সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলা ৫নং কৈখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শেখ আব্দুর রহিমের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অনৈতিক কর্মকাণ্ডের অভিযোগে ইউনিয়নের সর্বস্তরের জনগণ ও ভূক্তভোগীরা আজ উপজেলা প্রেসক্লাব চত্ত্বরে এক মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করে।
রবিবার ৮ সেপ্টেম্বর সকাল ১১ টায় প্রেসক্লাব চত্বরে ৫নং কৈখালী ইউনিয়নের সর্বস্তরের জনগণের আয়োজনে শত শত নারী পুরুষের উপস্থিতে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, কৈখালী ইউনিয়ন বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব আজাদ খোকন, নসাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক, চেয়ারম্যান প্রার্থী গাজী শাহ আলম, ইউপি সদস্য আজগর আলী, ফজলুল রহমান, আমিনুর মল্লিক, দেলোয়ার হোসেন, আইয়ুব হোসেন, ৮নং ওয়ার্ড বিএনপির নেতা মো. রফিকুল ইসলাম, কৈখালী প্রতিবন্ধী উন্নয়ন সংস্থার সহ সভাপতি আক্তার হোসেন প্রমুখ।
অভিযোগের ভিত্তিতে জানা যায়, চেয়ারম্যান শেখ আব্দুর রহিম বিগত সময় ধরে ক্ষমতার অপব্যবহার করে বিভিন্ন দুর্নীতিতে লিপ্ত ছিলেন। প্রধান শিক্ষক মো. আবুল বাসার হত্যাকাণ্ডে তার মদদ, সরকারি প্রকল্পের অর্থ আত্মসাৎ, অনুদান ও কার্ড বিতরণে স্বজনপ্রীতি, সরকারি সম্পদের অপব্যবহার এবং তথ্য সেবায় জনগণকে হয়রানীর মত গুরুতর অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। এছাড়া, ইউনিয়ন পরিষদে রাত্রীকালীন অনৈতিক কর্মকাণ্ডেও তিনি যুক্ত ছিলেন বলে অভিযোগে বলা হয়।
কৈখালী ইউনিয়ন বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব আজাদ খোকন বলেন, শেখ আব্দুর রহিম বিগত সরকারের ছত্রছায়ায় থেকে নিয়মিতভাবে সাধারণ মানুষের অধিকার হরণ করেছেন। সরকারি ঘর বরাদ্দ, পানি সরবরাহের ড্রাম এবং অন্যান্য উন্নয়নমূলক প্রকল্পের নামে তিনি লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। এছাড়া, তার বিরুদ্ধে নারীদের উপর যৌন হয়রানি এবং ধর্ষণের মত গুরুতর অভিযোগও ওঠেছে। এসব অভিযোগের কারণে এলাকাবাসীর মাঝে চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে।
ইউপি সদস্য আজগর আলী বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের বিভিন্ন কাজে তার অব্যবস্থাপনা এবং স্বজনপ্রীতির কারণে সাধারণ মানুষ প্রতিনিয়ত হয়রানির শিকার হচ্ছে। বিশেষ করে, সরকারি অনুদান ও ভিজিএফ কার্ড বিতরণে স্বজনপ্রীতি এবং দুর্নীতির অভিযোগ অনেক পুরনো। চেয়ারম্যান তার ঘনিষ্ঠ লোকজনকে এইসব সুবিধা পাইয়ে দিয়ে সাধারণ মানুষকে বঞ্চিত করছেন বলে অভিযোগ ওঠে।
কৈখালী প্রতিবন্ধী উন্নয়ন সংস্থার সহ সভাপতি আক্তার হোসেন বলেন, শেখ আব্দুর রহিমের অপরাধ এতটাই গভীর যে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে আমাদের সমাজের নৈতিক ভিত্তি ধ্বসে যাবে। একজন হত্যাকারী, দুর্নীতিবাজ, এবং নারী নিপীড়নকারীর হাতে ইউনিয়নের দায়িত্ব থাকতে পারে না। আমরা তাকে আর চেয়ারম্যান হিসেবে দেখতে চাই না।
বক্তৃতার শেষে উপস্থিত জনতা একযোগে শেখ আব্দুর রহিমের অপসারণ ও তার বিরুদ্ধে সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানায়। তারা বলেন, এরূপ একজন দুর্নীতিবাজ চেয়ারম্যানকে দায়িত্বে রাখা সম্ভব নয়। শেখ আব্দুর রহিমের মতো একজন অপরাধীকে দ্রুত বিচারের মুখোমুখি করা প্রয়োজন, যাতে করে ভবিষ্যতে অন্য কেউ এমন অপরাধ করতে সাহস না পায়।
এবিষয়ে কৈখালী ইউপি চেয়ারম্যান শেখ আব্দুর রহিমের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ইউনিয়ন বাসীর কাছে ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য একটি মহল আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা ষড়যন্ত্রমূলকভাবে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান করেছে।
মানববন্ধন শেষে কৈখালী ইউনিয়ন বাসীর পক্ষ থেক উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেন ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান।
রাজিব রায় চৌধুরী
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, রূপান্তর প্রতিদিন এর দায়ভার নেবে না।