চট্টগ্রাম ওয়াসা ভবন ঘেরাও

আগের সংবাদ

কেশবপুরে জলাবদ্ধ ২‘শ পরিবারে ত্রাণ দিল স্বেচ্ছাসেবীরা

পরের সংবাদ

চট্টগ্রামের সড়কে ট্রাফিক পুলিশ ফিরলেও নেই শৃঙ্খলা

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৩, ২০২৪ , ৯:৩৬ অপরাহ্ণ আপডেট: সেপ্টেম্বর ৩, ২০২৪ , ৯:৩৬ অপরাহ্ণ

চট্টগ্রামের সড়কে ট্রাফিক পুলিশ ফিরলেও এখনও ফেরেনি শৃঙ্খলা। আইন বা নিয়ম মানা নিয়ে এখনও অনীহা অনেক গাড়ি চালকের। আবার আইন মানাতে কোনো কার্যকর ভূমিকাও নেই ট্রাফিক বিভাগের। যেসব স্থানে ট্রাফিক আইন মেনে চলার সাইনবোর্ড আছে সেখানে দেখা যাচ্ছে উল্টো চিত্র। বলতে গেলে ঢিলেঢালা ট্রাফিকের কারণে যানজটের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে নগরবাসীকে।

গত কয়েকদিনে চট্টগ্রাম নগরীর আগ্রাবাদ, চকবাজার, বন্দর এলাকা, জিইসি, দুই নম্বর গেট, প্রবর্তক মোড়, কাজির দেউড়ি, পাঁচলাইশ, টাইগারপাসসহ বেশ কয়েকটি মোড়ে দেখা গেছে এমন চিত্র।

সড়কে দেখা গেছে, বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে যানজট লেগেই আছে। সড়কে ট্রাফিক পুলিশ থাকলেও তারা ঢিলেঢালা দায়িত্ব পালন করছেন। অনেক গাড়ি চালক কোনো ধরনের আইনের তোয়াক্কা না করেই ইচ্ছেমতো গাড়ি চালাচ্ছেন। ট্রাফিক পুলিশ সিগন্যাল দিয়ে গাড়ি দাঁড় করালেও অনেক গাড়ি ফাঁক গলে আইন না মেনে চলে যাচ্ছেন।

নগরীর টাইগারপাস মোড়ে দেখা গেছে, একজন ট্রাফিক পুলিশের সদস্য রাস্তায় দায়িত্ব পালন করছেন। ট্রাফিক পুলিশের সিগন্যাল অমান্য করেই চলছে যানবাহন। এর মধ্যে চলাচলরত পাবলিক বাস সার্ভিসগুলো যেখানে-সেখানে থামিয়ে যাত্রী ওঠা-নামা করছে। কিন্তু শিক্ষার্থীরা যখন ট্রাফিক পালন করছিল তখন লোকাল বাস থেমেছে নির্দিষ্ট স্থানে। গাড়িচালকরাও গাড়ি চালিয়েছেন নিয়ম মেনে।

এর আগে কোটা আন্দোলন ঘিরে সরকার পতনের পর উদ্ভূত পরিস্থিতিতে থানা কিংবা সড়ক, কোথাও ছিলো না পুলিশের সদস্যরা। থানায় ভাংচুর ও পুলিশ হত্যায় আতংকিত হয়ে কর্মবিরতিতে যান আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। আইনশৃঙ্খলা ভঙ্গুর দশায় পরিণত হয়। কয়েক দফা দাবি জানিয়ে কর্মবিরতি পালন করছিলেন পুলিশ সদস্যরা। বিরতির পরে গত ১৪ আগস্ট কাজে ফিরেছেন ট্রাফিক ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা। তবে নিরাপত্তা নিয়ে তারা শঙ্কিত বলে জানা গেছে। সম্প্রতি ট্রাফিক পুলিশের ওপর হামলার ঘটনাও ঘটেছে। ২৭ আগস্ট একটি গাড়িকে থামার সংকেত দিলে ট্রাফিক পুলিশের এক সদস্যকে পিটিয়ে রক্তাক্ত করে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের এক গাড়ি চালক।

টাইগারপাসে গাড়ির জন্য অপেক্ষারত এক শিক্ষার্থী জানান, গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছি অনেক্ষণ ধরে, কিন্তু পাচ্ছি না। ট্রাফিক সিগন্যাল মেনে চললে এতক্ষণ ধরে গাড়ির জ্যাম দেখা যায় না। ক্লাসের সময় পূর্বের ন্যায় ধরেই বের হয়েছি, কিন্তু এখনো পৌঁছাতে পারছি না। এ ভোগান্তি আর কত দিন চলবে?

নগরীর জিইসির মোড়ে দেখা গেছে, ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরা যানজট নিরসনের কাজ করছেন। জিইসি থেকে গাড়িতে মুরাদপুরের দূরত্ব ১০ মিনিট হলেও যানজটের কারণে সময় লাগছে প্রায় ঘণ্টাখানেক। একই চিত্র দেখা গেছে নগরীর অন্যান্য মোড়ে। ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরা যানজট নিরসনে হিমশিম খাচ্ছেন। রাস্তার এক পাশে প্রাইভেট গাড়ির পার্কিং, এরপর যাত্রী নেওয়ার জন্য ফাঁকা রিকশা দাঁড়িয়ে আছে। ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরা তাদের সরিয়ে দিলেও তারা যাচ্ছে না। কেউ যেন তোয়াক্কাই করছে না ট্রাফিক পুলিশদের।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক বিভাগ) মাসুদ আহাম্মদ বলেন, নিয়ম মেনেই কাজ চলছে তাদের। রোদ-বৃষ্টির মধ্যে ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরা সড়কে দায়িত্ব পালন করেন। কোটা আন্দোলনে তাদের বিভিন্ন পুলিশ বক্স নষ্ট হয়ে গেছে।

তিনি বলেন, বর্তমানে তাদের বসার মতো কোনো স্থান নেই। তাদের বিশ্রামের জন্য স্থান নেই। দীর্ঘ এই কর্মঘণ্টায় তাদের নিরলস কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।

ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার কারণে বাড়তি যানজট সৃষ্টি হওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটি বিআরটিএ’র দায়িত্ব। এই বিষয় তো আমরা লাইসেন্স দিই না। শহরের কোন ধরনের যানবাহন চলবে, তা নির্ধারণ করবে তারা। বিআরটিএ যদি একজন ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করে অভিযান পরিচালনা করেন, অবশ্যই আমরা তাদের সাহায্য করব।

ট্রাফিক কম থাকা প্রসঙ্গে মাসুদ আহাম্মদ বলেন, কর্মবিরতির ৩-৪ দিনের মাথায় তাদের ফুল ফোর্স কাজে লেগে গেছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, রূপান্তর প্রতিদিন এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়