পরিবহন দপ্তরের প্রশাসকের বিরুদ্ধে অসৌজন্যমুলক আচারণের অভিযোগ
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (যবিপ্রবি)‘র পরিবহন দপ্তরের পরিবহন প্রশাসক প্রফেসর ড. জাফিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে পরিবহন শ্রমিকদের সাথে অসৌজন্যমুল আচারণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। তার আচারনে অপমানিত হয়ে শরীরে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র ড্রাইভার মফিজুর রহমান। তিনি বর্তমানে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে মৃত্যু শয্যায়।
এ ঘটনাসহ পরিবহন দপ্তরের প্রশাসক প্রফেসর ড. জাফিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে অসৌজন্যমুল আচারণের অভিযোগ এনে কর্মচারি সমিতির মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বরাবর তার অপসারণের দাবিতে গতকাল শনিবার এক অভিযোগ দিয়েছেন ভূক্তভোগীরা।
অভিযোগে বলা হয়েছে, পরিবহন দপ্তরের পরিবহন প্রশাসক প্রফেসর ড. জাফিরুল ইসলাম যোগদান করার পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিবহন দপ্তরের কর্মরত ড্রাইভার-হেলপারগণে‘র সাথে বিভিন্ন সময় অসৌজন্য মূলক আচারণ করেন। তেল মাপা কমিটি কর্তৃক মাইলেজ নির্ধরণ করে দেওয়ার পরেও পরিবহন প্রশাসক বিভিন্ন সময় কর্মরত ড্রাইভার-হেলপারদের তেল চোর বলে।
এমনকি তাঁরা মসজিদে নামাজ পড়তে গেলেও বলে, তোরা তো তেল চোর তোদের নামজ পড়ে কি হবে? এভাবে তারেরকে বিভিন্নভাবে হেয়প্রতিপন্ন করে। প্রত্যেক ড্রাইভার-হেলপারদের সাথে তুই-তোকারিসহ অকথ্য ভাষায় গালি-গালাজ করে। তার ব্যক্তিগত কাজে গাড়ি ব্যবহারের ক্ষেত্রে পরিবহন দপ্তরের ড্রাইভার-মেকানিক-হেলপার ব্যবহার করেন।
এছাড়া একজন সিনিয়র ড্রাইভারকে বিনা অপরাধে গাড়ি থেকে নামিয়ে দেওয়া হয়। এ ঘটনায় সিনিয়র ড্রাইভার মফিজুর রহমানকে অফিসের দায়িত্ব দেওয়া হলে সে মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়ে এবং অপমানিত হওয়ায় রাতে গায়ে আগুন ধরিয়ে আত্মহত্যা করতে যায়। মফিজুর বেঁচে গেলেও এখন ঢাকা মেডিকেলে (শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট) মৃত্যু শয্যায়।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, অগ্নিদগ্ধ মফিজুর হাসপাতালে যাওয়ার সময় তার স্ত্রী‘কে বলে যায় আমার যদি কিছু হয় তুমি যানবাহন কর্মকর্তা ও পরিবহন প্রশাসকের নামে মামলা করবে।
অভিযোগে আরো বলা হয়, সিনিয়র হেলপার সামিম আহমেদকে যানবাহন কর্মকর্তা সিনিয়র ড্রাইভার গোলাম মোস্তফা লাল্টুকে গাড়ির কাজ করাকে কেন্দ্র করে গায়ে হাত তোলার কথা বলে। লাল্টুকে মারলে এক সপ্তাহের মধ্যে গাড়ির কাজ করা হবে।
কয়েকটি বিছিন্ন ঘটনা ছাড়া পরিবহন দপ্তরের ড্রাইভার-হেলপারগণ রাত-দিন নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে বলে দাবি করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিবহন দপ্তরের কর্মরত ড্রাইভার-হেলপারগণ। বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিবহন দপ্তরের কর্মরত ড্রাইভার-হেলপারগণে‘র পক্ষে অভিযোগে স্বাক্ষর করেন, জুয়েল ও লাল্টু।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন দপ্তরের পরিবহন প্রশাসক প্রফেসর ড. জাফিরুল ইসলাম অভিয়োগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সকল অভিযোগ মিথ্যা এবং ভিত্তিহীন। তিনি বলেন, আসলে ড্রাইভার মফিজুর রহমানের চরিত্র ভাল না। কিছুদিন আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক হেলপারের স্ত্রীকে নিয়ে পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করেছে। এখন তার দুই স্ত্রী। এসকল বিষয় নিয়ে সে মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়ে পারিবারিক কারনে গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যা করার চেষ্টা করতে পারে।
এ বিষয়ে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসনে বলেন, আমরা অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। এবং তাঁর চিকিৎসার জন্য খরচ প্রয়োজন হলে আমরা তাকে সাহায্য সহযোগীতা করব।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, রূপান্তর প্রতিদিন এর দায়ভার নেবে না।