অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তাদের নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিয়ে হাইকোর্টের রায়

আগের সংবাদ

সাতক্ষীরায় চলতি মৌসুমে চাল উৎপাদন বেড়েছে

পরের সংবাদ

ডিএনএ টেষ্টের পর ৩ মাসের শিশু সন্তান পেল পিতৃ পরিচয়

কোর্ট চত্বরে ধর্ষণ মামলার আসামীর বিয়ে

প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৪, ২০২৩ , ৫:১৪ অপরাহ্ণ আপডেট: ডিসেম্বর ৪, ২০২৩ , ৫:১৪ অপরাহ্ণ

ঝিনাইদহ আদালতের ভ্যাকেশনাল কোর্ট এক যুগান্তকারী রায় প্রদান করেছেন। আজ দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক নাজিমুদ্দৌলা এ রায় প্রদান করেন। সেখানে আসামী মিকাইল হোসেন গত ২০২২ সালের ২০ নভেম্বর ধর্ষণ করে একই গ্রামের তানিয়া ইয়াসমিন রিয়াকে। এ ঘটানয় ঐ দিনই রিয়ার মা তাসলিমা বেগম বাদি হয়ে ঝিনাইদহের কোটচাদপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। সেই মামলায় ৫ লক্ষ টাকা দেনমোহরে বিয়ের শর্তে জামিন পান মিকাইল। কোর্ট চত্বরেই সম্পন্ন হয় মিকাইল-তানিয়ার বিবাহ। পিতৃত্বের স্বীকৃতি পায় তাদের ওরসজাত ৩ মাসের সন্তান আলিফ।

সরেজমিনে যেয়ে দেখা মেলে, মায়ের কোলে কোর্ট চত্বরে ঘুমাচ্ছে মাত্র ৩ মাসের আলিফ। সে জানেই না এ পৃথিবীতে সে পরিচয়হীন হিসাবে জন্মগ্রহণ করেছিল। তার বাবা-মায়ের বিয়ে হলো তারই জন্মের তিন মাস পর । এমনই এক চাঞ্চল্যকর ও ব্যতিক্রমী বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে ঝিনাইদহ কোর্ট চত্বরে। ছোট্ট শিশুর বাবা-মায়ের সম্পর্কের এমন সমাধানে সবাই খুব খুশী।

মামলার বিবরনে জানাযায়, জেলার কোটচাঁদপুর থানার এলাঙ্গী ইউনিয়নের এলাঙ্গী গ্রামের বাসিন্দা মৃত বাহাজ্জেল শেখ-তাসলিমা বেগম দম্পতির বড় মেয়ে তানিয়া ইয়াসমীন রিয়াকে প্রায় একবছর পূর্বে ভয় দেখিয়ে ও ফুসলিয়ে বিভিন্ন সময় ধর্ষণ করে একই গ্রামের মিজানুর রহমানের ছেলে মিকাইল হোসেন। এরপর মেয়ের মা তাসলিমা বেগম কোটচাদপুর থানায় একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করে। সেই মামলার প্রেক্ষিতে আসামি মিকাইলকে গ্রেফতার করে পুলিশ। কিন্তু মিকাইল ও তার পরিবার এ ঘটনাকে পরোপুরি অস্বীকার করে আসছিল। অন্তসত্বা হয়ে পড়ে তানিয়া। এবং গত তিন মাস আগে একটি ফুটফুটে ছেলে সন্তানের জন্ম দেয় তানিয়া। একপর্যায়ে বাদী পক্ষের আইনজীবীর দাবিতে ডিএনএ টেষ্টের অনুমতি প্রদান করে আদালত। সেখানে ডিএনএ টেষ্টে তানিয়ার গর্ভজাত সন্তান আলিফ যে মিকাইলের সন্তান তা প্রমাণিত হয়। এরপর আদালত আলিফের ভবিষ্যৎ বিবেচনায় ও বাদী-বিবাদির মধ্যস্থতায় ৫ লক্ষ টাকা দেনমোহরে বিবাহ সম্পন্ন করে জামিনে মিকাইলকে মুক্তি প্রদান করে।

মিকাইলের বাবা মিজানুর রহমান জানান, কোর্ট যে নির্দেশনা প্রদান করেছে তা আমরা মেনে নিয়েছি। ছেলে-বৌ সংসার করুক তাতেই আমরা খুঁশি।

সাধারণ মানুষ জানান, এ ধরনের ঘটনা সাত্যিই সচরাচর দেখা যায় না। আদালত যুগান্তকারী রায় প্রদান করেছে। একদিকে মেয়েটি তার ঠিকানা পেল অন্যদিকে ছোট্ট বাচ্চাটি তার পিতৃ পরিচয় পেল।

তানিয়া ইয়াসমিন রিয়া জানান, আমি এ রায়ে খুশি। তবে ভবিষ্যতে সংসার সুখের হবে কিনা তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।

বিবাদী পক্ষের আইনজীবী এ্যাড. মন্জুরুল ইসলাম জানান, কোর্টের রায় যা হয়েছে তাতে পক্ষপাতিত্বের কোন সুযোগ নেই। বাদী পক্ষের আইনজীবী এ্যাড. সরদার মনিরুল ইসলাম মিল্টন জানান, এ ধরনের চাঞ্চল্যকর মামলায় যুগান্তকারী রায় প্রাদান করেছেন আদালত। কারণ এ ধরনের রায় সত্যিই বিরল। আমরা সাবই খুশী।

ডিসেম্বর ০৪ :২০২৩ : at, ১৭:১৫(GMT+06)আ.হা.

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, রূপান্তর প্রতিদিন এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়