বেনাপোল কাস্টমসে ৬ মাসে রাজস্ব ঘাটতি ৩২৮ কোটি টাকা

আগের সংবাদ

ঝিনাইদহে ঐতিহ্যবাহী গরুর গাড়ির দৌড় ও গ্রামীন মেলা অনুষ্ঠিত

পরের সংবাদ

ঝিনাইদহে ঐতিহ্যবাহী পিঠা উৎসব

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৮, ২০২৪ , ৯:৪৯ অপরাহ্ণ আপডেট: জানুয়ারি ১৮, ২০২৪ , ৯:৪৯ অপরাহ্ণ

কুয়াশাজড়ানো সকাল। স্নিগ্ধ পরিবেশ। চারিদিকে সবুজ-শ্যামল চোখজোড়ানো সৌন্দর্য। মৃদু বাতাস নিয়ে বাংলা বর্ষপঞ্জিকায় মাঘ তথা শীতকাল। নিদারুণ উৎসব ও সুস্বাদু খাবারের জন্য জনপ্রিয় এই সময়। বিশেষ করে পিঠেপুলি শীতে বাঙালির অবিচ্ছেদ্য অংশ। দেশের বিভিন্ন জায়গায় শুরু হয়েছে পিঠা উৎসব। সেই অভিজাত্যপূর্ণ নান্দনিক আয়োজন থেকে যেন পিছিয়ে নেই ঝিনাইদহ জেলা। এবার ঝিনাইদহের শৈলকুপার শেখপাড়া রাহাতননেসা গালর্স স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাস প্রাঙ্গণে পালিত হলো ভিন্নধর্মী ঐতিহ্যবাহী এই পিঠা উৎসব।

বৃহস্পতিবার সকাল ১২টায় সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়টির উদ্যোগে এই ‘পিঠা উৎসব’ পালন করা হয়। উৎসবে বিশেষভাবে গুরুত্ব পেয়েছে শিক্ষার্থীদের উদ্যোক্তা হবার আগ্রহ। শিক্ষার্থীরা নিজেদের শ্রম, মেধা, অর্থ ও সৃজন দিয়ে তৈরি করেছে বাহারি রঙের পিঠা। এসব নারী শিক্ষার্থীদের উৎসাহ দিয়েছে বিদ্যালয়ের শিক্ষকগণ ও স্ব স্ব অভিভাবকেরা। এই উৎসবপ্রাঙ্গণে সাজানো হয়েছিল প্রায় ৫টি স্টল যা সকল শিক্ষার্থী সমন্বয়ে।

প্রতিটি স্টলে পিঠা সুন্দরভাবে সাজিয়ে রাখা। যা সকলের আকৃষ্ট করবে সহজেই। নিদারুণ ঘ্রাণে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ পিঠাময় হয়ে উঠেছে। যার মাতোয়ারা ঘ্রাণ মনে হয় সার্থক করে তুললো উৎসবটিকে। পিঠার ঘ্রাণ নিতে অনুষ্ঠানটির সভাপতি অধ্যক্ষ মাসুদ রানা এর আমন্ত্রণ পেয়ে প্রধান অতিথি ও ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক ড. মামুনুর রহমান এসেছেন। এছাড়া বিদ্যালয় ও সংশ্লিষ্ট লোকদের স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতিতে যেন প্রেরণা পাচ্ছে শিক্ষার্থীরা। সকলের পিঠা খাওয়া, ছবি তোলা এসবেই ব্যস্ত।

পিঠা উৎসবে স্টলে ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে ভালো লাগলো। তাদের স্টলে ছিল বিভিন্ন রকমের বাহারি পিঠা। পাশাপাশি ছোট্ট বাচ্চাদের হাসিমুখ আর লাল-নীল আর হলুদ-সবুজ রঙের বাহারি সাঁজ। তারা স্কুলে যুক্ত হয়েছে মাত্র এক মাস। এরমধ্যে এই সুন্দর রূচিসম্পন্ন পিঠাউৎসব করতে পেরে খুবই আনন্দ লাগছে বলে জানিয়েছে। তারা জানিয়েছে এই উদ্যোগ অপ্রতিরোধ্য সাহস আর নারী উদ্যোক্তা হতে সাহায্য করবে ও প্রেরণা জোগাবে।শেখপাড়া রাহাতননেসা গালর্স স্কুলের শিক্ষার্থীরা বলছে, ‘এই পিঠা উৎসবে অংশগ্রহণ করতে পেরে আমরা আনন্দিত। আগে হয়তো কখনো এমন পিঠা বানানো হয়নি। আমরা নতুন অনেক কিছু শিখেছি। আমরা নিজেরাই পিঠা বানিয়ে নিয়ে আসছি নিজেরাই বিক্রি করছি। এই অনুষ্ঠান বিদ্যালয়ের উদ্যোগে ভবিষ্যতে আরো বড় আয়োজনে করা হবে বলে প্রত্যাশা রাখি।

এসময় প্রধান অতিথি হিসেবে অধ্যাপক ড. মামুনুর রহমান বলেন, ‘ডিজিটালাইজেশনের যুগে চমৎকার একটি উৎসবমুখর পরিবেশে পিঠা উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে যা বাঙালির শেকড়ের উৎসব। ছোট্ট শিক্ষার্থী থেকে সকলে যে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে যা সত্যিই প্রশংসনীয়।’

পিঠা উৎসবের সভাপতি ও বিদ্যালয়টির অধ্যক্ষ মাসুদ রানা বলেন, ‘অপসংস্কৃতির ভিড়ে দেখছি গ্রাম বাংলা ঐতিহ্যবাহী আয়োজনগুলো হারিয়ে যাচ্ছে। এই প্রজন্মকে তাদের শেকড়ের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়ার জন্য এই আয়োজন। বাচ্চারা যেন এখন থেকেই পিঠা পরিচিত হতে পারে, বানাতে পারে ও চিনতে পারে। ছোট্টবেলার গ্রামে পিঠা উৎসব হতো এটা যেন হারিয়ে না যায় এই প্রত্যাশা রেখে এই উৎসব। আমি সত্যিই অবাক হয়েছি ছোট্ট ছোট্ট বাচ্চাদের নিদারুণ আয়োজন দেখে। এতে তারা প্রতিষ্ঠানিক শিক্ষার পাশাপাশি সুপ্ত প্রতিভা বিকশিত করার সুযোগ পাচ্ছে। এভাবেই গড়ে উঠবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী স্মার্ট বাংলাদেশের স্মার্ট নাগরিক।”

জানুয়ারি ১৮, ২০২৪, at ১৯:১৫ (GMT+06) রূপ্র/আক/ঢাঅ/আ.হা.

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, রূপান্তর প্রতিদিন এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়