দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যশোরের ৬টি আসনে সাতজন প্রার্থী তাদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। রবিবার সাতজন প্রার্থী মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। এর মধ্যে জাকের পার্টির ৫ জন ও যশোর-৫ (মণিরামপুর) আসনের দুইজন স্বতন্ত্র প্রার্থী তাদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন।
এদিকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যশোরের ৬টি আসনের মধ্যে পাঁচটিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের সামনে শক্ত প্রতিপক্ষ হিসেবে হাজির হয়েছে দলীয় স্বতন্ত্র প্রার্থী। আরেকটি আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে। এ আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য রণজিত কুমার রায় স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ভোটের লড়াইয়ে আছেন।
নৌকার প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়ায় নতুন মেরুকরণ চলছে। প্রত্যেক আসনেই আওয়ামী লীগের শক্তিশালী স্বতন্ত্র প্রার্থী থাকায় নির্বাচন জমজমাট হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
জানা যায়, যাচাই-বাছাই ও আপিল শুনানি নিষ্পত্তির পর যশোরের ৬টি সংসদীয় আসনে মোট প্রার্থী ছিলেন ৩৮ জন। রোববার জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের আবেদন করেন সাতজন। তারা হলেন- যশোর-৫ (মণিরামপুর) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী আমজাদ হোসেন লাভলু ও হুমায়ন সাদাব, জাকের পার্টির যশোর-১ (শার্শা) আসনে সবুর খান, যশোর-২ (চৌগাছা-ঝিকরগাছা) আসনে সাফারুজ্জামান, যশোর-৩ (সদর) আসনের মহিবুল ইসলাম, যশোর-৪ (অভয়নগর-বাঘারপাড়া) আসনের লিটন মোল্লা, যশোর-৬ (কেশবপুর) আসনের সাইদুজ্জামান।
যশোরের ৬টি আসনের মধ্যে পাঁচটিতেই স্বতন্ত্র প্রার্থীর মোড়কে নৌকার মুখোমুখি হয়েছেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীরা। প্রতিটি আসনেই নৌকার বিপক্ষে শক্তিশালী প্রার্থী হিসেবে স্বতন্ত্র প্রার্থীরাই লড়বেন। অন্য রাজনৈতিক দলের প্রার্থী থাকলেও ভোটের রাজনীতিতে তাদের অবস্থান ‘দুর্বল’ হিসেবেই পরিচিত।
যশোর-১ (শার্শা) আসনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী তিনবারের এমপি শেখ আফিল উদ্দিনের বিপক্ষে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়বেন জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও বেনাপোল সাবেক পৌর মেয়র আশরাফুল আলম লিটন। ইতোমধ্যে পাল্টাপাল্টি অভিযোগে উত্তাপ ছড়িয়েছে এ আসনের ভোটের রাজনীতি।
যশোর-২ (ঝিকরগাছা-চৌগাছা) আসনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী ডা. তৌহিদুজ্জামান তুহিন বিপক্ষে শক্ত প্রার্থী হিসেবে সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম ও চৌগাছা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এসএম হাবিবুর রহমান।
যশোর-৩ (সদর) আসনে আওয়ামী লীগের কাজী নাবিল আহমেদের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী নিজ দলের স্বতন্ত্র প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহিত কুমার নাথ। নাবিল আহমেদের বিপক্ষে মোহিত কুমার নাথ স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ায় নয়া সমীকরণ চলছে।
যশোর-৪ (বাঘারপাড়া-অভয়নগর) আসনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী এনামুল হক বাবুল। তবে তার ঋণখেলাপির অভিযোগে প্রার্থিতা অবৈধ ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। সোমবার আদালতের মাধ্যমে এ আসনে ভাগ্য নির্ধারণ হবে এই প্রার্থীর। যদিও আসনটিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন বর্তমান সংসদ সদস্য রণজিত রায়।
যশোর-৫ (মণিরামপুর) আসনে আওয়ামী লীগের মনোনীত স্বপন ভট্টাচার্যের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী ইয়াকুব আলী। এ আসনে আরও দুই স্বতন্ত্র প্রার্থী থাকলেও মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিনে তারা প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। ফলে এ আসনে নৌকার স্বপন ভট্টাচার্য ও স্বতন্ত্র প্রার্থী ইয়াকুব আলীর লড়াইয়ের আভাস মিলেছে।
যশোর-৬ (কেশবপুর) আসনে আওয়ামী লীগের শাহীন চাকলাদারের বিপক্ষে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান এইচএম আমির হোসেন ও সদ্য জেলা পরিষদের পদত্যাগী সদস্য আজিজুল ইসলাম। এখানে নৌকার বিপক্ষে এইচএম আমির হোসেন শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী বলে মনে করছেন নেতাকর্মীরা।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, রূপান্তর প্রতিদিন এর দায়ভার নেবে না।