উত্তরা জসীমউদ্দীন ফ্লাইওভারের ওপর বাসের ধাক্কায় যুবক নিহত

আগের সংবাদ

সাতক্ষীরায় ডাম্পার ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হয়ে নিহত ছেলে, আহত বাবা

পরের সংবাদ

দীর্ঘদিন ধরেই জাবিতে চলছে মাদক ব্যবসা ও ধর্ষণ

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ৮, ২০২৪ , ৫:৫৯ অপরাহ্ণ আপডেট: ফেব্রুয়ারি ৮, ২০২৪ , ৫:৫৯ অপরাহ্ণ

মাদক ব্যবসার আড়ালে দীর্ঘদিন ধরেই জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) এলাকায় ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে বলে জানিয়েছেন র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন। তিনি বলেছেন, “জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বামীকে আটকে রেখে গণধর্ষণের ঘটনার দায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এড়াতে পারে না। কারণ সেখানে বিভিন্ন সময় মাদক, ধর্ষণসহ বিভিন্ন অপরাধের ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় বহিরাগতদের প্রবেশের দায় কর্তৃপক্ষকে নিতে হবে।”

বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজার র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

খন্দকার আল মঈন বলেন, “আমরা আগামী প্রজন্মকে জাহাঙ্গীরনগর ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বড় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি করার স্বপ্ন দেখি। এমনকি যারা মাদক কারবার, চোরাচালানসহ অবৈধ ব্যবসা করেন, সেই সব ব্যক্তিরাও খারাপ হলেও অভিভাবক হিসেবে নিজের সন্তানকেও বিদেশে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করান। আমরা চাই আমাদের সন্তানরা লেখাপড়া করুক এবং সুশিক্ষায় শিক্ষিত হোক।”

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “এই ঘটনার পর ভিকটিমের স্বামী মামলা করলে র‍্যাব মামলার প্রধান দুই পলাতক আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, মূল আসামি মামুন শুরুতে গার্মেন্টস পেশায় নিয়োজিত থাকলেও তার মূল ব্যবসা ছিল মাদক। আর সেই ব্যবসার মূল ক্ষেত্র ছিল জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়। মামুন প্রতি মাসে ৭ থেকে ৮ হাজার পিস ইয়াবা নিয়ে আসত কক্সবাজার থেকে। এই ইয়াবা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের সরবরাহ করত সে।”

তিনি আরো জানান, মামুনের তথ্যনুযায়ী গ্রেপ্তারকৃতরা অনেকদিন থেকেই মাদক ব্যবসা করে আসছেন। ভিকটিমের বাসায় সাবলেট হিসেবে বসবাস করতেন। ভিকটিম ও তার স্বামীর সঙ্গে মামুনের ৩ বছরের অধিক সময় ধরে মাদক ব্যবসার সম্পর্ক রয়েছে। তারা একসঙ্গেই একই বাসায় থাকতেন। ভিকটিমের স্বামী মামুনকে মাদক ব্যবসায় সাহায্য করতেন। প্রতি মাসে ৩ থেকে ৪ বার এভাবে কক্সবাজার থেকে ইয়াবা নিয়ে আসতো মামুন। জুতার ভেতরে ও মোবাইলের পাওয়ার ব্যাংকে করে প্রতিবার ২ থেকে আড়াই হাজার পিস ইয়াবা আনতো সে। এরই ধারাবাহিকতায় চলতি মাসের ২ তারিখেও ২ হাজার ৭০০ পিস ইয়াবা সে নিয়ে আসে ক্যাম্পাসে। কিন্তু বাসায় এতো মাদক রাখা নিরাপদ না ভেবে মামুন বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩১৭ নম্বর হলে থাকার সিদ্ধান্ত নেয়। পরবর্তীতে মামুন ভিকটিমের স্বামীকে বলে, ভিকটিমকে মামুনের জামা কাপড় নিয়ে হলে আসতে। তখন ভিকটিম মামুনের জামা কাপড় নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে আসেন। এরপরেই মামুন ও মোস্তাফিজ ভিকটিমকে নিয়ে কৌশলে ও বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি নির্জন এলাকায় ভেতরে নিয়ে যায় এবং গণধর্ষণ করে।

র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার এ পরিচালক আরও বলেন, “এরপরে তারা রুমে গিয়ে ভিকটিমের স্বামীকেও ভয়ভীতি দেখায়। এই ঘটনার সূত্র ধরে তাদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা শুরু হয়। সিসিটিভি ফুটেজে ভিকটিমের স্বামীকে ভিকটিমের সামনে মারধর করতেও দেখা যায়। এরপরই তারা থানায় গিয়ে অভিযোগ করেন। সেই অভিযোগের প্রেক্ষিতে র‍্যাব মামুন ও তার সহযোগী মুরাদকে গ্রেপ্তার করে। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।”

উল্লেখ্য, ধর্ষণের অভিযোগে আটক মূল আসামী মোস্তাফিজুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ৪৫তম ব্যাচের শিক্ষার্থী। তিনি মীর মশাররফ হোসেন হলের আবাসিক শিক্ষার্থী। ধর্ষণের ঘটনা জানাজানি হলে তৎক্ষণাৎ তাকে ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়।

সেসময় ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর, মীর মশাররফ হোসেন হলের পিছনের গেইটের তালে ভেঙ্গে মোস্তাফিজকে হল থেকে পালাতে সহযোগিতা করে শাখা ছাত্রলীগের অন্যান্য নেতা-কর্মীরা। তারা হলেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ৪৫তম ব্যাচের শিক্ষার্থী হাসানুজ্জামান, ৪৬তম ব্যাচের সাগর সিদ্দিকী ও উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের ৪৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থী সাব্বির হোসেন। ধর্ষণ সহযোগিতার দায়ে তাদের আটক করা হয়েছে।

ফেব্রুয়ারি ০৮, ২০২৪, at ১৭:৫৮ (GMT+06) রূপ্র/আক/ঢাঅ/আ.হা.

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, রূপান্তর প্রতিদিন এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়