুরু হয়েছে।
হাসপাতাল সূত্র বলছে, ওষুধ কোম্পানির লোকজনকে সপ্তাহে রবি ও বুধবার দুই দিন দুপুর একটার পর হাসপাতালে চিকিৎসক ভিজিটের জন্য সময় নির্ধারণ করে দেওয়া আছে। বর্তমানে কোম্পানির প্রতিনিধিরা সেই নিয়ম মানছেন না।
তাদের বারবার নিষেধ করা হলেও তাঁরা তাতে কান না দিয়ে প্রতিনিয়ত বহির্বিভাগের সামনে এসে ছবি তোলার জন্য রোগীদের টিকিট নিয়ে টানাটানি করছেন।
মনিরামপুর হাসপাতালের প্রধান ফটকে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা রেজওয়ান হোসেন বলেন, কোম্পানির লোকদের নির্ধারিত সময় বাদে হাসপাতালে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়। তাঁরা সেটা উপেক্ষা করে রোগী বহনকারী যানবাহন ঢোকানোর ফাঁকে ভিতরে ঢুকে পড়েন।
মনিরামপুর হাসপাতালে ফার্মেসিতে রোগীদের ওষুধ সরবরাহের দায়িত্বে থাকা রাকেশ দত্ত বলেন, বারবার নিষেধ করলেও ওষুধ কোম্পানির লোকজন শোনেন না। আগে তাঁরা প্রধান ফটকের বাইরে দাঁড়িয়ে রোগীদের টিকিটের ছবি নিতেন। এখন সরাসরি ফার্মেসির সামনে এসে ভিড় করছেন।
মনিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ফাইয়াজ আহমদ ফয়সাল মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভদের নিয়ন্ত্রণে নিজের অসহায়ত্বের কথা স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ৫ই আগষ্টের পর কেউ কারও কথা শুনছে না।
কোম্পানির লোকেদের সপ্তাহে রবি ও বুধবার দুপুর একটার পর হাসপাতাল ভিজিটের জন্য সময় বেধে দেওয়া আছে। তাদের ঠেকানো যাচ্ছে না।
ফাইয়াজ আহমদ ফয়সাল বলেন, আমি নতুন যোগদান করেছি। ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের কমিটির নেতাদের ডেকে এই বিষয়ে সতর্ক করা হবে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, রূপান্তর প্রতিদিন এর দায়ভার নেবে না।