যশোরে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য খুন

আগের সংবাদ

সাতক্ষীরায় পুলিশের অভিযানে ৪৬ বোতল ফেনসিডিলসহ ১ নারী মাদক ব্যবসায়ী আটক

পরের সংবাদ

ববি মুক্তমঞ্চের কনসার্ট যেন মাদকসেবীদের আড্ডাখানা

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০২৪ , ৪:৫৭ অপরাহ্ণ আপডেট: ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০২৪ , ৪:৫৭ অপরাহ্ণ

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (ববি) মুক্তমঞ্চে সারা বছরই বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন হয়ে থাকে। মুক্তমঞ্চের এসব অনুষ্ঠানে সাধারণ দর্শকদের অস্বস্তির একমাত্র কারণ মাদক। বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তমঞ্চের কনসার্ট মাদকসেবীদের আড্ডাখানায় পরিণত হয়। কনসার্টে মাদক সেবন নিয়ে বিভিন্ন সময়ে তর্ক বিতর্ক চলতেই থাকে।

মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারী) বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০ম ও ১১তম ব্যাচ ডে উপলক্ষে আয়োজিত মুক্তমঞ্চের কনসার্টে মাদক সেবন নিয়ে আবার বিতর্ক শুরু হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের এই বিষয়ে একাধিক পোস্ট করতে দেখা গেছে। আরিফ নামে এক শিক্ষার্থী লিখেছেন, “গাঁজায় পুরো ক্যাম্পাসের বাতাশ ভারি হয়ে গেছে। “আরেকজন লিখেছেন, ” ব্যাচ ডের অনুষ্ঠানে ফ্রীতে গাজার ফিল নিয়ে আসলাম।”

জানা গেছে, যেকোনো অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তমঞ্চে চলে মাদকের অবাধ ব্যবহার। মাদকসেবীদের কারণে একদিকে নষ্ট হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক পরিবেশ; আরেক দিকে অনুষ্ঠান উপভোগ করতে আসা শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের পড়তে হয় অস্বস্তিকর অবস্থায়।

মুক্তমঞ্চের কনসার্টে অবাধে মাদকসেবনের ঘটনায় ক্ষোভ জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা। ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থী ইমন হাওলাদার বলেন, বহিরাগত বা ক্যাম্পাসের মানুষজন প্রচুর ধূমপান করে। সিগারেট-গাঁজার গন্ধ আর ধোঁয়ায় মেয়েদের প্রচণ্ড সমস্যা হয়। অনেকের শ্বাসকষ্টও হয়। অধূমপায়িরা ক্রমাগত ধোঁয়ায় অসুস্থ অনুভব করেন। বার বার অনুরোধ করলেও কেউ কথা শোনে না। আর এসব দেখেও নিয়ন্ত্রণ করে না কেউ।

আরাফাত জাহান ইনা নামে আরেক শিক্ষার্থী মুক্তমঞ্চের মাদকসেবন নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিখেছেন। ” ব্যাচডের কনসার্ট মাদকে মুখরিত। যে হারে গাজা খাচ্ছে বাইরের ও ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীরা তাতে মেয়েরা কতটা সেভ?”

ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের পরিচালক সহযোগী অধ্যাপক সুজন চন্দ্র পাল বলেন, “মুক্তমঞ্চের কনসার্টে মাদক সেবনের বিষয়টি নিয়ে আমাদের সকলের একসাথে কাজ করতে হবে। আমি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও প্রক্টর অফিসের সাথে এই ব্যাপারে আলোচনার মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলবো। আমরা মাদকের কুফল নিয়েও কয়েকদিন আগে একটা সেমিনারও করেছি।”

সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক অসীম কুমার নন্দী বলেন, আমাদের মূল্যবোধের অবক্ষয় হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় এসে শিক্ষার্থীরা অভিভাবকহীন থাকে নিজের ইচ্ছা মতো যা খুশি করতে পারে। স্বাধীন একটা পরিবেশে এসে কিছু শিক্ষার্থীরা মাদকের ভয়াবহ শিকারে পরিণত হচ্ছে। বিভাগগুলো এবং বিভিন্ন সংগঠন যারা আছে তাদেরকে এগিয়ে আসতে হবে শিক্ষার্থীদের এ ব্যাপরে সচেতন করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, মুক্তমঞ্চের মত ওপেন একটা স্থানে কনসার্টে মাদক সেবন একেবারে গ্রহণযোগ্য নয়। প্রশাসনের উচিত মাদকসেবন রোধে সর্বোচ্চ শাস্তির বিধান রেখে ব্যবস্থা নেওয়া। সাথে সাথে মাদক সরবরাহে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক ড. আব্দুল কাইউম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন মাদকের ব্যাপারে জিরো টলারেন্স, কোন ভাবেই এটাকে প্রশ্রয় দেওয়া হবে না। মুক্তমঞ্চে কনসার্টের দিনগুলোতে আমাদের প্রক্টরিয়াল টিম অনুসন্ধানে থাকে নিরাপত্তাসহ যে কোন প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা যেন না ঘটে সে জন্য। মুক্তমঞ্চের কনসার্টে মাদকসেবনের যবিষয়টি প্রমাণিত হলে তাঁদের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নিব আমরা।”

ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০২৪, at ১৬:৫৭ (GMT+06) রূপ্র/আক/রই/এসহো

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, রূপান্তর প্রতিদিন এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়