লেবাননে প্রাণঘাতী হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এতে অন্তঃসত্ত্বা নারীসহ কমপক্ষে ৫জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে একই পরিবারের সদস্য রয়েছেন ৪ জন। এছাড়া হামলায় আহত হয়েছেন আরো ৯ জন।
প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, লেবাননের সরকারি ন্যাশনাল নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে, ‘খিরবেত সেলম এলাকায় একটি বাড়িতে চালানো ওই হামলায় একই পরিবারের চারজন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে এক দম্পতি ও তাদের দুই সন্তান এবং অন্য একজন ব্যক্তি রয়েছেন। নিহত ওই মা গর্ভবতী ছিলেন।’
দক্ষিণ লেবাননের একটি বাড়িতে ইসরায়েল বিমান হামলা চালিয়েছে এবং এতে অন্তত ৫জন নিহত ও আরও নয়জন আহত হয়েছেন। খবর আল জাজিরার।
বর্বর এই হামলায় বাড়িটি ধ্বংস হয়ে গেছে এবং কাছাকাছি বসবাসকারী কমপক্ষে আরো ৯ জন মানুষ আহত হয়েছেন বলেও এতে বলা হয়েছে। মূলত গত বছরের অক্টোবর থেকে ইসরায়েল এবং হিজবুল্লাহর মধ্যে সীমান্ত যুদ্ধ ধীরে ধীরে বেড়েছে এবং লেবাননে কয়েক ডজন বেসামরিক লোক নিহত হয়েছেন।
এদিকে ইসরায়েলের সাথে লড়াইয়ে লেবাননের ইরান-সমর্থিত শক্তিশালী সশস্ত্রগোষ্ঠী হিজবুল্লাহর আরও ৩ যোদ্ধা নিহত হয়েছেন। আল জাজিরা জানিয়েছে, গত শুক্রবার ইসরায়েলের সাথে যুদ্ধে তিনজন যোদ্ধা মারা যাওয়ার কথা ঘোষণা করার পর হিজবুল্লাহ এখন আরও তিনজন নিহতের কথা নিশ্চিত করেছে, যারা একই পরিবারের সদস্য বলে মনে হচ্ছে।
শক্তিশালী এই সশস্ত্রগোষ্ঠীটি জানিয়েছে, ১৯৯৬ সালে জন্মগ্রহণকারী হাসান জাফর মারজি, ১৯৯৩ সালে জন্মগ্রহণকারী আলী জাফর মারজি এবং ১৯৬৮ সালে জন্মগ্রহণকারী জাফর আলী মারজি ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর হাতে নিহত হয়েছেন। তারা সবাই দক্ষিণ লেবাননের ব্লিদা শহরের বাসিন্দা ছিলেন।
সর্বশেষ এই প্রাণহানির ঘটনায় ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর সাথে আন্তঃসীমান্ত লড়াইয়ে হিজবুল্লাহর সদস্যদের মৃতের সংখ্যা ২৩৯ জনে পৌঁছাল। এছাড়া শনিবার ইসরায়েলি বিভিন্ন অবস্থানে নয়টি হামলা চালানোর দাবিও করেছে হিজবুল্লাহ।
উল্লেখ্য, গাজায় ইসরায়েলি হামলার প্রতিশোধে গত অক্টোবর থেকেই ইসরায়েলে হামলা চালিয়ে আসছে লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর সাথে আন্তঃসীমান্ত সংঘাতে ইরান-সমর্থিত শক্তিশালী এই গোষ্ঠীটির দুই শতাধিক যোদ্ধা নিহত হয়েছেন।
এছাড়া ইসরায়েলি হামলায় লেবাননে প্রায় ৫০ জন বেসামরিক নাগরিকেরও প্রাণহানি ঘটেছে। আর হিজবুল্লাহর হামলায় ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর এক ডজনেরও বেশি সদস্য এবং পাঁচ বেসামরিক নিহত হয়েছেন।
কয়েক মাস ধরে চলা এই হামলা-পাল্টা হামলায় ইসরায়েল-লেবানন উভয়ের সীমান্তের গ্রামগুলোর লাখ লাখ বাসিন্দা বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে গেছেন। ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাসের মতো হিজবুল্লাহও ইরানের মিত্র। এই গোষ্ঠীটি বলেছে, গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের হামলার প্রতিশোধে ও ফিলিস্তিনিদের প্রতি সমর্থনে ইসরায়েলে হামলা চালাচ্ছে তারা।
গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি অভিযান বন্ধ হলে হিজবুল্লাহও ইসরায়েলে হামলা বন্ধ করবে বলে জানিয়েছে গোষ্ঠীটি। তবে গাজায় যুদ্ধ অব্যাহত থাকলে হিজবুল্লাহও যুদ্ধ চালিয়ে যাবে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, রূপান্তর প্রতিদিন এর দায়ভার নেবে না।