আয়ের চেয়ে ব্যয় বেশি
চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগ সরকারের মেগা প্রকল্প কর্ণফুলী টানেল মুখ থুবড়ে পড়েছে। আয়ের তুলনায় এই প্রকল্পের ব্যয় দৈনিক ২৫ লাখ টাকার বেশি। পরিকল্পনা ছাড়া বাস্তবায়নের ফলে প্রকল্পটি লাভের মুখ দেখছে না, বলছেন বিশেষজ্ঞরা। আর সাধারণ মানুষ বলছে, এটি নিছকই ঘুরে বেড়ানোর একটি প্রকল্প। উদ্বোধনের ১১ মাসেও প্রত্যাশিত যানবাহন চলাচল এবং আয় হচ্ছে না চট্টগ্রামের কর্ণফুলী টানেলে। উল্টো আয়ের চেয়ে রক্ষণাবেক্ষণের খরচ হচ্ছে বেশি। যাকে লোক দেখানো বলছেন সাধারণ মানুষ।
সাধারণ মানুষের ভাষ্য, এখন তো এই টানেল ব্যবহার করে অনেক কম গাড়ি যাতায়াত করছে। কিন্তু এটি রক্ষণাবেক্ষণে ব্যয় হচ্ছে অনেক বেশি।সেতু কর্তৃপক্ষের হিসাবে, এখন গড়ে দিনে সাড়ে চার হাজার যানবাহন চলাচল করেছে। গত মাসে চলাচল করেছে ৮৫ হাজারের মতো। অথচ বলা হয়েছিল, এর অন্তত চার গুণ বেশি যানবাহন চলবে এই টানেলে। টোল বাবদ দৈনিক গড়ে আয় হচ্ছে প্রায় ১২ লাখ টাকা। কিন্তু রক্ষণাবেক্ষণে খরচ দিনে সাড়ে ৩৭ লাখ টাকা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পুরো প্রকল্পটি নির্মাণে ছিল না পরিকল্পনা।
চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক শাহজালাল মিশুক বলেন, কর্ণফুলীর সঙ্গে আনোয়ারার যে কানেক্টিভিটি বা ওই শহরগুলোকে যদি এই প্রকল্পের আওতায় আনা যায় তাহলে এই টানেল নির্মাণের বিষয়টি এখন যতটা লোকসানের মনে হচ্ছে পরবর্তীতে এটি লাভজনক হয়ে উঠবে। শহর থেকে অতিরিক্ত টোল দিয়ে কর্নফুলী নদী পার হয়ে প্রত্যাশিত গন্তব্যে যাওয়ার সুযোগ নেই। এটিকে বিলাসিতা উল্লেখ করে অর্থের অপচয় ও লুটপাটের প্রকল্প বলছেন বিশেষজ্ঞরা।
যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ সুভাষ বড়ুয়া বলেন, এর উপকারিতা যতটুকু আছে, তার চেয়ে রক্ষণাবেক্ষণ ও নিরাপত্তাকর্মীদের বেতনসহ ব্যয় অনেক বেশি। কর্ণফুলী নদীর তলদেশে তিন দশমিক তিন দুই কিলোমিটার দীর্ঘ টানেলটি নির্মাণে ব্যয় হয় প্রায় ১১ হাজার কোটি টাকা।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, রূপান্তর প্রতিদিন এর দায়ভার নেবে না।