শীতকালকে বলা হয় সবজির মৌসুম। শীতকালীন সবজির প্রতি মানুষের আগ্রহ ও থাকে বেশি। প্রকৃতিতে শীতকাল আসি আসি করছে। আর এরই মধ্যে ঝিকরগাছা উপজেলার বিভিন্ন বাজারে আসতে শুরু করেছে শীতকালীন সবজি। মুলা, শিম, বেগুন,ফুলকপি, পাতা কপি, বিটকপি, মতো শীতকালীন সবজি বাজারে এসেছে আরও বেশ কিছু দিন আগে। এখন আসতে শুরু করেছে শালগম, পেঁয়াজ পাতা, পালন শাক, লাল শাক, লাউ, কাঁচা টমেটোর মতো সবজিগুলো। বাজারে এসেছে ঠিকই, কিন্তু এগুলো বিক্রি হচ্ছে চড়া মূল্যে। বিক্রেতারা বলছেন, নতুন এসেছে বলেই এগুলোর দাম বেশি। কয়েক দিন গেলেই দাম কমতে শুরু করবে। তবে বেশি দামেই অনেক ক্রেতাকে কিনতে দেখা যায় এসব সবজি। তাদের ভাষ্য, নতুন সবজি এসেছে বাজারে, টেস্ট না নিলে কীভাবে হয়।
সোমবার ঝিকরগাছা বাজার সহ উপজেলার কায়েমকোলা বাজার, শিমুলীয়া বাজার, নাভারণ বাজার, গঙ্গানন্দপুর বাজার, শিওরদাহ বাজার, বল্লা বাজার, বাঁকড়া বাজার, উলাকোল বাজার, মহেশপাড়া চৌরাস্তা বাজারসহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায় শীতের সবজির এই চিত্র। বাজারে শীতকালীন সবজি ছাড়া অন্যান্য সব সবজির দামই রয়েছে নিম্নমুখী।
বিক্রেতারা বলছেন, সব সবজির দামই কমেছে। আরও হয়তো কমে যাবে। শিম ৮৫-৯০, শালগম ৬৫-৭৫ টাকা, কাঁচা টমেটো ৯৫-১২০, টমেটো ১৪০, পেঁয়াজ পাতা ১৩০-১৬০, মুলা ৬০, গাজর ১২০, লম্বা বেগুন ৪০, সাদা গোল বেগুন ৫০, শসা ৮০-১০০, করল্লা ৮০, উচ্ছে ৮০, পেপে ৪০, পটল ৬০, মিষ্টি কুমড়া ৬০, ঢেঁড়স ৭০, চিচিঙ্গা ৬০, ধুন্দল ৬০, বরবটি ৮০, কচুর লতি ৬০, কচুরমুখী ৮০, কাঁচা মরিচ ১৬০, ধনেপাতা ১৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আর প্রতিটি লাউ ৪০থেকে ৫০ টাকা, ফুলকপি ৫০-৬০ টাকা, বাঁধাকপি ৪০থেকে ৫০ টাকা ও চাল কুমডা ৬০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। আমদানির খবরে কিছুটা কমেছে আলুর দাম। কিন্তু পেঁয়াজ এখনও ১২০ টাকা। তার নিচে কোনও পেঁয়াজ নেই। বাজারে মানভেদে দেশি পেঁয়াজ ১৩০ থেকে ১৫০, ভারতীয় পেঁয়াজ ১০০, লাল ও সাদা আলু ৫০ টাকা দরে বিক্রি করতে দেখা যায়। কিন্তু সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী প্রতিকেজি পেঁয়াজের।
সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ৬৪ থেকে ৬৫ টাকা। আলু কেজিতে ভোক্তা পর্যায়ে ৩৫/৩৬ টাকা ও কোল্ড স্টোরেজ থেকে ২৬/২৭ টাকা হওয়ার কথা। কিন্তু আলু-পেঁয়াজ আমদানির পরও সরকার এই দামে দিতে পারেনি ভোক্তাদের।
এছাড়া আজ ভারতীয় আদা ২২০ টাকা, দেশি রসুন ২০০ টাকা, চায়না রসুন ১৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া ইলিশ মাছ ১৬০০, রুই মাছ ৩২০-৫৫০, কাতল মাছ ৩৫০-৫৫০, কালিবাউশ ৪০০-৫০০ চিংড়ি মাছ ৮০০-১৩০০, কাঁচকি মাছ ৪৫০-৫০০, কৈ মাছ ৩৫০-৭০০, পাবদা মাছ ৬০০, শিং মাছ ৫০০-৬০০, বেলে মাছ ৬০০-৮০০, টেংরা মাছ ৭০০-১০০০, কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। ব্রয়লার মুরগি ২৩০-২৫০টাকা কেজি, কক মুরগি ৩২০-৩৫০ টাকা কেজি, দেশি মুরগী ৫৫০, গরুর মাংস ৭০০-৭৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া ও প্রতি ডজন লাল ডিম ১২০ টাকা, সাদা ডিম ১১৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। ডিম বিক্রেতারা বলছে দ্রুতই দাম আরো কমে যাবে।
বেড়েছে সব রকম ডালের দাম, আজ ছোট মসুর ডাল ১৪০ টাকা, মোটা মসুর ডাল ১১৫ টাকা, মুগ ডাল ১৪৫ টাকা, খেসারি ডাল ৯৫ টাকা, বুটের ডাল ৯০ টাকা, ছোলা ৯০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এক্ষেত্রে দেখা যায়, সব রকম ডালের দাম বেড়েছে ৫ থেকে ১০ টাকা। এছাড়া অন্যান্য পণ্যের দাম রয়েছে আগের মতোই। প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৭৫ টাকা, চিনি ১৩৫ টাকা, দুই কেজি প্যাকেট ময়দা ১৪০ টাকা, আটা দুই কেজির প্যাকেট ১২০ টাকা, খোলা সরিষার তেল প্রতি লিটার ২২৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বাঁকড়া বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সাত্তার আবু জানান, শীত কালীন সবজি বাজারে আসলেও দাম গতবারের চেয়ে এবার বেশি বেড়েছে তার কারণ হলো আগের মতো এখন আর বাজার মনিটিং নেই যে কারণে যে যার মত করে সবজির দাম বেশী নিচ্ছে। সরকারের পক্ষ থেকে বাজার নিয়ন্ত্রণের জন্য মনিটরিং না করলে সবজি সহ নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম আরো বেশি বৃদ্ধি পাবে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, রূপান্তর প্রতিদিন এর দায়ভার নেবে না।