প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ৯, ২০২৪ , ৮:১৩ অপরাহ্ণ আপডেট: ফেব্রুয়ারি ৯, ২০২৪ , ৮:১৩ অপরাহ্ণ
বিশাল হলরুমের দুই পাশে সারি সারি বইয়ের তাক। সেগুলোয় একের পর এক সাজানো। বসার জন্য আছে আরামদায়ক চেয়ার ও টেবিল। পড়ার জন্য রয়েছে পর্যাপ্ত আলো-বাতাসসহ রয়েছে সুন্দর পরিবেশ। তবে তা ও নেই পাঠকদের আনাগোনা। বই পড়া, পত্রিকা পড়া, ফ্রি ইন্টারনেট সেবাসহ সব সুযোগ-সুবিধা থাকার পরও উল্লেখযোগ্য সংখ্যক পাঠকের দেখা মেলে না এখানে। ফলে দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে লাইব্রেরিতে একসাথে বসে বই পড়া পাঠকের সংখ্যা।
সংশ্লিষ্টদের ধারণা মতে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আসক্তিসহ নানাবিধ কারণে শিক্ষার্থীসহ সব বয়সী পাঠকের বই পড়ার প্রতি অনীহা সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে তরুণ প্রজন্ম দিনে দিনে সাহিত্য চর্চা ও বই পড়ার অভ্যাস হারিয়ে ফেলছে। অটো পাশের যুগে এসে বই পড়া দিনে দিনে যেন মাথাই উঠায় ফেলছে। স্ব স্ব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছাত্র-ছাত্রীদের পাঠ্য বইয়ের পাশাপাশি অন্য বই পড়তে উদ্বুদ্ধ না করায় বইয়ের প্রতি অনীহা তৈরি হয়েছে।
সরেজমিন সাতক্ষীরা সরকারি গণগ্রন্থাগারে গিয়ে দেখা গেছে, পাঠকদের জন্য পর্যাপ্ত বসার ব্যবস্থা থাকলেও পাঠক রয়েছে মাত্র ১৫ জন। কেউ কেউ চাকরির পড়া নিয়ে ব্যস্থ আবার কেউ কেউ একাডেমি পড়া তবে কেউ কেউ দেখি খবরের কাগজ পড়ে ও সময় কাটাচ্ছেন।
গণগ্রন্থগারে কম্পিউটার জোন রয়েছে। সেখানে থাকা তিনটি কম্পিউটার ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে পাঠকদের জন্য। নতুন করে শিশু কর্নার তৈরি করা হয়েছে, সেখানে শিশুদের বিভিন্ন খেলনা নিয়ে খেলার সুযোগ রয়েছে। ফ্রি ইন্টারনেট সেবাসহ নানাবিধ সুবিধার ব্যবস্থা করেছে সরকার। তা ও দেখা মিলছে না পর্যাপ্ত পাঠকের। বরং দিন যত যাচ্ছে ততই লাইব্রেরি তার খাই হারিয়ে ফেলছে। নেই পাঠকের দেখা। ফলে পাঠক শূন্যতায় দিন দিন ধুলো জমছে বইয়ে। অন্যদিকে ক্যাটালগের বই দীর্ঘদিন কেউ স্পর্শ না করায় সেখানেও জমেছে ধুলো।
মুন্সিপাড়ার মেয়ে সুজাতা বাছাড় চাকরির পড়ার জন্য টানা ২ বছর ধরে লাইব্রেরিতে আসছেন। তিনি বলেন, আগে একাডেমি পড়া থাকার কারনে মাঝে মাঝে আসাতাম। তবে এখন চাকরির পড়া পড়ার জন্য প্রতিদিনই আসি। তবে ধৈর্য না থাকলে ও পড়তে হচ্ছে। কারণ যে ভালো চাকরি করতে হবে তাই তো সেই সকাল ৯টা থেকে শুরু করে বিকাল ৪টা পর্যন্ত এখানে ধৈর্য নিয়ে পড়াশুনা করছি শুধু চাকরির জন্য। টানা ৩ বছর ধরে বই পড়তে আসে সুদীপা মন্ডল। তিনি বলেন, নিয়মিত এখানে পত্রিকা ও বই পড়তে আসি তবে পাঠকের সংখ্যা খুব কম থাকে যার কারণে ভালো পড়তে পারি আবার সময় সময় পাঠক কম থাকায় ভালো লাগে না। এখানে মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক অনেক বই আছে যেগুলো নিয়মিত পড়ি। সব মিলিয়ে যখন যেটা ভালো তখন সেটা পড়ি।
সাতক্ষীরা সরকারি গণগ্রন্থাগারের সহকারী লাইব্রেরিয়ান জিয়ারুল ইসলাম বলেন, এখানে বিভিন্ন লেখকের মোট ৩৩৯৩৪টি বই সংগ্রহে রয়েছে। তাছাড়া শিশুদের খেলার জন্য রয়েছে শিশু কর্নার। এখানকার সদস্যরা কোনো কিছু জামানত রেখে ১৫দিনের জন্য বই বাসায় ও নিয়ে পড়তে পারবে। একই সঙ্গে ইংরেজি পত্রিকাসহ জাতীয় দৈনিক মোট ১৫টি সংবাদপত্র নিয়মিত নেওয়া হয়। উল্লেখযোগ্য পাঠকের উপস্থিতি না থাকার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আগের তুলনায় ইদানীং পাঠকদের আনাগোনা একটু বেড়েছে। তবে সামনে আরো বাড়বে বলে আশা করেন।
ফেব্রুয়ারি ০৯, ২০২৪, at ২০:০৮ (GMT+06) রূপ্র/আক/ঢাঅ/আ.হা.
শেয়ার করুন
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, রূপান্তর প্রতিদিন এর দায়ভার নেবে না।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, রূপান্তর প্রতিদিন এর দায়ভার নেবে না।