ইছালী ইউনিয়নে রাস্তার মাটি ভরাট কাজের উদ্বোধন

আগের সংবাদ

হরিণাকুন্ডে আগুনে পুড়ে ছাই ১৬ বিঘা পান বরজ, ক্ষতি প্রায় ৫০ লাখ টাকা

পরের সংবাদ

সাতক্ষীরায় আম উৎপাদনের লক্ষমাত্রা কম থাকলেও অর্জনে শঙ্কা

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২৯, ২০২৪ , ১০:১৮ অপরাহ্ণ আপডেট: ফেব্রুয়ারি ২৯, ২০২৪ , ১০:১৮ অপরাহ্ণ

অফ সিজনে বৈরি আবহাওয়ায় এবছর সাতক্ষীরা জেলায় আমের উৎপাদন কমার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। জেলার বেশিরভাগ আম চাষিরা বলছেন তাদের আম গাছে এবার মুকুলের পরিমাণ কম। এছাড়া অল্প মুকুলে পোকার আক্রমণে জেলায় আমের উৎপাদন এবছর তলানীতে নামতে পারে।

জেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, গত বছর সাতক্ষীরা জেলায় ৪১১৫ হেক্টর জমিতে আমের চাষ হয়। সেখানে চলতি বছর আরও ৩ হেক্টর বেড়ে ৪১১৮ হেক্টর জমিতে আমের চাষ হচ্ছে। তবে চাষাবাদ বেশি হলেও গতবারের চেয়ে এবছর আম উৎপাদনের লক্ষমাত্রা কম নির্ধারণ করা হয়েছে।

জেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে আরো জানা গেছে, গত বছর সাতক্ষীরা জেলায় আম উৎপাদনের লক্ষমাত্রা ছিল ১ লক্ষ ৪৯ হাজার মেট্রিক টন। যেখানে উৎপাদন হয়েছিল প্রায় ৭০ হাজার মেট্রিক টন। বলা যায় লক্ষমাত্রার ৫৩ শতাংশ আম কম উৎপাদন হয়েছিল। তবে এবছর আম গাছে মুকুলের পরিমাণ কম হওয়ায় গত বছরের উৎপাদনে চেয়ে প্রায় ২০ হাজার মেট্রিক টন আম কম উৎপাদনের লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে।

সরেজমিনে সাতক্ষীরা সদরের ধুলিহর এলাকার আম চাষী আক্তারুল ইসলাম জানান, ‘তার ছোট ছোট ১০টি আম বাগান আছে। সেখানে আম গাছের সংখ্যা না কমলেও গত বছরের তুলনায় এ বছর উৎপাদম কম হবে। কেননা এবার আম গাছে মুকুল কম এসেছে। ফলে এ বছর ফলনও কম হওয়ার শঙ্কা আছে’। তিনি আরো জানান, ‘আবহাওয়া অনুকূলে থাকলেও চলতি বছরেও আমের মুকুলে হপার পোকার আক্রমণ দেখা দিচ্ছে। কৃষি অফিসের পরামর্শ অনুযায়ী হপার প্রতিরোধী ওষুধ স্প্রে করা হচ্ছে’। দেবহাটা উপজেলার আম বাগান মালিক ফারুখ হোসেন, শফিকুল ইসলাম ও শ্রী-ঝন্টু বাবু জানান, ‘আম গাছে মুকুল আসার পর থেকেই তারা গাছের প্রাথমিক পরিচর্যা শুরু করেছেন। মুকুলে রোগ বালাইয়ের আক্রমণ থেকে রক্ষা করতে স্থানীয় কৃষি বিভাগের পরামর্শ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ওষুধ স্প্রে করছেন তারা’। বাগান মালিকরা আরও জানান, ‘বর্তমান আবহাওয়া আম চাষের জন্য অনুকূল নয়। বসন্তের শুরুতেই হঠাৎ ঠান্ডা-গরম পড়ায় গাছের মুকুল ঝরে পড়ছে। তাছাড়া পোকার আক্রমণতো আছেই’।

কলারোয়া উপজেলার জালালাবাদ এলাকার আম চাষি নয়ন হোসেন জানান, ‘তিনি হিমসাগর ও গোবিন্দভোগ আম চাষ করেন। তবে তার বাগানে সব গাছে এবার মুকুল আসেনি’। তিনি আরও জানান, ‘তার বাগানে এবার গোবিন্দভোগ আম গাছে কিছুটা আমের মুকুল ধরলেও হিমসাগর আম গাছে মুকুল একেবারেই কম। ফলে এবছর আমের উৎপাদন খুবই কম হবে বলে তিনি জানান’। এছাড়া সাতক্ষীরা সদর উপজেলাসহ জেলার বিভিন্ন উপজেলায় আম বাগান পরিদর্শণকালে আম চাষিদের সাথে কথা বললে তারা আম উৎপাদনে শঙ্কার কথাই বলেন।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সাতক্ষীরার উপপরিচালক কৃষিবিদ সাইফুল ইসলাম জানান, ‘এক বছর আমের উৎপাদন ভালো হলে পরবর্তী বছর উৎপাদন একটু কম হয়। সেই হিসেবে এবার অফ সিজনে সাতক্ষীরা জেলায় আমের উৎপাদন কিছুটা কম হতে পারে’। তিনি আরো জানান, ‘এবছরের আবহাওয়া আম উৎপাদনের জন্য পুরোপুরি উপযোগী নয়। তবে আবওয়ার কিছুটা পরিবর্তন যদি আসে গাছে গাছে যা মুকুল আছে তাতে আমাদের লক্ষমাত্রা অর্জন হবে’।

সাতক্ষীরা জেলায় আম উৎপাদনের লক্ষমাত্রার বিষয়ে ওই কৃষি কর্মকর্তা জানান, ‘এবছর সাতক্ষীরায় ৪১১৮ হেক্টর জমিতে আমের চাষ হচ্ছে। গত বছরের চেয়ে এবছর ৩ হেক্টর জমিতে বেশি চাষাবাদ হলেও গত বছরের তুলনায় এবছর লক্ষমাত্রা কম ধরা হয়েছে’। তিনি জানান, ‘এবছর সাতক্ষীরা জেলায় হেক্টর প্রতি ১২টন আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্র নির্ধারণ করা হয়েছে। সে হিসেবে এবছর জেলায় প্রায় ৫০ হাজার মেট্রিক টন আম উৎপাদন হতে পারে’।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সাতক্ষীরার উপপরিচালক কৃষিবিদ সাইফুল ইসলাম আরও জানান, ‘আমের উৎপাদন প্রক্রিয়া স্বাভাবিক রাখতে প্রতিনিয়ত কৃষি কর্মকর্তারা বাগান পরিদর্শণ করে আম চাষিদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও করণীয় বিষয়ে দিক-নির্দেশনা দিচ্ছেন’।

ফেব্রুয়ারি ২৯, ২০২৪, at ২২:১০ (GMT+06) রূপ্র/আক/ঢাঅ/আ.হা.

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, রূপান্তর প্রতিদিন এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়