ঝিকরগাছায় ইটভাটা বন্ধের প্রতিবাদে
সম্প্রতি মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগ কর্তৃক এক প্রজ্ঞাপনে আগামী ৭মার্চের মধ্যে দেশের সকল অবৈধ ইটভাটা বন্ধের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এই প্রজ্ঞাপনের প্রতিবাদে দেশব্যাপী উপজেলা পর্যায়ে ইটভাটা মালিক-শ্রমিকরা বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে।
একই সাথে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যেমে মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা ও মাননীয় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রনালয়ের উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে।
স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, ২০১৩ সালে ইটভাটা নিয়ন্ত্রণ আইনের ঝিকঝাক ভাটা বৈধ পদ্ধতির উল্লেখ থাকলেও উক্ত আইনের ৮(৩)(ঙ) এবং ৮(৩)(খ) এবং ৮ (৩) (খ) উপধারায় ‘ দূরত্ব নির্দিষ্টকরণের কারণে দেশের কিছু জিকজাক ইটভাটার মালিকগণ ছাড়পত্র ও লাইসেন্স পাচ্ছেন না।
স্মারকলিপিতে অন্যান্য দাবিগুলো যথাক্রমে: ঝিকঝাক ইটভাটা গুলো কোন প্রকার হয়রানি বা মোবাইল কোট পরিচালনা করা যাবে না, কোন ইটভাটা বন্ধ করতে হলে সরকারিভাবে আর্থিক ক্ষতিপূরণ দিয়ে বন্ধ করতে হবে, মাটি কাটার জন্য ডিসির প্রত্যয়নপত্র নেয়ার বিধান বাতিল করতে হবে, কোন ইটভাটা বন্ধ করতে হলে সরকারিভাবে আর্থিক ক্ষতিপূরণ দিয়ে বন্ধ করতে হবে, পরিবেশগত ছাড়পত্র ডিসি লাইসেন্স ফায়ার সার্ভিস লাইসেন্স ট্রেড লাইসেন্স সহ অন্যান্য কাগজপত্র দিয়ে ইসু নবায়নের জন্য কেন্দ্রীয় ঈদ প্রস্তুতকারী মালিক সমিতির প্রত্যয়নপত্র বাধ্যতামূলকভাবে জমা দেয়ার বিধান করার প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়া, ইটভাটাকে শিল্প হিসেবে ঘোষণা করা, ইটভাটা পরিচালনায় দীর্ঘমেয়াদী পূর্ণাঙ্গ নীতিমালা প্রণয়ন করা ইত্যাদি।
উপরোক্ত দাবি সমূহের বিষয়ে কর্তৃপক্ষ ইটভাটা মালিকদের সাথে আলোচনায় না বসলে ঈদের পর ঢাকায় মহাসমাবেশ এবং প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে পদযাত্রা ও স্মারকলিপি প্রদান করার ঘোষণা দিয়েছে।
ঝিকরগাছা উপজেলা ঈদ প্রস্তুতকারী মালিক সমিতির সভাপতি আলহাজ্ব আব্দুর রাজ্জাক স্বাক্ষরিত স্মারকলিপিতে ৭দফা সুনির্দিষ্ট দাবি তুলে ধরা হয়। স্মারকলিপি প্রদানকালে ভাটা মালিক সমিতির সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ইটভাটা বন্ধ হলে উন্নয়ন যেমন বন্ধ হবে তেমনি আমাদের লাখ লাখ শ্রমিক বেকার হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করবে। ভাটা মালিকরা হবেন অপূরণীয় ক্ষতির শিকার। ঝিকরগাছার ১৮টি ইটভাটায় ৬সহস্রাধিক শ্রমিক কর্মরত আছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সালাম বলেন, ইটভাটা বন্ধ হলে লাখ লাখ শ্রমিক বেকার হয়ে পড়বেন এবং বেশিরভাগ ইটভাটা মালিকগণ ব্যাংক ঋণের মাধ্যমে শ্রমিকদের আগাম মজুরি প্রদানের পাশাপাশি ভাটায় লগ্নি করেছেন কোটি টাকা। ফলে,ইটউৎপাদন মওশুম শুরুর মধ্যভাগে ইটভাটা বন্ধ হলে তারা মারাত্মক অর্থনৈতিকক্ষতির সম্মুখীন হবেন।
মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় ঝিকরগাছা উপজেলার ১৮টি ইটভাটার মালিক-শ্রমিক ঝিকরগাছা বিএম হাইস্কুলের মাঠে সমবেত হয়। পরে সেখান থেকে বিক্ষোভ মিছিল সহকারে উপজেলা পরিষদ চত্তরে সমাবেশ করে।
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, উপজেলা ইটভাটা মালিক সমিতির সভাপতি, বিশ্বাস ব্রিকসের প্রোপ্রাইটর আলহাজ্ব মোঃ আব্দুর রাজ্জাক, সাধারণ সম্পাদক ও স্টার ব্রিকসের প্রোপ্রাইটর মোঃ আব্দুস সালাম।
এসময় জয়েন্ট ব্রিকস, নিউ শাপলা ব্রিকস, সুপিয়া ব্রিকস, তাহের ব্রিকস, রানী ব্রিকস, কিং ব্রিকস, মজনু ব্রিকস, আর কে ব্রিকস, নাভার ব্রিকস, সেলিম ব্রিকস, এফ কে ব্রিকস, নিউ টাটা ব্রিকস, হিরা ব্রিকস, গোল্ড ব্রিক্সের মালিক ও সহ¯্রাধিক শ্রমিক প্রতিবাদ মিছিলে অংশ গ্রহণ করেন।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, রূপান্তর প্রতিদিন এর দায়ভার নেবে না।