সাতক্ষীরার শ্যামনগরে দু’ভাগে বিভক্ত হয়ে মহান বিজয় দিবস পালন করেছে বিএনপি। উভয় পক্ষই উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের ব্যানারে মহান বিজয়ের ৫৩তম দিবসটি উদাযাপনে ব্যাপক লোক সমাগম করে। সকাল নয়টায় উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদকের নেতৃত্বে প্রায় দুই সতাধিক কমী সমর্থক উপজেলার গোপালপুরস্থ শহীদ মিনারে পুষ্পার্ঘ্য অর্পন করেন।
এসময় সাতক্ষীরা জেলা বিএনপির আহবায়ক সাবেক ছাত্রনেতা এ্যাডঃ সৈয়দ ইফতেখার আলী ছাড়াও যুক্তরাজ্য বিএনপির স্বনির্ভর বিষয়ক সম্পাদক এম মনিরুজ্জামান বিজয় র্যালীতে অংশ নেন।
উপজেলা বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি লিয়াকত আলী, ঈশরীপুর সভাপতি এ্যাডঃ ইব্রাহিম খলিল, মুন্সিগঞ্জ বিএনপির সভাপতি আবু জাবের মোড়ল, বুড়িগোয়ালীনি ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি এবং সম্পাদক আব্দুল গফুর ও আমির আলী, বাদঘাটা বিএনপির আশরাফ আলী ও ফারুক হোসেনসহ অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের অসংখ্য নেতা উক্ত র্যালীতে যোগ দেয়।
এছাড়া উপজেলা যুবদল সভাপতি সফিকুল ইসলাম দুলু, কৃষকদল সভাপতি এম নুরুজ্জামান, শ্রমিকদল সাধারন সম্পাদক সিরাজুল ইসলামসহ তাদের কর্মী সমর্থকরা একই পক্ষের সাথে শহীদ মিনারে পুষ্পার্ঘ্য অর্পন করেন।
এদিকে বেলা সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল ওয়াহেদের নেতৃত্বে পৃথক ব্যানারে আরও কিছু নেতাকর্মী আলাদাভাবে শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এসময় বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সদস্য কাজী আলাউদ্দীনসহ ছাত্রদল নেতৃবৃন্দ উক্ত বিজয় র্যালীতে অংশ নেয়।
উপজেলা বিএনপির আশেক-ই ইলাহী মুন্না ছাড়াও উপজেলা বিএনপির জহুরুল হক আপ্পু, আব্দুর রশিদ, রমজাননগর বিএনপির সভাপতি শহীদুজ্জামান উক্ত র্যালীতে যোগ দেয়।
এদিকে মহান মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব দানকারী দেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক সংগঠন আ’লীগের দেখা মেলেনি এবারের বিজয় দিবসে।
দেশের সবচেয়ে পুরাতন রাজনৈতিক সংগঠনের বিজয় দিবসের কর্মসুচিতে অনুপস্থিতিতে কিছুটা হলেও জৌলুষ হারায় ছাত্র-জনতার বৈষম্য বিরোধী সফল আন্দোল পরবর্তী প্রথম বিজয় দিবসের অনুষ্ঠান।
সরেজমিন পরিদর্শনসহ স্থানীয় বিভিন্ন মাধ্যমের সাথে কথা বলে জানা যায় পুষ্পস্তবক অর্পনসহ বিজয় মেলা কোন অনুষ্ঠানে দেখা মেলেনি আ’লীগের। তবে দলীয় ব্যানারে অনুপস্থিত হলেও তৃনমুল পর্যায়ের পিছের সারির মুষ্টিমেয় নেতাকে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে আয়োজিত বিজয় দিবসের পতাকা উত্তোলন কর্মসুচিতে দেখা যায়।
এবিষয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা নজরুল ইসলাম জানান দেশকে এগিয়ে নিতে হলে সবার অংশগ্রহন দরকার। তবে কেউ কোন অন্যায় করলে তার প্রাপ্য সাজা তাকে গ্রহন করতে হবে। স্বাধীনতা যুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী দলের বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে অনুপস্থিতির দায় দলীয় নেতাদের বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
এদিকে উপজেলা জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থা (জাসাস) এর নেতৃবৃন্দ ৫৩ তম বিজয় দিবসে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা করে। সকাল সাড়ে নয়টার দিকে উপজেলা সদরের টার্মিনালস্থ কার্যালয় থেকে বের হয়ে প্রায় চার শতাধিক নেতকর্মীর র্যালী বাসস্ট্যান্ড হয়ে গোপালপুর শহীদ মিনারে পৌছে পুষ্পস্তবক অর্পন করে।
উপজেলা জাসাস এর আহবায়ক জিএ আব্দুল করিমের নেতৃত্বে র্যালীতে সদস্য সচিব বাবু ছাড়াও যুগ্ম-আহবায়ক জাহিদ হোসেন, নুর হোসেন, প্রমথ মহালদার, বাপ্পী মিস্ত্রি ছাড়াও উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে আগত নেতৃবৃন্দ অংশ নেয়। সকাল সাড়ে আটটার আগে সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপজেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এসে টার্মিনালাস্থ কার্যালয়ে জড়ো হয়।
উপজেলা বিএনপি দু’ভাগে বিভক্ত হয়ে বিজয় দিবস পালন করায় সর্বত্র দলীয় ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন হলেও স্বতন্ত্রভাবে জাসাস এর বিজয় দিবস উদযাপনে নেতৃবৃন্দকে সকলে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
এদিকে ৫৩তম বিজয় দিবস উপলক্ষে শ্যামনগর উপজেলা জামায়াত ইসলামী নেতাকর্মীরা শহীদ মিনারে পুষ্পার্ঘ্য অর্পন করেন।
সংগঠনের কেন্দ্রীয় সুরা কমিটির সদস্য সাবেক এমপি বীর মুক্তিযোদ্ধা গাজী নজরুল ইসলামসহ উপজেলা জামায়াত আমির মাওলানা আব্দুর রহমান প্রায় চার হাজার কর্মী সমর্থকদের নিয়ে গোপালপুরস্থ শহীদ মিনারে যান। সবার আগে সকাল আটটার দিকে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা সড়কের দলীয় কার্যালয় থেকে শুরু হয়ে শোভাযাত্রাটি শহীদ মিনার ঘুরে পুনরায় দলীয় কার্যালয়ে ফিরে আসে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, রূপান্তর প্রতিদিন এর দায়ভার নেবে না।