জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান লিটনের পদত্যাগ ও ক্যাম্পাস ত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ ও কালো পতাকা মিছিল করেছে শাখা ছাত্রলীগের বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা।
শুক্রবার বিকাল ৪টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন চত্ত্বর থেকে কালো পতাকা হাতে মিছিল শুরু করেন নেতা-কর্মীরা। মিছিলটি নতুন কলা ভবন এলাকা ঘুরে শহীদ মিনারের পাদদেশে এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। মিছিলে সাতটি আবাসিক হলের তিন শতাধিক নেতা-কর্মী অংশগ্রহণ করেন।
সংক্ষিপ্ত সমাবেশে লিখিত বক্তব্যে শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি জাহিদুজ্জামান শাকিল বলেন, বিশ্ববিদ্যালয ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান লিটনের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, জমিদখল, দুর্নীতি, নিয়োগ বাণিজ্য, মাদক ব্যবসার সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ এবং নেতা-কর্মীদের সাথে অসদাচরণের প্রেক্ষিতে আমরা তাকে গত ২৩ জানুয়ারি ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছি। আমরা মনে করি, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ যে পবিত্র দায়িত্ব তার উপর দিয়েছিলেন সে তার জুলুম ও অবহেলার দ্বারা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগকে কলঙ্কিত করেছে।
ক্যাম্পাস অস্থিতিশীল করতে দুদিন আাগে হল কমিটি দেওয়া হয়েছে অভিযোগ করে নেতাকর্মীরা বলেন, পদ বাঁচাতে সিনিয়র নেতা-কর্মীদের সাথে সমন্বয় না করে লিটন দুটি হলের হল কমিটি গঠন করেছেন, সেখানে আমরা দেখেছি ত্যাগীদের বঞ্চিত করে বিবাহিত, অছাত্র, বহিষ্কৃত এবং ক্যাম্পাসে যাদের নামে বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের অভিযোগ রয়েছে তাদের দ্বারা তড়িঘরি করে হল কমিটি গঠন করেছেন। আমরা মনে করি, তিনি ক্যাম্পাসে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করার লক্ষ্যে এই হল কমিটি গঠন করেছেন। আমরা এসব কার্যক্রমের বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করছি এবং তার পদত্যাগের দাবি করছি।
প্রসঙ্গত, গত ২৩ জানুয়ারি দুপুরে লিটনের বিরুদ্ধে অন্য হলের নেতা-কর্মীদের খোঁজ না রাখা, হল কমিটি না দেওয়া, জমি দখলসহ নানা অভিযোগ তুলে তাঁকে ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন ছয় হলের ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা।
এ ঘটনার পর ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদ অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত করার জন্য গত ২৭ জানুয়ারি রাতে চার সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করে এবং ১০ দিনের সময় বেঁধে দেয়। তদন্ত চলমান অবস্থায় গত ৩১ জানুয়ারি রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ হাসিনা ও শেখ রাসেল হল ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণা করেন ক্যাম্পাস ছাত্রলীগের দুই শীর্ষ নেতা। ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা ও তদন্তাধীন অবস্থায় জ্যেষ্ঠ নেতাদের সঙ্গে সমন্বয় না করে দুই হলের কমিটি ঘোষণা করার প্রতিবাদে এবং লিটনকে ক্যাম্পাসছাড়া করতে একাংশের নেতা-কর্মীরা ওইদিন রাতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের সামনে দেড় ঘণ্টা অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন।
তদন্ত কার্যক্রম নিয়ে তদন্ত কমিটির সদস্য ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শহিদুল হক শিশির গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমরা এখনো আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরু করতে পারি নাই। খুব শিগগিরই তদন্ত কার্যক্রম শুরু করা হবে ও যথাসময়ে তদন্ত রিপোর্ট দপ্তর সেলে জমা দেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, রূপান্তর প্রতিদিন এর দায়ভার নেবে না।