চট্টগ্রামে উচ্ছেদের নামে চলে ঘুস বাণিজ্য

আগের সংবাদ

চট্টগ্রামে লবণের উৎপাদন বাড়লেও দাম পাচ্ছেন না কৃষক

পরের সংবাদ

চালের দাম লাগামহীন

নতুন ধানের মৌসুমেও রেকর্ড এক সপ্তাহে দাম বস্তায় বেড়েছে সর্বোচ্চ ৫শত টাকা

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২১, ২০২৪ , ৫:২৩ অপরাহ্ণ আপডেট: ডিসেম্বর ২১, ২০২৪ , ৫:২৩ অপরাহ্ণ

কৃষকের ঘরে উঠেছে আমন মৌসুমের নতুন ধান। ধানের এই ভরা মৌসুমেও চালের রেকর্ড দাম বৃদ্ধি হয়েছে। সাধারণত বাজারে নতুন ধান আসা শুরু হলে চালের বাজার কমে যায়।

এবার উল্টো, গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে ৫০ কেজি ওজনের বস্তার দাম সর্বোচ্চ ৫০০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। চাল ব্যবসায়ীরা বলছেন, ভারত থেকে সিদ্ধ চাল আমদানি মোটামুটি স্বাভাবিক থাকলেও আতপ চাল আমদানি একদম কমে গেছে। এর ফলে আতপ চালের দামে প্রভাব পড়েছে।

এছাড়া মিল মালিকরা প্রচুর পরিমাণ ধান মজুদ করছেন, এর ফলে ধানের কৃত্রিম সংকট তৈরি হয়েছে। সংকটের কারণে ধানের দামও অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে। এতে বাজারে বেড়েছে চালের দাম। অন্যদিকে অনেক শিল্পগ্রুপ ধান-চাল মজুদ করে বাহারি মোড়কে বাজারজাত করছে। এটি বাজার বাড়ার অন্যতম
কারণ। ভোক্তারা বলছেন, ধান-চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনের নজরদারির ঘাটতি রয়েছে।

এ কারণে চালের বাজার ক্রমেই লাগামহীন হয়ে পড়ছে। গতকাল নগরীর দুই বৃহৎ চালের আড়ত চাক্তাইয়ের চালপট্টি ও পাহাড়তলীতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে সব ধরনের চালের দাম বস্তায় (৫০কেজি) সর্বোচ্চ ৫০০ টাকা বেড়ে গেছে। এর মধ্যে জিরাশাইল সিদ্ধ, নাজিরশাইল সিদ্ধ, মিনিকেট সিদ্ধ এবং কাটারীভোগ সিদ্ধ, স্বর্ণা সিদ্ধ, বেতি আতপ, পাইজাম আতপ, মিনিকেট আতপ, কাটারীভোগ আতপ ও মোটা সিদ্ধ চাল অন্যতম।

এসব চালের সিংহভাগ আসে উত্তরাঞ্চলের দিনাজপুর, কুষ্টিয়া, ময়মনসিংহ, বগুড়া, মেহেরপুর এবং কিশোরগঞ্জের আশুগঞ্জ থেকে। চালের আড়তদাররা জানান, বর্তমানে জিরাশাইল সিদ্ধ বস্তায় ৪০০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার ৮০০ টাকায়। এছাড়া মিনিকেট সিদ্ধ ৪০০ টাকা বেড়ে ৩ হাজার ২০০ টাকা, পাইজাম সিদ্ধ বস্তায় ২০০ টাকা বেড়ে ২ হাজার ৯৫০ টাকা, কাটারীভোগ সিদ্ধ ৪০০ টাকা বেড়ে গিয়ে ৩ হাজার ৯০০ টাকা, কাটারীভোগ আতপ বস্তা প্রতি ৫০০ টাকা বেড়ে গিয়ে বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার ৯০০ টাকা, মিনিকেট আতপ ২০০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার ৪০০ টাকা, নাজিরশাইল সিদ্ধ ৩০০ টাকা বেড়ে ৪ হাজার টাকা, স্বর্ণা সিদ্ধ ২০০ টাকা বেড়ে ২ হাজার ৬০০ টাকা, বেতি আতপ ১০০ টাকা বেড়ে ৩ হাজার ১০০ টাকা এবং মোটা সিদ্ধ বস্তায় ২০০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৩৫০ টাকায়।

চট্টগ্রাম রাইচ মিল মালিক সমিতির সভাপতি মো. ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ধানের বাজার বাড়তি। তাই চালের দাম বাড়তি। কৃষকের ঘরে নতুন ধান উঠেছে, এটি ঠিক তবে বাজারে নতুন ধানের তেমন চাহিদা নেই। এছাড়া ভারত থেকে কম দামি আতপ চাল আসতো। সেটি এখন পর্যাপ্ত পরিমাণে আসছে না। এছাড়া বেড়েছে ডলারের দামও। সব মিলিয়ে বাজারে কিছুটা সংকট তৈরি হয়েছে। দেশি চালের দাম বাড়ার একমাত্র কারণ ধানের দাম বাড়তি। চট্টগ্রাম রাইচ মিল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. রফিক উল্লাহ বলেন, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বন্যার কারণে ধানের ফলন নষ্ট হয়েছে। এতে ধানের উৎপাদন কম হয়েছে। তাই বাজারে ধানের সরবরাহ সংকট তৈরি হয়েছে।

এটি চালের বাজারে প্রভাব ফেলেছে। পাহাড়তলী বণিক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এসএম নিজাম উদ্দিন বলেন, চালের সরবরাহ ঘাটতি না থাকলেও গত এক সপ্তাহ ধরে চালের বাজার ঊর্ধ্বমুখী রয়েছে। চালের মিল মালিকরা আমাদের জানিয়েছেন ধানের দাম বেড়েছে, এর প্রভাব পড়েছে চালের বাজারে। আসলে উত্তরবঙ্গের মিল মালিকরা ধান মজুদ করছেন। কতিপয় মিল মালিকের সিন্ডিকেটের কারণে চালের বাজার অস্থির হয়ে উঠেছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, রূপান্তর প্রতিদিন এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়