মনিরামপুরে একটি বক্স কালভার্ট চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করার ২ দিন পরে ধসে পড়েছে। কালভার্টটির অবস্থান উপজেলার সরসকাঠি গ্রামে। গত বৃহস্পতিবার কালভার্টটির একটি স্থানে ছাদ ধসে নিচে পড়েছে। আর দুই স্থানে ছাদ দেবে গেছে। রাস্তার মাঝ বরাবর কালভার্ট ভেঙ্গে যাওয়ায় পথচারীদেরকে ঝুঁকি নিয়ে রাস্তায় চলাচল করতে হচ্ছে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার (পিআইও) দপ্তর কালভার্টটি নির্মাণে ৬৭ হাজার টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। রোহিতা ইউনিয়নের সরসকাঠি ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য বিল্লাল হোসেনকে প্রকল্পের সভাপতি করে ওই প্রামের একটি মাটির রাস্তায় কালভার্টটি নির্মাণ করা হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে কালভার্টটি নির্মাণে মেম্বর বরাদ্দের অর্ধেকেরও কম টাকা খরচ করে বাকি টাকা পকেটে ভরেছেন।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, প্রতিবার ৪০ দিনের কর্মসূচির কাজের সাথে প্রতি ইউনিয়নে একটি করে বক্স কালভার্ট নির্মাণে বরাদ্দ দেয় দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়। ৬৭ হাজার টাকা বরাদ্দে গেল মাসে রোহিতা ইউনিয়নের সরসকাঠি গ্রামে একটি কালভার্ট নির্মাণের কাজ শুরু হয়। প্রল্পের সভাপতি বিল্লাল মেম্বরকে এই কাজে দুই কিস্তিতে ৬৭ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, লম্বায় ২০ ফুট ও আড়ে ৫-৬ ফুট আকৃতির কালভার্ট নির্মাণের শুরুতে নিচে বালু দিয়ে ইটের সলিং বুনতে হয়। তারপর লোহার রড দিয়ে নিচে ৬ ইঞ্চি ঢালাই দেওয়ার কথা। এরপর দুইপাশে ইটের ১০ ইঞ্চি দেওয়াল গেঁথে উপরে ১২ মিলি মিটার লোহার রড ঘন করে বুনে ৬ ইঞ্চি ঢালাই দিতে হয়। উপর নিচে দুই বারই ঢালাই চলার সময় পিআইও দপ্তরের উপসহকারী প্রকৌশলী গোলাম সরোয়ার উপস্থিত থাকার কথা। স্থানীয়দের অভিযোগ উপজেলা থেকে কেউ কাজ দেখতি আসেনি। মেম্বর খেয়ালখুশিমত নামমাত্র রড সিমেন্ট দিয়ে কালভার্টটি নির্মাণ করেছেন।
সরসকাঠি ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য আমিনুল ইসলাম শিল্পি বলেন, কালভার্ট তৈরির সময় গ্রামের অনেকে কাজ দেখেছেন। শুনেছি কালভার্টে সুপারি গাছের চটা ব্যবহার করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, কালভার্টে ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা খরচ করা হয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বেল্লাল মেম্বর খরচ বাঁচাতে কর্মসূচির শ্রমিক দিয়ে কালভার্টের জন্য মাটি খুঁড়িয়েছেন। আবার কালভার্টের গাঁথুনির কাজও করিয়েছেন কর্মসূচির শ্রমিক দিয়ে।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে ইউপি সদস্য বিল্লাল হোসেন বলেন, ২২ দিন আগে কালভার্টের ছাদ ঢালাই দেওয়া হয়েছে। গত মঙ্গলবার সেন্টারিং খুলে কালভার্ট চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে। এর পরপরই ধান বোঝাই ট্রাক কালভার্টের উপর দিয়ে যাওয়ায় ছাদ ধসে পড়েছে। মেম্বর বেল্লাল হোসেন বলেন, কালভার্টের কাজে ৫৩ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। ধসে পড়ায় আবার নতুন করে কালভার্ট মেরামত করে দেব। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার দপ্তরের উপসহকারী প্রকৌশলী গোলাম সরোয়ার বলেন, রোহিতা ইউনিয়নে নতুন একটি কালভার্ট ধসে পড়ার খবর পাইছি। কালভার্টের ছাদের ঢালাই পুরোটা ভেঙ্গে নতুন করে নির্মাণের জন্য প্রকল্পের সভাপতি মেম্বর বিল্লাল হোসেনকে বলা হয়েছে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, রূপান্তর প্রতিদিন এর দায়ভার নেবে না।