কেশবপুরে এমপি আজিজুল ইসলাম কে সংবর্ধনা প্রদান

আগের সংবাদ

ফাঁস দিয়ে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে আত্মহত্যা

পরের সংবাদ

কৃষিজমির মাটি কেটে বিক্রির হিড়িক, প্রশাসন নীরব

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৬, ২০২৪ , ১০:৫৪ অপরাহ্ণ আপডেট: জানুয়ারি ১৬, ২০২৪ , ১১:৩৫ অপরাহ্ণ

কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলায় কৃষি জমি ও রাস্তার পাড় খনন করে ভূপৃষ্ঠ বিক্রির মহোৎসব চলছে। ইটভাটাসহ বিভিন্ন বাণিজ্যিক প্রয়োজনে এসব মাটি কেটে বিক্রি করা হচ্ছে। রাতদিন সমানে মাটি কাটা হচ্ছে। কোথাও কোদাল আবার কোথাও ভেকু মেশিন দিয়ে মাটি কাটার হিড়িক পড়েছে। নিয়মবহির্ভুতভাবে এই মাটি তোলার ব্যাপারে স্থানীয় প্রশাসন রয়েছে সম্পূর্ণ নীরব ভূমিকায়।

উপজেলার আড়িয়া গ্রামে ফসলের মাঠের মাঝখানে কৃষি জমিতে এবং বাহিরমাদী সদরঘাট থেকে আলীনগর রাস্তার পাড় ঘেঁষে ফসলের মাঠ সংলগ্ন জায়গায় দিনের পর দিন চলে আসছে মাটিকাটার মচ্ছব। সচেতন এলাকাবাসী মাটি কাটা বন্ধের জন্য নানা চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছেন। এদিকে মাটি কেটে শ্যালো ইঞ্জিনচালিত অবৈধ গাড়িতে করে যেসব রাস্তা দিয়ে নেয়া হয়, সেসব রাস্তায় মাটি পড়ে থাকায় অনেক সময় ছোটবড় দুর্ঘটনা ঘটছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, আড়িয়া মাঠে ২০ থেকে ২৫টি শ্যালোর গাড়িতে করে মাটি পরিবহন করা হচ্ছে। ভেকু মেশিনে (মাটি কাটা যন্ত্রের প্রচলিত নাম) মাটি কেটে ফসলের ক্ষেতের মাঝ দিয়ে চওড়া রাস্তা করে চলছে মাটির গাড়ি। জানা গেছে, এই মাঠ থেকে দিনে অন্তত ২শর বেশি গাড়ি মাটি কাটা হচ্ছে। এলাকাবাসীর দাবি, একটি কবরস্থানে প্রয়োজনের নাম করে মাটি কাটা শুরু করলেও পরে এটি নিয়ে ব্যবসা চলছে। ড্রাম ট্রাক (ভারি মালবাহী বড় গাড়ির প্রচলিত নাম) আর শ্যালোর গাড়ি ভরে এসব মাটি যাচ্ছে ইটভাটাসহ নানা জায়গায়।

দৌলতপুর উপজেলায় কৃষি জমির মাটি কেটে রাতের আধারে পরিবহন করা হচ্ছে। ছবি: রূপান্তর প্রতিদিন

অন্যদিকে উপজেলার বাহিরমাদী ও আলীনগর এলাকাবাসী জানিয়েছেন, কৃষি জমির মাটি উত্তোলন বন্ধের ব্যাপারে পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য ৯৯৯ এ ফোন করা হলে ওই এলাকায় সাময়িকভাবে মাটি কাটা বন্ধ রাখা হয়েছিল। কয়েকদিন যেতে না যেতেই আবারো মাটি কাটার উৎসব শুরু হয়েছে। সরেজমিনে এলাকাটিতে দেখা যায়, রাস্তার পাড় থেকে গভীর করে মাটি কাটা হয়েছে মাইলের পর মাইল। রাতের আঁধারে এসব মাটি কেটে অবৈধ শ্যালো ইঞ্জিনচালিত গাড়ি ও ট্রাকে পরিবহন করা হয়। গাড়ি অনুযায়ী মাটির দাম নির্ধারণ করা হয়।

স্থানীয় প্রশাসনের নীরবতায় উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় নিয়মবহির্ভুতভাবে প্রতিনিয়ত কোদাল ও ভেকু মেশিন দিয়ে সমানে ভূপৃষ্ঠ কেটে বিক্রির মহোৎসব অব্যাহত রয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের নাকের ডগার ওপর দিয়ে এসব মাটি পরিবহনের গাড়ি চলাচল করলেও অজ্ঞাত কারণে তারা দেখেও না দেখার ভান করে বসে রয়েছেন। এসব মাটির মূল বাণিজ্য দৌলতপুর ও পার্শ্ববর্তী দুই উপজেলার ইটভাটায়। এছাড়া ইটভাটাগুলোতে মাটির তৈরি ইট পোড়ানো হয় কয়লার বদলে কাঠের আগুনে।

দৌলতপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি), নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. শাহীদুল ইসলাম বলেন, বালু মহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইনে টপ সয়েল বা ভূপৃষ্ঠ কাটার বিষয়ে সুস্পষ্ট নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এটি আইনিভাবে দণ্ডনীয় অপরাধ। মাটি কাটার ঘটনা বন্ধের জন্য আমরা মাঠপর্যায়ে কাজ করছি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, রূপান্তর প্রতিদিন এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়