বেনাপোলে ফেন্সিডিলসহ মাদক কারবারি আটক

আগের সংবাদ

মহেশপুরে দখলকৃত খাল পুনরুদ্ধার ও খননের দাবীতে কৃষকদের মানববন্ধন

পরের সংবাদ

খুলনা সিভিল সার্জনের বিরুদ্ধে

প্রশিক্ষনের ৪ লাখ টাকা ভাগা ভাগির অভিযোগ

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১০, ২০২৪ , ৬:৩৪ অপরাহ্ণ আপডেট: সেপ্টেম্বর ১০, ২০২৪ , ৬:৩৪ অপরাহ্ণ

এইচপিভি টিকাদান ক্যাম্পেইন দুই গ্রুপের ৪ দিনের প্রক্ষিণ না করে মাত্র ৩ ঘন্টায় শেষ করেছে খুলনা সিভিল সার্জন অফিস। এই প্রশিক্ষণের খরচ বাদ ৪ লাখ টাকা ভাগা ভাগি করে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে সিভিল সার্জন ডা. সেখ সফিকুল ইলামের বিরুদ্ধে। বিষয়টি সত্যতা স্বীকার করেছেন ৯ উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কয়েকজন স্বাস্থ্য কর্মকর্তা। তবে খুলনা বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক বলছেন, প্রশিক্ষণের বিষয়ে কিছুই জানেননা তিনি।

সিভিল সার্জন অফিসের দপ্তারাদেশ সূত্রে জানাযায়, সুষ্ঠ পরিকল্পনা ও সঠিক প্রশিক্ষণে “ এইচপিভি টিকাদান ক্যাম্পেইন-২৪ এর কার্যক্রম সফলতা নির্ভর করছে। এজন্য প্রশিক্ষণের ধারাবাহিকতায় ইপিআই কার্যক্রমে “এইচপিভি টিকাদান ক্যাম্পেইন-২৪ সফল করতে জেলা, উপজেলা এবং পৌরসভা পর্যায়ে প্রশিক্ষক প্রশিক্ষণ আয়োজনের উদ্দোগ গ্রহন করা হয়েছে। তদপ্রেক্ষিতে জেলা পর্যায়ে “এইচপিভি টিকাদান ক্যাম্পেইন-২৪” বিষয়ের উপর ২৭-২৮ আগষ্ট/২৪ ও ২৯-৩১ আগষ্ট (২টি ব্যাচে) সকাল ৯টা থেকে নগরীর শামছুর রহমান রোডস্থ স্কুল হেলথ ক্লিনিকের কনফারেন্স রুমে প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হবে।

জেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে উপ-পরিচালক, সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে মেডিকেল অফিসার, সিনিয়র স্বাস্থ্য শিক্ষা কর্মকর্তা, জেলা ইপিআই সুপাররিনটেনডেন্ট, জেলা স্বাস্থ্য তত্ত্বাবধায়ক, জেলা পাবলিক হেলথ নার্স, জেলা স্যানিটারি ইন্সপেক্টর, কোল্ড চেইন টেকনিশিয়ন, পরিসংখ্যানবিদ ও স্টোর কিপার (ইপিআই), ৯ উপজেলার ৯ জন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ও ৯ জন মেডিকেল অফিসার সহ ২৮ জন প্রথম ব্যাচে ২৭ ও ২৮ আগষ্ট সকাল ৯টা হতে ২দিন এ প্রশিক্ষণ নিবেন ।

অন্যদিকে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল (সদর) হাসপাতালের মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (ইপিআই), ৯ উপজেলার ৯ জন পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা, ৯ জন মেডিকেল অফিসার ও মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (ইপিআই) সহ ২৮ জন দ্বিতীয় ব্যাচে ২৯ ও ৩১ আগষ্ট সকাল ৯টা হতে ২দিন এ প্রশিক্ষণে নিবেন । দুই ব্যাচে ৫৬ জন এই প্রশিক্ষনে অংশ গ্রহন করা জন্য খুলনা সিভিল সার্জন ডা. শেখ সফিকুল ইসলাম স্বাক্ষরিত একটি দপ্তারাদেশ দেয়া হয়। সেই অনুযায়ী স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয় , স্বাস্থ্য মহাপরিচালক সহ ১৬ দপ্তরে পত্র প্রেরণ করা হয়।

এইচপিভি টিকাদান ক্যাম্পেইনের পৃথক দুই ব্যাচের ৪ দিনের এই প্রশিক্ষণ সম্পন্ন না করে মাত্র ৩ ঘন্টায় শেষ করা হয় এ প্রশিক্ষণ। কাগজ কলমে ৪ দিন থাকলেও প্রশিক্ষণে গ্রহনকারী ৫৬ জনকে ২৭ আগস্ট সিভিল সার্জন কার্যালয়ে ডাকা হয় । ওই দিন সকাল ৯টায় নগরীর শামছুর রহমান রোডস্থ স্কুল হেলথ ক্লিনিকের কনফারেন্স রুমে ৯ উপজেলার মাসিক মিটিং শুরু হয়। মিটিং শেষ হওয়ার পর পর দুপুর ১২টায় প্রশিক্ষণে গ্রহনকারী ৫৬ জনকে নিয়ে এইচপিভি টিকাদান ক্যাম্পেইনের প্রশিক্ষন কর্যক্রম শুরু হয়ে দুপুর ৩টায় শেষ হয়। এই প্রশিক্ষণের খরচ বাদ ৪ লাখ টাকা ভাগা ভাগি করে দেয়া হয়ে বিষয়টি ভাউচার করার সময় ফাস হয়ে যায়। এ খবরটি ছড়িয়ে পড়লে সিভিল সার্জন অফিসে কর্মরতদের মধ্যে চাপা ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। তারা চাকরী হারানোর ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায়না। এ বিষয়টি তারা যথা যথ ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছেন।

প্রশিক্ষনে অংশ গ্রহনকারী ৯ উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কয়েকজন স্বাস্থ্য কর্মকর্তা জানান, উপজেলা থেকে আসা নানা সমস্যা, সময়ও চলে যায় অনেক। যে কারনে উপজেলা থেকে বার বার না ডেকে একদিনেই শেষ করা হয়েছে প্রশিক্ষন । তবে তারা দুই দিনের অনারিয়াম পেয়েছে বলে জানান কর্মকর্তারা।

৩ ঘন্টার প্রশিক্ষণ করে ৪ দিনের অর্থ কি ভাবে নিবেন এমন প্রশ্ন করলে তারা জানান, একদিন প্রশিক্ষণ হয়েছে , বাকী দিনের টাকা সরকারী কোষাগরে ফেরত দিতে হবে । সেই কারনেই কাগজপত্রে দুই ব্যাচে দুই দুই ৪ দিনের প্রক্ষিণের কাগজপত্র তৈরী করা হয়েছে।

তারা বলেন , এ বিষয়টা খুলনা সিভিল সার্জন স্যারই সব কিছু করছেন। হিসাবের বিষয়টিও স্যার জানান বলেও জানান উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা। খুলনা সিভিল সার্জনের মুঠোফোনে বার বার রিং করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

এ ব্যাপারে খুলনা বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. মো. মনজুরুল মুরশিদ জানান, ২৭ আগস্ট সকাল ৯টায় খুলনা সিভিল সার্জন কার্যালয়ে মাসিক মিটিং ছিলো। আমি সেই মিটিংএ অংশ গ্রহন করেছি। তবে কোন প্রশিক্ষনের ব্যাপারে আমাকে জানানো হয়নি। এই ব্যাপারে খোজ খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবো।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, রূপান্তর প্রতিদিন এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়