যশোরের মনিরামপুরের খেদাপাড়া ইউনিয়নের একটি রাস্তায় কাজ করছেন অতি দরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচি প্রকল্পের ৪২ জন শ্রমিক। গেল মাসের ১৮ তারিখ থেকে তাঁরা ইউনিয়ের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের রঘুনাথপুর গ্রামে কাচা রাস্তা সংস্কার কাজ করে আসছেন। আজ শনিবার হঠাৎ সেই শ্রমিকদের রাস্তা ছেড়ে কাজ করতে দেখা গেছে ইউনিয়ের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মাসুদকাটি গ্রামে ব্যক্তি উদ্যোগে গড়ে ওঠা একটি কওমি মাদরাসায়।
খোঁজ নিতে জানা গেল, মাদরাসার প্রধানের সাথে যোগসাজশে ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মুনসুর রহমান দুই দিনের জন্য শ্রমিকদের সেখানে কাজে পাঠিয়েছেন। এই ব্যাপারে মেম্বর মুনসুর প্রকল্পের সভাপতি ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত নারী সদস্য (৪,৬ ও ৭) সারমিন বেগমের অনুমতি না নিয়ে সেখানে শ্রমিকদের পাঠিয়েছেন বলে অভিযোগ। প্রকল্পের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নিজ ক্ষমতাবলে তিনি কাজটি করেছেন। আজ শনিবার সকাল ৯টায় সরেজমিন মামুদকাটি মদিনাবাগ কারিমিয়া মাদরাসায় শ্রমিকদের কাজ করতে দেখা গেছে। এর আগেও গেল প্রকল্পে
মেম্বর মনসুর শ্রমিকদের দিয়ে মামুদকাটি গ্রামে ব্যক্তি উদ্যোগে গড়ে ওঠা আর একটি কওমী মাদরাসায় কয়েক দিন কাজ করিয়েছেন বলে অভিযোগ মিলেছে।
শ্রমিকদের সরদার মীর কাশেম বলেন, মুনসুর মেম্বর গত সপ্তাহে আমাদের বলে দেছেন শনিবার থেকে মামুদকাটি মাদরাসায় কাজ হবে। সে জন্য সকালে শ্রমিকদের নিয়ে মাদরাসায় কাজে আইছি। অভিযুক্ত ইউপি সদস্য মুনসুর রহমান বলেন, মাদরাসার প্রধান গোলাম রব্বানী আমার কাছে এসে মাদরাসার নির্মাণাধীন নতুন ভবনে মাটি দেওয়ার জন্য শ্রমিক চান। তিনি চেয়ারম্যানের কাছেও গিছিলেন। সেই জন্য আজ শনিবার সকালে শ্রমিক পাঠাইছি। কাজ শুরুর কিছুক্ষণ পরে
জানতে পারলাম সেখানে সাংবাদিক গেছেন। এর পরপরই আমি শ্রমিক তুলে এনেছি। মাদরাসার প্রধান গোলাম রব্বানী বলেন, মাদরাসার নতুন ভবনের ভিতরে মাটি ভরাটের জন্য মুনসুর মেম্বর ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে বলেছিলাম। অনুরোধ রেখে তাঁরা শ্রমিক পাঠিয়েছেন।
কর্মসূচি প্রকল্পের সভাপতি সংরক্ষিত ইউপি সদস্য শারমিন বেগম বলেন, আমি আত্মীয়র বাড়ি আছি। মুনসুর মেম্বার কাজ দেখছেন। শ্রমিকরা রাস্তার কাজ রেখে অন্য জায়গায় কাজ করার কথা আমাকে জানানো হয়নি।
এ বিষয়ে জানতে খেদাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল আলিম জিন্নাহকে একাধিকার কলা করা হয়েছে। তিনি ফোন ধরেননি। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার দপ্তরের উপ সহকারী প্রকৌশলী গোলাম সরোয়ার কর্মসূচির কাজ দেখভালের দায়িত্বে আছেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তিনি ঠিকঠাক প্রকল্পের কাজ তদারকি করেন না। জানতে চাইলে গোলাম সরোয়ার বলেন, উপজেলায় ৫০ টির বেশি কর্মসূচি প্রকল্পে শ্রমিকরা কাজ করছেন। আমার একার পক্ষে সব তদারকি করা সম্ভাব না।
মনিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জাকির হোসেন বলেন, প্রকল্পের বাইরে কাজ করালে মেম্বরকে নিজ থেকে শ্রমিকদের মজুরি দিতে হবে। আমি বিষয়টি দেখছি।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, রূপান্তর প্রতিদিন এর দায়ভার নেবে না।