মাগুরার মহম্মদপুর উপজলার বালিদিয়া ইউনিয়নের বড়রিয়া গ্রামে শতবর্ষী গ্রামীণ মেলা এবং গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্য ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার বিকালে ঐতিহ্যবাহী এই মেলা ও ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। দক্ষিন-পশ্চিম অঞ্চলের সর্ববৃহৎ এই মেলা ও ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতা প্রতি বছর বাংলা পৌষ মাসের ২৮ তারিখে বসে। গননায় মূল মেলা ২৮শে পৌষ হলেও তার আগে পিছে প্রায় পনের দিন ধরে চলে এই মেলার আমেজ।
এলাকার বয়স্ক মানুষের কাছে জানা যায়, এই মেলা চলছে একশ বছরেরও বেশী ধরে, যা খুলনা বিভাগের সর্ববৃহৎ। এ মেলাকে ঘিরে উৎসব আমেজে মেতে ওঠে বালিদিয়া, মহম্মদপুর ও রাজাপুর ইউনিয়নসহ আশপাশের ইউনিয়নের প্রায় ২০টি গ্রামের মানুষ। প্রায় তিন বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে এই মেলায় বসে মাছ-মাংশ, মিষ্টির দোকানসহ বাঁশ, বেত ও মৃৎশিল্পিদের তৈরী নানা রকম খেলনা ও প্রসাধনীর স্টল। এছাড়াও মোলায় আসে ঢাকা, চট্রগ্রাম, খুলনাসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে রঙবেরঙের ফার্ণিচারের দোকান।
একশ বছরেরও বেশী সময় ধরে চলে আসা ঐতিহ্যবাহী মেলার মূল আকর্ষণ ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতা, সাপখেলা, নাগরদোলা, পুতুল নাচ, যাদু ও কমিডিয়ান শিল্পিদের উপস্থিতি। তবে শিশু-কিশোর, ছেলে-বুড়ো, নারীসহ সব শ্রেনি পেশার মানুষের একটাই উদ্দেশ্য গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যবাহী ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতা উপভোগ করা। তাই দূরদূরান্ত থেকে আসা নানা শ্রেনিপেশার মানুষ মাঠের মধ্যে রাস্তার পাশে এক কাতারে সামিল হয়েছে দুচোখ ভরে ঐতিহ্যবাহী সেই ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতা উপভোগ করবে বলে।
প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহনের জন্য দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ঘোড়া আসে। দুপুর ২ ঘটিকায় ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতা শুরুর আগমুহুর্তে ঘোড়ার মালিক, ফকির ও ছোয়ার ঘোড়াকে তার পথপরিক্রমা দেখাতে ব্যাস্ত। এরপর শুরু হয় কাঙ্খিত সেই ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতা। শীতের বিকালে মিস্টি রোদে অন্যরকম এক আনন্দ উৎসবে মেতে ওঠে লাখও দর্শক। ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতা শেষে সভাপতিসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলেদেন।
বালিদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের প্রাক্তন চেয়ারম্যান ও মেলা কমিটির সভাপতি প্রভাষক পান্নু মোল্যা জানান, শত বছরের এই মেলা দেখতে অশপাশের কয়েক জেলার নানা শ্রেনিপেশার লাখো মানুষের আগমণ ঘটে। প্রশাসনসহ এলাকার সকলের সহযোগিতায় শান্তিপূর্ণভাবেই মেলার কার্যক্রম শেষ হয়েছে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, রূপান্তর প্রতিদিন এর দায়ভার নেবে না।