রাওয়ালপিন্ডিতে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টের শুরুতেই বিপদে পড়েছিল পাকিস্তান। তবে ঘুরে দাঁড়িয়ে প্রথম সেশনজুড়ে রাজত্ব করে পাকিস্তানের ব্যাটাররা। কিন্তু দিনের বাকি দুই সেশনে আধিপত্য বজায় রাখতে পারেনি দ্য গ্রিন ম্যানরা। অন্যদিকে টেস্ট ক্যারিয়ারের দশম ফাইফারে স্বাগতিকদের ২৭৪ রানে গুটিয়ে দিতে বড় ভূমিকা রাখেন মেহেদী হাসান মিরাজ।
শনিবার (৩১ আগস্ট) পিন্ডিতে টস জিতে পাকিস্তানকে ব্যাটিংয়ে পাঠায় বাংলাদেশ। ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি স্বাগতিকদের। প্রায় ১৪ মাস পর টেস্টে ফেরা তাসকিন আক্রমণে এসেই স্বপ্নের মতো শুরু এনে দেন। প্রথম ওভারেই ওপেনার আবদুল্লাহ শফিককে বোল্ড করেন এই পেসার। তার অফ-স্টাম্পের বাইরে পিচড-আপ ডেলিভারিতে রানের খাতা খোলার আগেই প্যাভিলিয়নে ফেরেন এই ওপেনার।
দলীয় শূন্য রানে প্রথম উইকেট হারানোর চাপ সামলে নেন সাইম আইয়ুব ও শান মাসুদ। রানের চাকা সচল রেখে সাবলীল ব্যাটিংয়ে ফিফটি তুলে নেন পাক অধিনায়ক। ৩৫ ম্যাচে এটি তার দশম হাফ-সেঞ্চুরি। তাকে দারুণ সঙ্গ দিয়ে একপ্রান্ত আগলে রাখেন সাইম। তাদের ৯৯ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে বেশ সানন্দেই প্রথম সেশন পার করে দ্য গ্রিন ম্যানরা।
মধ্যাহ্নভোজ থেকে ফিরে তৃতীয় ওভারেই উইকেটের দেখা পায় বাংলাদেশ। পাক অধিনায়ক মাসুদকে এলবিডব্লুর ফাঁদে ফেলেন মিরাজ। ৬৯ বলে ৫৭ রান করে মাসুদ প্যাভিলিয়নে ফিরলে ভাঙে তাদের ১০৭ রানের পার্টনারশিপ। ফিফটি হাঁকানোর পর সাইমও বিদায় নেন। মিরাজের বলে ডাউন দ্য উইকেটে খেলতে গিয়ে লাইন মিস করেন তিনি। মুহূর্তেই স্ট্যাম্প ভেঙে দেন লিটন। ১১০ বলে ৫৮ রানে ফেরেন এই ব্যাটার।
এরপর সৌদ শাকিলও সুবিধা করতে পারেননি। তাসকিনের দ্বিতীয় শিকার বনে ১৬ রানে প্যাভিলিয়নে ফেরেন তিনি। দ্বিতীয় সেশনে বাংলাদেশের শেষ শিকার বাবর আজম। সাকিবের আর্ম বলে এলবিডব্লু হয়ে ৩১ রান করে সাজঘরে ফেরেন এ তারকা। এতে দলীয় ১৭৯ রানে পঞ্চম উইকেট খুইয়ে ফেলে দ্য গ্রিন ম্যানরা।
চা বিরতিতে যাওয়ার আগে ক্রিজে লড়াই করছিলেন রিজওয়ান ও সালমান। অন্যদিকে স্বাগতিক শিবিরে সাকিবের চাপ বাড়ানোর দিনে সাফল্য পাচ্ছিলেন মিরাজ। তবে পিন্ডিতে শেষ বিকেলে চিত্র বদলে নিজের প্রথম উইকেটের দেখা পান নাহিদ রানা। দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে উইকেটকিপার ব্যাটার রিজওয়ানকে নিজের শিকারে পরিণত করেন এই পেসার। তার বিদায়ে ষষ্ঠ উইকেট হারায় পাকিস্তান।
এরপর মিরাজের বলে তুলে মারতে গিয়ে মিড–অফে সাকিবের মুঠোবন্দি হয়ে সাজঘরের পথ ধরেন খুররাম শেহজাদ। সাকিবের বলে মুমিনুলের হাতে জীবন পাওয়া মোহাম্মদ আলীও বেশিক্ষণ ক্রিজে থিতু হতে পারেননি। মিরাজের চতুর্থ শিকার হয়ে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন তিনি।
এরপর খানিকটা আগ্রাসী ভূমিকা দলীয় পুঁজি বাড়াতে থাকেন সালমান আলী আঘা। ফিফটিও তুলে নেন। তবে তাসকিনের পেসে পরাস্থ হন এই অলরাউন্ডার। ফাইন লেগে তাসকিনের বাউন্সার খেলতে চেয়েছিলেন। তবে ঠিকঠাক টাইমিং না হওয়ায় বাউন্ডারি লাইনে সাকিবের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরতে হয় তাকে।
পরের ওভারে আক্রমণে এসে ক্যারিয়ারের দশম ফাইফারের মাইলফলক পূর্ণ করে দ্য গ্রিন ম্যান শিবিরকে অলআউট করেন মিরাজ। শেষমেশ ২৭৪ রানে থামে পাকিস্তানের প্রথম ইনিংস।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, রূপান্তর প্রতিদিন এর দায়ভার নেবে না।