মহেশপুরের কৃষকরা খাদ্য গুদামে ধান বিক্রিতে আগ্রহ হারিয়েছেন দেড় মাসে

আগের সংবাদ

আশাশুনিতে ইটভাটা ও সড়কে অবৈধ দখল রোধে মোবাইল কোর্ট

পরের সংবাদ

ঘুষ নিয়ে বন্দোবস্ত না দিয়ে চলে গেলেন তালার ভূমি কমিশনার

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৩০, ২০২৪ , ৬:৩৪ অপরাহ্ণ আপডেট: ডিসেম্বর ৩০, ২০২৪ , ৬:৩৪ অপরাহ্ণ

পাটকেলঘাটায় ৬০ বছর ধরে অবৈধ দখলে থাকা কয়েক কোটি টাকা মূল্যেমানের ৩৪ বিঘা সরকারি জমি আজও উদ্ধার করতে পারেনি উপজেলা প্রশাসন। অবৈধ দখলদাররা সংঘবদ্ধ হয়ে প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে দীর্ঘদিন ধরে জোরপূর্বক দখল করে খাচ্ছে।

এ খবরটি ২০ নভেম্বর, রূপান্তর প্রতিদিন পত্রিকায় প্রকাশিত হওয়ার পর সহকারী কমিশনার (ভূমি) আবদুল্লাহ আল আমিন দখলদারের ডেকে ভয়ভীতি দেখিয়ে কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। খুলনা-সাতক্ষীরা মহাসড়ক সংলগ্ন মির্জাপুর বাজারের পাশে ১১.২৬ একর (প্রায় ৩৪ বিঘা) সরকারি খাস জমি উদ্ধার করে উপজেলা প্রশাসন।

গত ২৩ এপ্রিল তৎকালীন তালা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আরাফাত হোসেনের নেতৃত্বে উপজেলা ভূমি অফিস পাটকেলঘাটা থানা পুলিশর সহযোগিতায় এসব জমি উদ্ধার করেন। সূত্র জানায়, ৩০ কোটি টাকা মূল্যমানের জায়গাটি স্থানীয় একটি চক্র ৫০/৬০ বছর ধরে অবৈধভাবে দখল করে ভোগ করে আসছিল।

বিষয়টি তৎকালীন তালা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আরাফাত হোসেনের নজরে আসায় অবৈধ দখলে থাকা এই বিপুল পরিমাণ খাস জায়গা উদ্ধার করার উদ্যোগ নেন। পরে তিনি বিষয়টি সাতক্ষীরার সাবেক জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির এবং উপজেলার প্রাক্তন নির্বাহী অফিসার আফিয়া শারমিনকে অবহিত করলে তারা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কে এ বিপুল পরিমাণ সরকারি খাস জমি উদ্ধার করার জন্যে নির্দেশনা প্রদান করেন।

ভূমি অফিস সূত্র জানায়, ১৯৬০ থেকে ১৯৬২ সালের মধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে উক্ত জমি অধিগ্রহণ করা হয়। অধিগ্রহণের পর থেকে অবৈধ দখলদাররা উক্ত জমি দখল করে রেখেছিল। বিগত সরকারের শেষ দিকে এক অভিযানের মাধ্যমে দীর্ঘদিন অবৈধ দখলে থাকা ১১.২৬ একর জমির পুরোটাই উদ্ধার করা হয়। উদ্ধার হওয়া জায়গাটিতে অনুপ্রবেশ ঠেকাতে লাল ফ্লাগ দিয়ে যায়গাটি চিহ্নিত করা হয়েছিল। এরপরও যদি অবৈধভাবে কেউ এ জায়গায় প্রবেশ বা দখল করার চেষ্টা করে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ারও কথা বলা হয়েছিলো।

কিন্তু প্রশাসনের সেই কথার তোয়াক্কা না করে দখলদাররা তাদের জমি আবার দখল করে নেয়। স্থানীয়রা বলেন, উপজেলা পরিষদের সাবেক প্রভাবশালী চেয়ারম্যান ঘোষ সনৎ কুমারের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় সাধন ঘোষ, মোফাজ্জল চৌকিদার, অপূর্ব ঘোষ, আমজেদ আলী, দিনেশ ঘোষ সহ ২৫-৩০ জনের একটি সংঘবদ্ধ চক্র দীর্ঘদিন যাবত অবৈধ ভাবে সরকারি এই উচ্চ মূল্যের খাস জমি ভোগদখল করে আসছে। সেখানে বিভিন্ন ফসল চাষাবাদ করে খাচ্ছে তারা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক অবৈধ দখলদার বলেন, আমাদের পৈতৃক সম্পত্তি বিধায় দখল করে খাচ্ছি। আর সরকার চাইলে আমরা ছেড়ে দেবো। তবে অনেকে ইতিমধ্যে বন্দোবস্ত নেওয়ার জন্য ভূমি অফিসে আবেদন করেছেন। তাদের মধ্যে কেউ কেউ সদ্য বিদায়ী সহকারী কমিশনার (ভূমি) আবদুল্লাহ আল আমিনের কাছে দেনদরবার করেছে। আবার কেউ মোটা টাকা উৎকোচ দিয়ে তাদের নামে বন্দোবস্ত নেওয়ার চেষ্টা তদবির চালিয়েছে। তবে কেউ কারো নামে বন্দোবস্ত পেয়েছে কিনা সেটা জানা যায়নি। তবে তদন্ত করলে থলের বিড়াল বেরিয়ে আসবে বলে জানান তারা। এ ব্যপারে তালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মোঃ রাসেল বলেন, আমি সহকারী কমিশনার (ভূমি) কে বলেছিলাম, অবৈধ দখলদার মুক্ত করে পূণরায় জায়গাটি উদ্ধার করতে।

এছাড়া কৃষি খাস জমি আইন অনুযায়ী যারা প্রকৃত দাবীদার ও অসহায় ভূমিহীনদেরকে বন্দোবস্তো দেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছি। কিন্তু তিনি কি কাজ করেছেন সেটা আমাকে অবহিত করেননি। তিনি দ্রুত সরেজমিন পরিদর্শন করবেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, রূপান্তর প্রতিদিন এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়