মজুতদারির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে বললেন প্রধানমন্ত্রী

আগের সংবাদ

ভিসা জটিলতায় বাঁধন

পরের সংবাদ

নেতাকর্মীদের উজ্জীবিত করতে নেতৃত্বের বদল

প্রকাশিত: মার্চ ৪, ২০২৪ , ১১:৩৩ পূর্বাহ্ণ আপডেট: মার্চ ৪, ২০২৪ , ১১:৩৩ পূর্বাহ্ণ

ব্যর্থতার হতাশা কাটিয়ে পুনরায় মাঠে নামার পরিকল্পনা করছে বিএনপি। তৃণমূল নেতাকর্মীদের মনোবল ধরে রাখতে নিয়মিত কর্মসূচির কথা ভাবছে। জনসম্পৃক্ত নানা কর্মসূচি দিয়ে সরকারকে চাপে রাখতে চায় দলটি। পাশাপাশি কূটনীতিক তৎপরতা বাড়িয়েছে। সরকারের হামলা, মামলা নির্যাতন, জুলুম অত্যাচারের ফিরিস্তি তুলে ধরছে আন্তর্জাতিক মহলে। কারাবন্দি নেতাকর্মীদের জামিনে মুক্তির ব্যাপারেও হয়েছে তৎপর।

রাজনীতির থমথমে নীরবতা কাটিয়া সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের উজ্জীবিত করতে নিয়েছে নানা উদ্যোগ। আনা হবে বিভিন্ন ইউনিটের রদবদল। কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে ঢাকার দুই মহানগরের গুরুত্ব সব থেকে বেশি। মুল টার্গেট রাজধানী। এখান থেকে সারাদেশে আন্দোলন ছড়িয়ে দিতে চায় দলটি। তবে অতীত আন্দোলনে ঢাকার ভূমিকা সুখকর নয়। বারবারই রাজধানীতে আন্দোলন জমাতে ব্যর্থ হতে হয়েছে। সারাদেশের সঙ্গে ঢাকাকে বিচ্ছিন্ন করার কর্মসূচি দিয়েও ব্যর্থ হয়েছে একাধিকবার। ভুল শুধরে নতুন করে নেতাকর্মীদের মাঠে নামতে চায়। দলকে চাঙা করতে দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা কাজ করছেন। বিএনপির বিভিন্ন ইউনিট, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতৃত্বে পরিবর্তন আনা হবে। ইতিমধ্যে ছাত্রদলের কমিটি ভেঙে ৭ সদস্যের আংশিক কমিটি গঠন করা হয়েছে।

২৮ অক্টোবরের পর থেকে লেজেগোবরে অবস্থা হয় রাজধানী ঢাকার বিএনপির রাজনীতিতে। ধারাবাহিক হারতাল-অবরোধে মাঠে দেখা যায়নি দুই মহানগর শীর্ষ নেতৃবৃন্দের। অধিকাংশ নেতৃবৃন্দ কারাগারে থাকলেও যেসব নেতারা বাইরে ছিলেন, তারাও মাঠে নামেনি। ছিলেন আত্মগোপনে। তৃণমূল নেতাকর্মীর সাথে করেনি যোগাযোগ। আন্দোলনের সমন্বয়ও করেনি। কেউ কেউ আন্দোলনের চেয়ে অন্তকোন্দল, গ্রুপিং রাজনীতি নিয়ে ছিলেন ব্যস্ত।

মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হকের গ্রেপ্তারের পর আন্দোলনে ভাটা পড়ে। ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনারের ভূমিকা নিয়ে নানা প্রশ্ন ওঠে। জানা যায়, নিজস্ব বলয় নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন তিনি। নিজের পছন্দের নেতাকর্মীকেই গুরুত্ব দিয়েছেন। আমানউল্লাহ আমান ও আমিনুলের নেতাকর্মীকে দূরে রাখেন। তবে কারামুক্ত হয়ে নেতাকর্মীদের কাছে ছুটে যাচ্ছেন ঢাকা মহানগর উত্তরের বিএনপির সদস্য সচিব আমিনুল হক। নিজ ইউনিটের আহত ও নির্যাতিত নেতাকর্মীদের খোঁজ নিচ্ছেন। পৌঁছে দিচ্ছেন তারেক রহমানের বার্তা। দিচ্ছেন পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি। ঘোষিত কর্মসূচিতে নেতাকর্মীদের নিয়ে থাকছে মাঠে। মহানগর উত্তরের ঠিক উল্টা চিত্র মহানগর দক্ষিণে। ২৮ অক্টোবর সংঘর্ষের পর আত্মগোপনে চলে যান মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আবদুস সালাম। এরপর আর কোথাও দেখা যায়নি তাকে। এখন পর্যন্তও নেতাকর্মীদের সঙ্গেও যোগাযোগ করেনি বলে অভিযোগ রয়েছে। ফলে এলোমেলো অবস্থা বিরাজ করছে মহানগর দক্ষিণে। ঢাকা মহানগর উত্তরের থেকে দক্ষিণ নিয়ে বেশি চিন্তিত বিএনপি হাইকমান্ড।

জানা গেছে, সারাদেশ থেকে রাজধানীকে বিচ্ছিন্ন করার দায়িত্ব ছিলো ঢাকার পার্শ্ববর্তী জেলা- মানিকগঞ্জ, টাঙ্গাইল, মুন্সীগঞ্জ, গাজীপুর জেলা ও মহানগর, নরসিংদী, নারায়ণগঞ্জের ওপর। এসব জেলা সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। এখন এসব জেলার সাংগঠনিক শক্তি মূল্যায়ন করা হচ্ছে। দুর্বল পয়েন্টগুলো খুঁজে বের করা হচ্ছে। সাংগঠনিক ঘাটতি পুঙ্খানুপুঙ্খ মূল্যায়নের রিপোর্ট যাবে দলের হাইকমান্ডের কাছে। রিপোর্ট পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নিবেন তারেক রহমান। দল গোছাতে বিভিন্ন উইনিটে আনা হবে পরিবর্তন। ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতাদের নেতৃত্বের সামনের সারিতে নিয়ে আনা হবে। দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদেরও জবাবদিহিতার আওতায় আনার পরিকল্পনা রয়েছে।

দায়িত্বপ্রাপ্ত বিএনপির এক শীর্ষ নেতা বলেন, সরকার পতনের আন্দোলনে অনেক জায়গায় দুর্বলতা ধরা পড়েছে। অনেক জেলায় কার্যত কোনো আন্দোলনই গড়ে ওঠেনি। জেলার অনেক মনোনয়নপ্রত্যাশীদেরও খুঁজে পাওয়া যায়নি। অনেক নেতাকর্মীদের এড়িয়ে চলছেন। এর মধ্যে ঢাকার দুই মহানগর, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর জেলা ও মহানগর, মানিকগঞ্জ ও ঢাকা জেলার ওপর যতটুকু প্রত্যাশা ছিল, তার ধারে কাছেও নেই সেগুলো। পাশাপাশি যুবদল ও ছাত্রদলের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ মাঠে নামেনি। ইতিমধ্যে ছাত্রদলের কমিটি ভেঙে নতুন কমিটি করা হয়েছে। ওলামা দলের কমিটি ভেঙে দেয়া হয়েছে। পর্যায়ক্রমে বিএনপির কিছু ইউনিট, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের পরিবর্তন আসবে।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্মমহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, আমাদের হাজার হাজার নেতাকর্মী ফ্যাসিস্ট সরকারের কারাগারে বন্দী। যারা বাইরে ছিলেন তারা রাজপথে ছিলেন। সামর্থ্য অনুযায়ী আন্দোলন-সংগ্রামে ভূমিকা রেখেছে। আমাদের নেতাকর্মী কারাগার থেকে মুক্তি পাচ্ছে। মুক্তি পেয়ে কার্যালয়ে আসছে, কর্মসূচি পালন করছে। ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধ রয়েছে, তারা মাঠে আছে। আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় মহানগরের নেতাকর্মীরা এখন বেশি সক্রিয়।

মার্চ ০৪, ২০২৪, at ১১:২৮(GMT+06) রূপ্র/আক/ঢাঅ/আ.হা.

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, রূপান্তর প্রতিদিন এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়