চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ার গুমাই বিল মুখরিত হয়ে উঠেছে পাখির আগমনে

আগের সংবাদ

ইসকনের ৫৪ ভক্তকে বেনাপোল ইমিগ্রেশন থেকে ফেরত

পরের সংবাদ

নাজিম-মহিউদ্দিন; নাকি মহসিন-মঞ্জু

নতুন নেতৃত্বে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপি!

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১, ২০২৪ , ৬:৪৪ অপরাহ্ণ আপডেট: ডিসেম্বর ১, ২০২৪ , ৬:৪৪ অপরাহ্ণ

চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্ধসঢ়;বায়ক কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণার প্রায় দেড় মাস পর নতুন কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হতে যাচ্ছে। দলে নতুন নেতৃত্ব নিয়ে নানা গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে, যা রাজনৈতিক মহলে জোরালো আলোচনা সৃষ্টি করেছে। নতুন নেতৃত্বের ভবিষ্যৎ প্রেক্ষাপটে, দলের তৃণমূল থেকে শুরু করে কেন্দ্র পর্যন্ত নেতাকর্মীদের মধ্যে চলছে তুমুল আলোচনা বিনিময়। তরুণ নেতৃত্বের সম্ভাবনা এবং দৃষ্টিভঙ্গি বিএনপির জন্য গুরুত্বপূর্ণ এই নতুন কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া একদিকে যেমন দলের অভ্যন্তরীণ পুনর্গঠন এবং তারণ্যের উত্থানের দিকে নির্দেশ করছে, তেমনি আবার তার সাথে রয়েছে একদিকে পুরনো নেতৃত্বের অভিজ্ঞতা ও রাজনৈতিক প্রজ্ঞা। সামাজিক মাধ্যম থেকে শুরু করে দলীয় শীর্ষ নেতাদের কাছে খবর এসেছে যে, শিগগিরই একটি তরুণ নেতৃত্ব নিয়ে কমিটি গঠন করা হবে, যেখানে বিতর্কিত নেতা কিংবা দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত কেউ স্থান পাবেন না। দলের পরিস্কার অবস্থান অনুযায়ী, তারুণ্য নির্ভর নেতৃত্বের দিকে সরে আসা হচ্ছে, যা দলের ভবিষ্যত রাজনীতিকে শক্তিশালী করতে সহায়ক হবে। নেতৃত্বের দৌড়ে এগিয়ে যারা নতুন কমিটি গঠনের দৌড়ে বেশ কিছু নাম সামনে উঠে এসেছে।

সবচেয়ে আলোচিত নামগুলো হলো:
সাবেক চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট নাজিম উদ্দিন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট ইফতেখার হোসেন চৌধুরী মহসিন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক শেখ মো. মহিউদ্দিন এবং এম মঞ্জুর উদ্দিন চৌধুরী। এগিয়ে থাকা এই নেতারা দলীয় হাইকমান্ডের কাছে তাঁদের প্রভাব বিস্তার করতে সক্ষম হয়েছেন। তবে, শেষ পর্যন্ত কাদের ওপর ভরসা রাখবে দল, তা নিয়ে এখনও কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা হয়নি।

নেতৃত্বের এই দৌঁড়ে নাম আসা আরও কয়েকটি উল্লেখযোগ্য নেতার মধ্যে রয়েছেন:
সাবেক সংসদ সদস্য গাজী মোহাম্মদ শাহজাহান জুয়েল, সাবেক সংসদ সদস্য সরওয়ার জামাল নিজাম, সাবেক সহ-সভাপতি আলহাজ্ব ইদ্রিস মিয়া, সাবেক যুগ্ম আহ্ধসঢ়;বায়ক আলহাজ্ব আলী আব্বাস, পটিয়া উপজেলা বিএনপির আহ্ধসঢ়;বায়ক এনামুল হক এনাম, সাবেক ছাত্রদল নেতা শাখাওয়াত জামান দুলাল, সাবেক যুগ্ম সম্পাদক কামরুল ইসলাম হোছাইনী, জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্ধসঢ়;বায়ক লেয়াকত আলী, সাবেক যুগ্ম সম্পাদক আসহাব উদ্দিন চৌধুরী, বিলুপ্ত কমিটির সদস্য মজিবুর রহমান, আনোয়ারা উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব লায়ন মো. হেলাল উদ্দিন, জেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম নেছার, প্রয়াত সাবেক এমপি ও মন্ত্রী জাফরুল ইসলাম চৌধুরীর ছেলে মিশকাতুল ইসলাম চৌধুরী পাপ্পা, সাবেক যুগ্ম সম্পাদক জিয়াউদ্দিন চৌধুরী আশফাক, দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির আনছার, আনোয়ারা উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব লায়ন মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন, যুগ্ম আহ্ধসঢ়;বায়ক এম মঞ্জুর উদ্দিন চৌধুরী এবং যুগ্ম আহ্ধসঢ়;বায়ক মোস্তাফিজুর রহমান প্রমুখ।

রাজনৈতিক পরিপ্রেক্ষিত এবং দলের তৃণমূলের প্রত্যাশা দলের নেতা-কর্মীরা বর্তমানে নানা দিক থেকে নেতৃত্বের কাঠামো
পুনর্গঠন নিয়ে আলোচনা করছেন। দলের তৃণমূল নেতাদের চাওয়া, এমন কিছু নেতাকে কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করা হোক, যারা দলের প্রতি সৎ, ত্যাগী এবং দক্ষ।

দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক শেখ মো. মহিউদ্দিন বলেন, “আমাদের দল এমন নেতা চায় যাঁরা ছাত্রনেতৃত্ব থেকে উঠে আসা এবং ১/১১ এর সময় থেকে আজ পর্যন্ত দলের জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন।”

দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বদরুল খায়ের চৌধুরী বলেন, “দলীয় নেতারা এমন নেতা চান যারা কর্মী বান্ধব এবং দলের প্রতি দায়বদ্ধ।” এছাড়া, ব্যবসায়ী নেতা মোস্তাফিজুর রহমান জানিয়েছেন, “আমি দলের দুঃসময়ে কখনো মাঠ ছাড়িনি এবং ভবিষ্যতেও থাকব। তবে দলের হাইকমান্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, যোগ্য নেতাকে নেতৃত্বে আনা হবে।”

দলের পরিক্ষিত নেতাদের প্রতি আস্থা দক্ষিণ জেলা বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিনও জানিয়েছেন, “দক্ষিণ চট্টগ্রামে এমন নেতাদেরই কমিটিতে আনা হবে যারা দলের পরীক্ষিত, ত্যাগী, এবং যারা দলের প্রতি নিষ্ঠাবান। এমন নেতাদের নেতৃত্বে এনে তৃণমূলের আস্থা অর্জন করা হবে।”

দলের ঐতিহ্য এবং ইতিহাস চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির ইতিহাস বেশ পুরনো এবং রঙিন। ২০০৯ সালে বিএনপির সম্মেলনে গঠিত কমিটি ছিল দলটির একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। এই সময়ে জাফরুল ইসলাম চৌধুরীকে সভাপতি ও শেখ মো. মহিউদ্দিনকে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করা হয়। পরে ২০১১ সালে কমিটি পুনর্গঠন করা হয় এবং আবারো শীর্ষ নেতৃত্বে পরিবর্তন আসে। তবে, দীর্ঘ আট বছর পাঁচ মাস পর ২০১৯ সালে কমিটি ভেঙে দেয়া হয়, যার পরবর্তী সময়ে কয়েকটি পরিবর্তন ঘটেছে। এবারের কমিটির নেতৃত্বের দিকে নজর রেখে তৃণমূল নেতাকর্মীরা তাঁদের মতামত জানাচ্ছেন এবং দলের পরবর্তী পদক্ষেপের দিকে দৃষ্টি রেখেছেন।

শেষ কথা:
কী অপেক্ষা করছে ভবিষ্যতে? চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির নেতৃত্বে আসন্ন পরিবর্তন দলটির জন্য একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে পারে। ভবিষ্যতের রাজনীতি, দলের সুসংহতকরণ এবং নির্বাচনী প্রস্তুুতির ক্ষেত্রে এই নেতৃত্ব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। এখনকার মতো দলের নেতারা সবাই এই সিদ্ধান্ত হণের প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করছেন, এবং শিগগিরই রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন নেতৃত্বের উপস্থিতি সবাইকে চমকিত করবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, রূপান্তর প্রতিদিন এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়