মিয়ানমারের জান্তা সরকার গত শনিবার তরুণ-তরুণীদের বাধ্যতামূলক সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ার আইন করেছে। এর অধীনে মিয়ানমার প্রতিমাসে কমপক্ষে ৫ হাজার তরুণ-তরুণীকে যুক্ত করার খসড়া শুরু করছে। এ হিসাবে প্রতিবছর সেখানে সামরিক প্রশিক্ষণ নিতে হবে প্রায় ৬০ হাজার তরুণ-তরুণীকে। এমন আইনের ফলে অনেকেই এরই মধ্যে দেশ ছেড়ে পালানোর কথা চিন্তা করছেন। দেশটিতে নতুন বর্ষবরণ হবে এপ্রিলে। এ সময় রীতি অনুযায়ী বর্ষবরণের পর শুরু হবে এ কার্যক্রম।
সামরিক কাউন্সিলের চেয়ারম্যান সিনিয়র জেনারেল মিন অং হ্লাইং সেনাবাহিনীতে বাধ্যতামূলক যোগ দেওয়ার আইন ঘোষণা করেন। তাঁর আকস্মিক এ ঘোষণা এটিই বলে দেয় যে, মিয়ানমারের সেনাবাহিনী দুর্বল হয়ে পড়ছে। তাদের সংখ্যা কমে যাচ্ছে। বিশেষ করে গণতন্ত্রপন্থি বিভিন্ন বাহিনীর ক্রমাগত চাপের মুখে এ ঘটনা ঘটছে।
সেনাবাহিনীর আকার এখন যে মাত্রায় আছে, তা নির্ভরযোগ্য নয়। সিআইএ ওয়ার্ল্ড ফ্যাক্টবুক অনুযায়ী, গত বছর মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সদস্য সংখ্যা দেড় লাখ থেকে চার লাখের মধ্যে ছিল।
ওয়াশিংটনভিত্তিক ইউএস ইনস্টিটিউট অব পিস বলছে, সেনাবাহিনী ক্ষমতা নেওয়ার পর থেকে ২১,০০০ সদস্য কমে গেছে। এর মধ্যে আছে হতাহত হওয়া, চাকরি ছেড়ে যাওয়া অথবা পক্ষত্যাগ করা। ফলে মিয়ানমারে কার্যত সেনাবাহিনীর সংখ্যা প্রায় দেড় লাখ।
এদিকে দেশটির ছায়া ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট (এনইউজি) বিরোধী রাজনৈতিক প্রতিরোধে নেতৃত্ব দিচ্ছে। তারা মঙ্গলবার এক ঘোষণায় বলেছে, এ আইন মেনে চলতে বাধ্য নয় জনগণ। তাদের ঘোষিত এ আইনই বেআইনি। এনইউজি উল্টো জনগণকে তাদের সঙ্গে বিপ্লবে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
অন্যদিকে সোমবার কারেনি রাজ্যের শ্যাডাও টাউনশিপে জান্তা বাহিনীর শেষ ফাঁড়িটি বিদ্রোহীরা দখল করেছে বলে দাবি করেছ। তিন মাস আগে শুরু করা অপারেশন ১১১১ আক্রমণের ধারাবাহিকতায় এটি সম্ভব হয়েছে। সশস্ত্র সংগঠনের একজন মুখপাত্র বলেছেন, কেএ-এর প্রতিরোধ যোদ্ধারা শাদাও শহরের মধ্যে উঁচু ভূমিতে অবস্থিত সেনা ছাউনি দখল করেছে। যেটি কারেনি ন্যাশনাল প্রগ্রেসিভ পার্টির (কেএনপিপি) সশস্ত্র শাখা হিসেবে কাজ করত। খবর ইরাবতীর।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, রূপান্তর প্রতিদিন এর দায়ভার নেবে না।