ঝিনাইদহে বেশ কিছু দিন নিম্ন-তাপমাত্রা, ঘন কুয়াশা, ঠান্ডায় বোরোধানের বীজতলা কোল্ড ইনজুরিতে আক্রান্ত হচ্ছে। ধানের চারাগুলো হলুদাভাব সৃষ্টি হয়েছে। কোন কোন বীজতলায় চরম আকার ধারন করেছে। কৃষক বীজতলা রক্ষায় ইউরিয়া সারসহ নানা ধরনের সার ছিটিয়ে দিচ্ছেন। আবার কেউ বীজতলা পলিথিন দিয়ে ঢেকে রাখছে।
কৃষকেরা বলছে, বোরোধানের বীজতলা তৈরির শুরুতেই বৃষ্টির কারণে অনেক কৃষকের ক্ষতি হয়েছে। বিশেষ করে নদীর পাড়ে তৈরি বীজতলা পানিতে তলিয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে। যে বীজতলা গুলো আছে, তার মধ্যে থেকে নষ্ট হলে চারার ঘাটতির আশঙ্কা করছে বোরোধান আবাদের কৃষকরা।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সাঈদ সিদ্দিকী বলেন, জেলায় ৪ হাজার ৪১৯ হেক্টর বোরোধানের বীজতলা রয়েছে। যার মধ্যে উফসি জাত ৪ হাজার ৩১ হেক্টর, হাইব্রিড ৩ শ ৩৮ হেক্টর। কৃষকরা বোরোধান লাগানো শুরু করেছে।
ঝিনাইদহ সদর উপজেলা বাজার গোপালপুরের কৃষক আমিরুল ইসলাম বলেন, বোরো বীজতলা সাধারণত চিত্রা নদীর পাড়ে তৈরি করে এই এলাকার কৃষকরা। কিন্তু মৌসুমের শুরুতেই বীজতলায় বীজ ছিটানোর কয়েকদিনের মধ্যে বৃষ্টিতে বীজতলা তলিয়ে যায়। তখন বাজার গোপালপুর, সারুটিয়া, রুদ্রপুর, দূর্গাপুর, সুতিগা, তালসার, ওয়াড়িয়াসহ আশেপাশে কয়েক গ্রামের কযেক হাজার কৃষকের বীজতলা নষ্ট হয়ে যায়। পরে স্যালোমেশিং, মোটরের আওতায় শতক প্রতি ৫ থেকে ৬ শ টাকা জমি কিনে বীজতলা তৈরি করতে হয়। এখন আবার ঘন কুয়াশা, শীত, দিনের বেশি সময়ে রোদের দেখা নেই। বীজতলার চারাগুলো হলুদাভাব হয়ে গেছে। অনেকের নষ্ট হয়েছে শুনছি। যদি বীজতলা নষ্ট হয়ে যায়, তাহলে চারার অভাব পড়তে পারে বলে তিনি জানান।
এবিষয়ে ঝিনাইদহ সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নূর-এ-নবী জানান, এমতাবস্থায় প্রতিদিন সন্ধায় বীজতলা ডুবিয়ে সেচ দিয়ে, সকালে পানি বের করে দিতে হবে। আবহাওয়া কুয়াশাচ্ছন্ন হলে স্বচ্ছ পলিথিন দিয়ে রাতদিন ঢেকে রাখে, রোদ হলে পলিথিন উঠিয়ে ফেলতে হবে। সকালে দড়ি টেনে শিশির ঝরিয়ে দিতে হবে। তাছাড়া প্রতি শতাংশ বীজতলায় ৪ শ গ্রাম জিপসাম, ২শ ৮০ গ্রাম ইউরিয়া, ২কেজি ছাই প্রয়োগ করলে উপকার পাওয়া যায়। তাছাড়া চারা ধ্বসা ও চারা মরা রোগের জন্য মেনকোজেব প্রতি লিটার পানিতে ২গ্রাম হারে মিশিয়ে বীজতলায় স্প্রে করতে হবে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, রূপান্তর প্রতিদিন এর দায়ভার নেবে না।