প্রথম দেখায় মনে হতে পারে এটি একটি শৌচাগার। কিন্তু সেটি নয়। অবিশ্বাস্য হলেও সত্য এটি একটি পাবলিক রাস্তা। প্রতিদিন এই রাস্তায় হাজার হাজার মানুষ চলাচল করেন। আর এই রাস্তায় সুয়ারেজ লাইনের বর্জ্য দিয়ে পরিবেশ নষ্ট করে তুলেছেন আবু বকর নামে এক ব্যক্তি। এলাকাবাসীর একাধিকবার অনুরোধেও তার মন গলেনি। সুয়ারেজ লাইনের বর্জ্য নিষ্কাশন ও লাইনটি ড্রেনে সংযুক্ত না করতে অনুরোধ করেও কোনো ফল পাওয়া যায়নি। তাকে কেউ নিষেধ করলেই পড়তে হয় নানা হুমকির মুখে।
সরজমীনে যেয়ে দেখা যায়, যশোর সদর উপজেলার নোয়াপাড়া ইউনিয়নের শেখাটি আদর্শপাড়ায় সারি সারি বাড়িঘর। রাস্তায় চলাচল কারিদের সকলের নাকে মুখে কাপড়। কারণ অনুসন্ধান করতেই বেরিয়ে আসে নানা তথ্য। আবু বক্কর সরকারি জমিতে টয়লেটের হাউজ নির্মাণ করেছেন। আর সেই বজ্র ফেলছেন সরাসরি ড্রেনে। যাতে করে প্রতিনিয়ত বিপাকে পড়তে হচ্ছে স্থানীয়দের ও স্কুল কলেজে পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের। এ সমস্যা এক দুই দিনের নয় দীর্ঘদিনের। একাধিক মহলে অভিযোগ করেও এর প্রতিকার পায়নি এলাকাবাসী। প্রতিনিয়ত স্বাস্থ্যঝুঁকির সাথে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন মহল্লার একাধিক মানুষ। সব থেকে বেশি স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে শিশু ও বয়স্করা। আর সামান্য বৃষ্টি হলেই দুর্ভোগ জেনো চড়ে বসে মহল্লা বাসীর কাঁধে। রাস্তা জুড়ে আধা কিলোমিটার পর্যন্ত চারদিকে ছড়িয়ে আছে মল আর মলের দুর্গন্ধ।
স্থানীয়রা জানান, ইতিমধ্যে তারা জেলা প্রশাসক ও থানায় অভিযোগ দেবার প্রস্তুতি নিয়েছেন। এলাকায় একাধিকবার স্থানীয় বিষয়টি নিয়ে বসেও এর সমাধান হয়নি। সরকারি জমিতে কি ভাবে হাউজ নির্বান করেছে তা নিয়ে রয়েছে নানা বিতর্ক। মহল্লার প্রচার আছে উপর মহলে টাকা দিয়ে সরকারি জমি নিজ দখলে রেখেছেন। প্রতিদিন ভোর থেকে রাত পর্যন্ত এ রাস্তায় চলাচল করতে মানুষের জীবন উষ্ঠাগত। প্রায় সময় স্কুল পড়ুয়া কোমলমতি শিক্ষার্থীরা রাস্তায় চলাচল করতে যেয়ে পড়ে যেয়ে স্কুল ড্রেস বই খাতা নষ্ট হয়। এলাকাবাসী একাধিক বার অভিযোগ করলেও হাউজ পরিষ্কার করতে অস্বীকার করে আসছে আবু বক্কর। দিনের পর দিন নেন তিনি ঠিক করার জন্য। কিন্তু আজও পর্যন্ত ঠিক হয়নি।
স্থানীয়দের অভিযোগ, এভাবে রাস্তার পাশের ড্রেনে মলের লাইন করে পরিবেশ নষ্ট করা ঠিক নয়। প্রতিনিয়ত তারা বিপাকে পড়ছেন। হামলা-মামলার ভয়ে অনেকে চুপ করে গেছেন। আর যে বাড়ির ময়লা পানি ও মল ফেলা হয় রাস্তায় ওইটি ম্যাসবাড়ি বানিয়েছেন আবু বক্কর। কেউ কিছু বলতে বা অভিযোগ করতে মেসে গেলে তার উপর মেসেবাসীরা আক্রমন ও চরম দুরব্যবহার করেন। আবু বক্কর মহল্লায় বিতর্কিত হিসাবে পরিচিত।
যে কোন উপায় এর থেকে পরিত্তান চান স্থানীয়রা। তারা স্থানীয় চেয়ারম্যান, জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
স্থানীয় রাজু আহমেদ জানান, মহল্লায় বসবাস তাদের জন্য কষ্ট সাধ্য হয়ে উঠেছে। দুর্গন্ধে এলাকার বাতাস ভারি হয়ে উঠেছে। সরকারি জমিতে স্লাব নির্মান করে অন্যকে দুর্ভোগে ফেলা নিয়ম হয়ে দাড়িয়েছে। প্রতিদিন ড্রেনে মল ফেলা হচ্ছে। তাতে করে জীবন প্রায় উষ্ঠাগত। দ্রুত সমস্যার সমাধান দাবি করেছে তিনি।
তিনি আরও জানান, বুধবার বিকালে তার শিশু সন্তান ওই ময়লা পানিতে পড়ে যায়। বিষয়টি আবু বক্করের জানালে এই নিয়ে বাড়াবাড়ি করতে মানা করেন একই সাথে তার নামে বিভিন্ন মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগ করেন।
শেখ রিপন নামে এক স্থানীয় অভিযোগ করেন, তিন মাস আসে আবু বক্কর হাউজের লোংরা পানি রাস্তার পাশের ড্রেনে ছেড়ে দেয়। এতে গন্ধে ৬/৭ দিন এলাকাবাসী বাড়ি ঘর ছাড়া ছিলেন। পরে আবু বক্কর তাদেন ১৫‘শ টাকা দিয়ে কেরোসিন তেল কিনতে বলেন। এলাকাবাসী তেল কিনে ড্রেনে দিয়ে কোন রকম পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। কিন্তু তাতে দোষ খুঁজে বের করে আবু বক্কর। স্থানীয় নেতাদের কাছে অভিযোগ করেন এলাকাবাসী তার কাছ থেকে চাঁদা নিয়ে গেছে। কিন্তু ঘটনাটি সম্পন্ন মিথ্যা। প্রকৃতপক্ষে শতাধিক মহল্লা বাসী গিয়েছিলেন ওই সময়।
প্রতিবেশী জাহেদ নামে একজন বলেন, আমরা বিষয়টি নিয়ে এলাবাসি একাধিকবার বলেছি কিন্ত কোন পরিত্রণ পায়নি। তবে আমরা এলাকাবাসিকে নিয়ে খুব শিঘ্রয় ফের তাকে জানাবো দেখি কি হয়।
এ বিষয়ে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে আবু বক্কার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমার সাথে একজনের গোলযোগ আছে এ কারণে সে কথা বলতে পারে। এলাকার অন্য কেউ এ বিষয়ে অভিযোগ করবে না বলে লাইনটি কেটে দেন তিনি।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, রূপান্তর প্রতিদিন এর দায়ভার নেবে না।