২০১৯ সালের ২০ শে জানুয়ারি কয়েকজন বন্ধুকে নিয়ে গড়ে তোলেন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ঐক্য-বন্ধন। বর্তমানে সংগঠনের সদস্য সংখ্যা অর্ধশতাধিক। এসদস্যের বেশিরভাগই নবম-দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী ও সদ্য মাধ্যমিক পার হওয়া তরুণ-তরুণী। যশোরের ঝিকরগাছা, চৌগাছা, মনিরামপুর ও সদর উপজেলায় তারা কার্যক্রম পরিচালনা করে।
বর্তমানে ঐক্য-বন্ধন অসহায় মানুষের আত্মকর্মসংস্থান, ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প, দরিদ্র শিক্ষার্থীদের শিক্ষা ও ক্রীড়াসামগ্রী বিতরণ, বৃক্ষরোপণ করে যাচ্ছে। এছাড়া বিনামূল্যে রক্তদান কর্মসূচি, গরিব ও অসহায়দের পাশে দাঁড়ানো, ঈদে অসহায় পরিবারের মাঝে ঈদসামগ্রী বিতরণ, বাল্যবিয়ে, মাদক, দুর্নীতিবিরোধী প্রচারণামূলক, ক্যারিয়ার বিষয়ক সেমিনার, নারীদের সচেতন করতে উঠান বৈঠাক সহ বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে।
সংগঠনের মাধ্যমে প্রায় ৫ হাজার মানুষ সুবিধা পেয়েছে। তাদের কার্যক্রম নিজ গ্রামের গণ্ডি ছাড়িয়ে পৌঁছে গেছে আশপাশের একাধিক উপজেলায়। ঐক্য-বন্ধনের চলমান কার্যক্রমের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের মাঝে জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে দিতে খাতা-কলম ও অন্যান্য শিক্ষা উপকরণ প্রদানসহ পরীক্ষার মেধাক্রম অনুসারে শিক্ষার্থীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা এবং শিক্ষার্থীদের উন্নতি-অবনতি নিয়ে তাদের অভিভাবকদের সঙ্গে আলোচনা করা। সংগঠনটি অধিকারবঞ্চিত শিশুদের উচ্চশিক্ষা নিশ্চিতে কাজ করে যাচ্ছে এছাড়াও আমরা বর্তমানে সংগঠনটি সদস্যদের নিজস্ব অর্থায়নে ক্রিয়েটিভ স্কুল নামে একটি দাতব্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চালু করেছে। যেখানে বিদ্যালয়ের পাঠ্য বইয়ের কোন পড়া না পড়িয়ে। বর্তমানে ৫ টি কেন্দ্রের মাধ্যমে সপ্তাহিক ছুটির দিনে ছোট শিশুদের নিয়ে কম্পিউটার প্রশিক্ষণ, সংগীত চর্চা, কুইজ প্রতিযোগিতা, বিভিন্ন আবিষ্কার নিয়ে চর্চা, হাতের লেখা শিক্ষা, ধর্মীয় জ্ঞান প্রদান সহ মানবিক ও সামাজিক কাজে অনুপ্রাণিত করে চলেছে। একজন ক্রিয়েটিভ, স্মার্ট, দক্ষ সামাজিক ও মানবিক মানুষ তৈরী করতে সকল ধরণের কর্মকাণ্ড পরিচালনা করার চেষ্টা করে যাচ্ছে সংগঠনটি। শিশু বয়সে আমরা যেটা জানতে পারিনি তাদেরকে সেটা জানানোর জন্য। শিশুদের ভবিষ্যৎ নিয়েও কথা হয় যতটা সম্ভব দিকনির্দেশনা দিয়ে অনুপ্রপণিত করে সংগঠনটি।
সংগঠনের কার্যক্রম ও পরিচালনা সম্পর্কে জানতে চাইলে মাহমুদুল হাসান বলেন, বর্তমান সময়ে শিক্ষা ব্যাবস্থায় গতানুগতিক ভাবে পাঠ্য পুস্তকের পাঠদান করানো হচ্ছে। কিন্তু উন্নত দেশ গুলো প্রযুক্তিগত ও ক্রিয়েটিভ শিক্ষার ওপর বেশী গুরুত্ব দেয় ফলে তার বেশী উন্নত ও বর্তমান বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে সেদিক দিয়ে বিবেচনা করলে আমরা অনেকটা পিছিয়ে আছি।
পড়াশোনার পাশাপাশি এই শিশু বয়স থেকে নিজের মেধা ও সৃজনশীলতা প্রকাশের স্বাধীনতা দেওয়া উচিৎ যেটা তৃণমূল পর্যায়ের ছাত্র-ছাত্রীরা বঞ্চিত। সেই কথা বিবেচনা করে অল্প পরিসরে হলেও আমাদের এই ক্রিয়েটিভ শিক্ষা কর্মসূচি গ্রহণ করেছি। তেমন কোন সাহায্য সহযোগীতা পেলে এর পরিসর আরও বৃদ্ধি করব ইনশাআল্লাহ, আগামীতে আমরা সদস্যদের কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে বিভিন্ন ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান করার চিন্তা করেছি যেটা থেকে সদস্যদের ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষের কমসংস্থান হবে বলে আশা করছি। আমরা সবাই মানবিক কাজ গুলোকে সহযোগিতা করি কিন্তু সামাজিক কাজ গুলো করি না। আমাদের সমাজ যদি সুন্দর না হয় মানবিক মানুষ তৈরী হবে কি করে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, রূপান্তর প্রতিদিন এর দায়ভার নেবে না।