আমিও সরকারি লোক সরকারের বাইরে না- প্রধান শিক্ষক
স্কুলের টিন, শিক্ষার্থীদের কম্পিউটার শিক্ষকদের বাড়ি এমনি অভিযোগ উঠেছে যশোর সদর উপজেলার দেয়াড়া ইউনিয়নের আলমনগর ২৩৩নং আলমনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সহকারি শিক্ষকের বিরুদ্ধে।
স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুর ইসলাম ও সহকারি শিক্ষক পপি খাতুনের বাড়িতে স্কুলের টিন। এছাড়া স্কুলের কাজে ব্যবহৃত ল্যাপটপ ও কম্পিউটার স্কুলের কাজে ব্যবহার না করে বাড়ি নিয়ে নিজেদের কাজে ব্যবহার করছেন।
স্কুলের পুরাতন ভবনে নতুন টিন লাগানোর অনিয়মসহ নানা অভিযোগ উঠেছে স্কুলটির প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। অপরদিকে পুরাতন ভবনের যে টিন লাগানো হয়েছে সেটাও আবার নিম্নমানের টিন। স্কুলের টিন খুলে প্রধান শিক্ষক নিয়েছেন ৩০ পিস আর সহকারি শিক্ষক পপি খাতুন নিয়েছেন ৫ পিস। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় ব্যপক কানাঘুঁষা চলছে।
প্রধান শিক্ষক নুর ইসলামের বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের মালজিনিস তছরুফসহ নানান অভিযোগ রয়েছে। তিনি অদৃশ্য শক্তির বলে সরকারি কোন নিয়মনিতির তোয়াক্কা করছেননা। এলাকায় চাউড় আছে শিক্ষক নুর ইসলাম সহকারি শিক্ষা অফিসার হারুন উর রশিদ ও ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও স্থানীয় ইউপি সদস্য মাসুদ রানা ফন্টুর যোগসাজসে এহেন নিয়মবহির্ভুত কাজে লিপ্ত রয়েছেন।
স্থানীয়রা জানান, মাসুদ রানা ফন্টু ও প্রধান শিক্ষক নুর ইসলাম বিদ্যালয়ের মানসম্মান ক্ষুন্ন করছেন। পুরাতন ভবন থেকে খুলে রাখা টিন বাড়িতে নিয়ে যায়। এছাড়া স্কুলটি মেইন সড়ক থেকে একটু ভিতরে হওয়ার কারনে স্কুলে তেমন কোন কর্মকর্তারা পরিদর্শনে আসেননা। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষক নিয়মিত ক্লাস নেয় না। তারা তাদের খেয়াল খুশিতে ক্লাস করান।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক অভিভাবক জানান, প্রধান শিক্ষক ঠিকমত স্কুলে আসেননা। স্কুলে আসলেও অফিসের কাজ দেখিয়ে বেশি সময় বাইরে থাকেন। লেখা পড়ার মানও তেমন ভালোনা। আশেপাশে আর স্কুল না থাকার কারনে বাধ্য হয়ে এই স্কুলে পড়াতে হচ্ছে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সহকারি শিক্ষক পপি খাতুন বলেন, আমি স্কুলের মাত্র ৫টি টিন নিয়ে গিয়েছিলাম। তবে পরে সেটা আবার স্কুলে ফিরিয়ে দিয়েছি।
জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক নুর ইসলাম অন্য সকল বিষয় অস্কীকার করে বলেন, আমি স্কুলের ৩০টি পুরাতন টিন বাড়ি নিয়ে গিয়েছি এটা সত্যি। তবে আমাকে সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসার হারুন উর রশিদ নিয়ে যেতে বলেছেন তাই নিয়েছি। পরাবর্তীতে স্কুলের টিন পুনরায় স্কুলে রেখে আসছি। বর্তমানে আমার কাছে পুরাতন তিনটি টিন আছে।
প্রধান শিক্ষক নুর ইসলাম আরো বলেন, সরকারি টিন আমার কাছে থাকলে ক্ষতি কি? আমিতো সরকারি লোক, সরকারের বাইরে না।
বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাসুদ রানা ফন্টু বলেন, এসব বিষয় আমার কোন যোগসাজেস নেই, আমাকে প্রধান শিক্ষক বলেছেন এটিও স্যারের নির্দেশে তিনি মালামাল বাড়িতে নিয়ে গেছেন।
সহকারি উপজেলা শিক্ষা অফিসার হারুন উর রশিদের কাছে জানতে রূপান্তর প্রতিদিনকে জানান, আমি শুনেছি দুই শিক্ষক স্কুলের কিছ মালামাল নিয়ে গেছেন। পরে সেগুলো স্কুলে ফিরিয়ে নিয়ে আসছে।
যশোর সদর উপজেলা শিক্ষা অফিসার ইসমাইল হোসেন বলেন, বিদ্যালয়ের সম্পত্তি নিজ কাজে লাগাতে পারবেনা, যদি কোন শিক্ষক করে থাকেন তার বিরুদ্ধে অবশ্যই তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, রূপান্তর প্রতিদিন এর দায়ভার নেবে না।