সাতক্ষীরায় মসলার বাজারে রমজানের আঁচ

আগের সংবাদ

যশোর পৌরসভার শংকরপুরে মতবিনিময় করেন ফরিদ চৌধুরী

পরের সংবাদ

কোটচাঁদপুর এলজিডি’র বিরুদ্ধে সরকারি গাছ কেটে গায়েবের অভিযোগ

প্রকাশিত: মার্চ ৪, ২০২৪ , ৯:৪৫ অপরাহ্ণ আপডেট: মার্চ ৫, ২০২৪ , ১০:৪৮ পূর্বাহ্ণ

ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরে বন বিভাগকে না জানিয়ে কোন টেন্ডার ছাড়াই কয়েক শত গাছ নির্বিচারে কেটে ও জমির ফসল বিনষ্ট করে মেরামতের কাজ হচ্ছে কোটচাঁদপুর জিসি-গান্না জিসি ভায়া তালিনা সড়কের। সিডিউল অনুপাতে কাজ করা হচ্ছে দাবি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের। ক্ষয়ক্ষতির দায়ভার ঠিকাদারকে নিতে হবে বলছেন উপজেলা প্রকৌশলী আবুল কালাম আজাদ। ওই ঘটনার তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নিয়ম মোতাবেক বন বিভাগকে অবহিত না করেই কোটচাঁদপুর এলজিডি অফিস অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে কোন নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করেই শত শত সরকারী গাছ কর্তন ও গায়েব করেছে। অবকাঠামো পুনর্বাসন শীর্ষক প্রকল্প (ঈঅঋউজওজচ) এর আওতায় কাজটি পান রাজশাহীর গাড়ামারী সাহেব বাজারের বরেন্দ্র কনষ্ট্রাকশন।

এ কাজের প্রাক্কল্পিত মূল্য ছিল ২ কোটি ৫৭ লাখ ৭৮ হাজার ৯২৬ টাকা। আর চুক্তি মূল্য ছিল ২৩২ কোটি ১ লাখ ৩৩ হাজার ৪০০ টাকা।

পরে কাজটি কিনে নেন ঝিনাইদহের কাজী মাহবুবুর রহমান কনস্ট্রাকশন। এরপর গেল ১ মার্চ থেকে মেরামতের কাজ শুরু করেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি। এ সময় ওই প্রতিষ্ঠানটি চাষিদের সব বাঁধা উপেক্ষা করে সড়কের দুই পাশের মেহগনি, কড়াই, নিম, ও খেজুর গাছ কেটে দিয়েছেন। নষ্ট করেছেন ধান, ভূট্রা, মসুরি, গমসহ বিভিন্ন ফসল এমন অভিযোগ ভুক্তভুগীদের। এ দিকে ওই সব কাটা গাছ নিয়ে ব্যবসায় মেতেছেন সংশ্লিষ্ট অফিসের সুপার ভাইজার আব্দুর রহিম সহ এলাকার কিছু অসাধু মানুষ। তারা ওই কাটা গাছ নিয়ে গিয়ে তাদের ইচ্ছে মত ব্যবসা করেছেন এমন দাবিও এলাকাবাসীর।

তবে ওই অভিযোগ অস্বীকার করে কাজী মাহবুবুর রহমান কনস্ট্রাকশনের মালিক ঠিকাদার মাহবুবুর রহমান রুনু বলেন, গাছ কাটার সময় অফিসের সুপার, এসও এবং কার্যসহকারী সব সময় উপস্থিত ছিলেন। ওনারা যদি গাছ অফিসে না দিয়ে থাকেন, তাঁর জন্য ওনারা দায়ী। ওনাদের ধরলে সব পাওয়া যাবে।

তিনি বলেন, সিডিউল অনুযায়ী সড়কের পাশ থেকে মাটি কেটে দেয়ার কথা। আমরা সেটাই করছি। আর ওই কাজ করতে গিয়ে সড়কের কিছু গাছ মারতে হয়েছে, তা না হলে ভেকু দিয়ে মাটি কাটা সম্ভব হচ্ছিল না।

উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, কালিগঞ্জের শিশুতলা থেকে বালিয়াডাঙ্গা সড়কে একইভাবে সড়কের পাশ থেকে মাটি কেটে দেয়া হয়েছে। তারা কোন অভিযোগ করেননি। চাষিদের ক্ষতি নিয়ে প্রশ্নে করলে তিনি বলেন, চাষিরা আমার কাছে কোন অভিযোগ করেননি।

এ ব্যাপারে তালিনা গ্রামের শান্তি সর্দার বলেন, আমার মাত্র ১০ কাঠা জমিতে ভূট্রার চাষ ছিল। মাটি কাটার স্বার্থে অর্ধেক জমির কাঁচা ভূট্রার গাছ কেটে নিতে হয়েছে। কাঠা পড়েছে আমার বেশ কয়েকটি কড়াইসহ অন্যান্য গাছও।

তালিনা গ্রামের মন্টু মিয়া বলেন, মজিদ নামের ১ জনেরই ১ শত খেজুর গাছ কাটা পড়েছে। এ ছাড়া আরো অনেক চাষিরও বহু গাছ কাটা পড়েছে বলে জানিয়েন। যদি কোদাল দিয়ে মাটি কাটতো তাহলে আমার কাঁচা ভূট্রা গাছ কেটে নিতে হত না।

বিষয়টি নিয়ে কোটচাঁদপুর উপজেলা প্রকৌশলী আবুল কালাম আজাদ বলেন, ঠিকাদার কাজ শুরু করেছেন আমি জানতাম না। এরপর জানতে পারলাম গাছ মারার ঘটনা। এরপর কাজ বন্ধ রাখার কথা বলা হয়েছে ঠিকাদারকে। তিনি কথা শুনেননি। আপনারা ওনার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেন।

তিনি বলেন, আমি তো ঠিকাদারের সঙ্গে মারামারি করতে পারবো না। আমি তাকে কাজ করতে না করেছি, এরপরও তিনি এগুলো করছেন। তবে আমি স্যারকে বলেছি, স্যার ব্যবস্থা নিবেন বলে জানান। নির্বিচারে গাছ কাটা ও ফসল নষ্টের ঘটনা নিয়ে প্রশ্ন তুললে তিনি বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর ঠিকাদারকে এ সব বন্ধ করতে বলেছিলাম। তিনি বন্ধ করেননি, তাহলে এসবের দায়ভার ওনাকে নিতে হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উছেন মে বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর আমি সংশ্লিষ্ট বিভাগকে জানিয়েছি। তারা ব্যবস্থা নিবেন বলে জানিয়েছেন। এ ছাড়া নায়েব সাহেবকে পাঠানো হয়েছে। তিনি দেখে আসার পর রিপোর্ট দিলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

মার্চ ০৪, ২০২৪, at ২১:৪৪ (GMT+06) রূপ্র/আক/ঢাঅ/আ.হা.

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, রূপান্তর প্রতিদিন এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়